গুদামে খাদ্য লুকিয়ে রাখা হয়, তা আর হতে দেওয়া হবে না: অর্থ উপদেষ্টা
Published: 20th, February 2025 GMT
খাদ্যের সরবরাহ থাকলেও অনেক সময় তা ভোক্তাদের কাছে যায় না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, গুদামে খাদ্য লুকিয়ে রাখা হয়। এসব কাজ যেন আর কোনোভাবেই না হয়, তা নিশ্চিত করা হবে। আর রমজানে ভোগ্যপণ্যের অবৈধ মজুতের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হবে।
আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা। ভোগ্যপণ্যের বাজারে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে যেন কোনো রকমের কারসাজি না হয়, সে জন্য জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) স্থানীয়ভাবে তদারকি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ডিসি সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টাও তদারকি বৃদ্ধির কথা বলেছেন। আর বিশেষ বিক্রয়কেন্দ্র করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের নিত্য পণ্যের ক্ষেত্রে যাতে কোনো অসুবিধা না হয়, তা নিশ্চিত করা হবে। চাল ও সার আমদানির প্রস্তাবের পাশাপাশি সারের গুদাম তৈরি, কিছু রাস্তা, সেতু ও বন্দরের রাস্তার বিষয় রয়েছে। এগুলো অতিপ্রয়োজনীয়। আর কিছু আছে ভৌত অবকাঠামো, যেগুলো মেগা প্রকল্প না। এগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, মাতারবাড়ী প্রকল্প বড় হলেও বেশির ভাগ কাজ হয়ে গেছে। এটি একটি সমন্বিত প্রকল্প। মাতারবাড়ীতে বিদ্যুৎ সরবরাহ আছে। জাপানি অনুদানে জাপানিরাই তা করছে। জাপানি অনুদানের শর্তগুলো খুবই সহনীয়। এটা খুব ভালো একটা প্রকল্প। এতে কিছু রাস্তার ব্যাপার আছে, আর আছে কিছু নির্মাণকাজ।
এদিকে সার সংরক্ষণের জন্য দেশের মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, যশোর এবং নড়াইল—এ চার জেলায় চারটি গুদাম নির্মাণের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে ক্রয় কমিটি। এ ছাড়া ৪০ হাজার টন ডিএপি সার এবং সার কারখানার জন্য ১০ হাজার টন ফসফরিক অ্যাসিড কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে ৩০৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয় হবে।
স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি
স্পট মার্কেট থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) কেনার লক্ষ্যে সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) সই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ চুক্তি সই করতে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
বর্তমানে এমএসপিএ স্বাক্ষরকারী ২৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপ্রস্তাব আহ্বানের মাধ্যমে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে, যার মেয়াদ আগামী মাসে শেষ হবে। এখন ২৫টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পেট্রোবাংলার এমএসপিএ স্বাক্ষরের নীতিগত অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয় উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে।
২৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে সিঙ্গাপুরের এসইএফই মার্কেটিং অ্যান্ড ট্রেডিং সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড, ভিটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড, গানভর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড, সিনোকেম ইন্টারন্যাশনাল ওয়েল প্রাইভেট লিমিটেড, ইউনিপেগ সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড, আরামকো ট্রেডিং সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড, বিপি সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড, ট্রাফিগুরা প্রাইভেট লিমিটেড, গ্লেনকোর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড, এমিরেটস ন্যাশনাল ওয়েল কো.
এ ছাড়া রয়েছে সুইজারল্যান্ডের ডিএক্সটি কমডিটিস এসএ, মারকুরিয়া এনার্জি ট্রেডিং এসএ, টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড, এমইটি ইন্টারন্যাশনাল এজি, সু এসওসিএআর ট্রেডিং এসএ, ইউএইয়ের বিজিএন ইন্টারন্যাশনাল ডিএমসিসি, ওকিউ ট্রেডিং, সেল ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং মিডল ইস্ট, দক্ষিণ কোরিয়ার পোসকো ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন, হংকংয়ের ওয়াইলুন পেট্রোলিয়াম গ্যাস, জাপানের জেইআরএ কোং ইনকরপোরেশন, জার্মানির ইউনিপার গ্লোবাল কমডিটিস, কাতারের কাতার এনার্জি ট্রেডিং এলএলসি এবং যুক্তরাষ্ট্রের এক্সেলারেট এনার্জি এলপি।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পায়রা বন্দরসহ দুই প্রকল্পের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন
পায়রা বন্দরের জন্য সংশ্লিষ্ট পরিসেবাসহ দুটি শিপ টু শোর ক্রেন সরবরাহ এবং নারায়ণগঞ্জের খানপুরে অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার এবং বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পে কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। প্রস্তাব দুটিতে ব্যয় হবে ৪৫০ কোটি ১১ লাখ ১০ হাজার ২৫৪ টাকা।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রি পরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কমিটির সদস্য ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভা সূত্রে জানা যায়, পায়রা সমুদ্র বন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পের আওতায় সংশ্লিষ্ট পরিসেবাসহ দুটি শিপ টু শোর ক্রেন সরবরাহ এবং স্থাপন কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে ৪টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে (১) এইচপি এবং (২) এনজে, চায়না প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ১৬২ কোটি ২ লাখ ১১ হাজার ৫৬৮ টাকা।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘নারায়ণগঞ্জের খানপুরে অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার এবং বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পের প্যাকেজ নম্বর দুইয়ের পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এ জন্য উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ২টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। দরপত্রের সকল প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে (১) স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স এবং (২) এসএস রহমান ইন্টারন্যানাল লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ২৮৮ কোটি ৮ লাখ ৯৮ হাজার ৬৮৬ টাকা।
ঢাকা/হাসনাত//