খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে ও তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে এ কর্মসূচি পালন করে তারা।

ছাত্র ইউনিয়নের জাবি সংসদের একাংশের কোষাধ্যক্ষ কাইমুল হাসানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে তারা তিন দফা দাবি পেশ করেন। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- অবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া এবং এ ব্যাপারে প্রশাসনের দায় এড়ানোর চেষ্টা না করা, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যর্থতার দায় স্বীকার ও শিক্ষাঙ্গনে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নীতিগত পরিবর্তন আনা।

এসময় ছাত্র ইউনিয়নের জাবি সংসদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ইমন বলেন, “৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর সর্বপ্রথম অস্ত্র হাতে নেয় স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি নামের একটি ছাত্র সংগঠন। তারপর ক্যাম্পাসগুলোতে অস্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়। আমরা প্রগতিশীল ছাত্রসমাজ এর তীব্র নিন্দা জানাই। গতকাল কুয়েটে যে নৃশংস হামলার ঘটনা ঘটেছে, তার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিত করতে হবে। এ ঘটনার দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এড়াতে পারে না।”

তিনি বলেন, “যে প্রশাসন গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও রাজনৈতিক মতাদর্শের সহবস্থান নিশ্চিত করতে পারে না, তাদের প্রশাসনিক পদে থাকার কোন অধিকার নেই। আবারো ক্যাম্পাসে যদি কেউ অস্থিরতা, অস্ত্রের রাজনীতি ও দখলদারিত্ব শুরু করে, তাহলে আমরা পতিত ছাত্রলীগের মতো তাদেরও বিতাড়িত করবো।”

জাবি সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সংগঠক সোহাগী সামিয়া বলেন, “গণঅভ্যুত্থান পরবর্তীকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরির কথা ছিল, তা প্রত্যেক জায়গায় বারবার ব্যাহত হয়েছে। গতকাল কুয়েটে শিক্ষার্থীদের উপর যে নৃশংস সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে তার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।”

তিনি বলেন, “এর আগে ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্রলীগের একক আধিপত্য ছিল, তখন কেউ তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ চর্চা করতে পারেনি। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী আমরা চাই ক্যাম্পাসগুলোতে সব রাজনৈতিক সংগঠন নির্দ্বিধায় নির্ভয়ে তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ চর্চা করবে।”

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন শ চ ত করত ন শ চ ত কর র র জন ত র জন ত ক তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) দ্রুত তফসিল ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘হয় মোদের চাকসু দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’, ‘চাকসু মোদের অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’—এমন স্লোগান দেন। 

আরো পড়ুন:

আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে বিশ্বে তৃতীয় ইউআইইউ

জবির প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থি ‘ক্যাডার’ শিক্ষকরা যেখানে আছেন

আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, “জুলাই মাসে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ হওয়ার ঘটনাগুলো আমাদের জানা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীও সে সময় শহীদ হয়েছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই সবার আগে চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল, কিন্তু এখনও কোনো অগ্রগতি নেই। অথচ ডাকসু, রাকসু, জাকসুর তফসিল ঘোষণা হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা অনুমোদনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এরপর আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। “যদি তা না হয়, তাহলে আমরা দুর্বার ছাত্রআন্দোলনের দিকে যাব,” বলেন তিনি।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, “দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এরইমধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা এতদিন রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, এখন আর রোডম্যাপ নয়—তফসিল চাই।”

তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সক্রিয় ছাত্র সংসদ। তাই আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তফসিল এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন চাই।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা চূড়ান্ত হলে নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করবেন।” 

চাকসু গঠনের ধারণা মূলত এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর আদলে। বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ মে। এই নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আর কোনো চাকসু নির্বাচন হয়নি।

২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসুর মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছেন। 

ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দর নির্বাচনী আসনকে দুই ভাগে বিভক্তি করার প্রতিবাদে মানববন্ধন 
  • অনশনের পর ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেলেন ছয় সমন্বয়ক
  • জকসুর পথরেখা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
  • জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
  • সোনারগাঁয়ে মাদ্রাসায় কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
  • রূপগঞ্জে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
  • ফতুল্লায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন : হুশিয়ারী
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন, হুশিয়ারী
  • ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’