স্ত্রী ধনশ্রী বর্মার কাছ থেকে কয়েক মাস আলাদা থাকার পর অবশেষে বিবাহ বিচ্ছেদের পথ বেছে নিলেন ভারতীয় ক্রিকেটার যুজবেন্দ্র চাহাল।
বৃহস্পতিবার মুম্বাইয়ের পারিবারিক আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন এই জুটি। দুজনেই জানান যে, বিগত ১৮ মাস ধরে আলাদা থাকছেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, দুজনে প্রকাশ্যে এনেছেন ডিভোর্স নেওয়ার কারণও।
এবিপি নিউজের বরাতে এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানায়, চাহাল ও ধনশ্রীর বিবাহ বিচ্ছেদের চূড়ান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে বৃহস্পতিবার। বিচারক প্রথমে দু'জনকেই কাউন্সিলরের কাছে পাঠান। যা প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে চলে এবং এই সেশন শেষ হওয়ার পর, বিচারক তাদের উভয়কে কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেন।
কাউন্সিলিং শেষে বিচারক যখন ধনশ্রী ও যুজবেন্দ্রকে জিজ্ঞাসা করেন, তাঁরা পরস্পরের সম্মতিতে আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি না, তাতে দুজনেই সম্মতি দেন।
বিচারক ধনশ্রী ও যুজবেন্দ্রকে বিচ্ছেদের কারণ জিজ্ঞাসা করলে দু'জনেই জানান, বোঝাপড়ার অভাবের কারণেই দু'জনেই একে অপরকে ডিভোর্স দিতে চান। প্রশ্নোত্তর শেষে বিচারক বলেন, আজ থেকে দুজনেই আর স্বামী-স্ত্রী নন।
এর আগে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে একে-অপরকে আনফলো করে দিয়েছিলেন চাহাল ও ধনশ্রী। শুধু তাই নয়, চাহালের পদবিও মুছে ফেলেন ধনশ্রী। সঙ্গে ক্রিকেটার তাদের যৌথ ছবিও সরিয়ে ফেলেন।
২০২০ সালের ২২ ডিসেম্বর গুরগাঁওয়ে একটি ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে বিয়ে করেছিলেন ধনশ্রী ও যুজবেন্দ্র চাহাল। সেই বছরেরই অগস্ট মাসে দুজনের বাগদান হয়। ধনশ্রী পেশায় একজন দন্ত চিকিৎসক এবং কোরিওগ্রাফার।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘কী করব পেট কি আর দুর্গন্ধ বুঝে’
ঈশ্বরগঞ্জ পৌর শহরের বুক চিরে বয়ে গেছে কাঁচামাটিয়া নদী। এই নদীতে পড়ছে পৌরসভার বর্জ্য। এতে ভরাট হচ্ছে নদী, দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। হুমকির মুখে পড়েছে জলজ জীববৈচিত্র্য। শুধু তা-ই নয়, পৌরসভার বর্জ্যে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়কের বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে ভাগাড়। বর্জ্যের উৎকট গন্ধ ও ধোঁয়ায় দিন দিন বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। বেড়েছে মশার উপদ্রব।
জানা গেছে, ২০১১ সালে প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হয় ঈশ্বরগঞ্জ। নামে প্রথম শ্রেণির হলেও কাজেকর্মে অনেক দিক থেকেই পিছিয়ে। এখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য দীর্ঘসময়েও স্থাপিত হয়নি কোনো ডাম্পিং স্টেশন। ফলে পৌর কর্তৃপক্ষ সব বর্জ্য ফেলছে পৌর বাজার সংলগ্ন কাঁচামাটিয়া নদীতে। এ ছাড়া গৃহস্থালি ও কাঁচাবাজারের বর্জ্যগুলোও নদীর পাশাপাশি ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়ক ঘেঁষে সেতুর পাশেই ফেলা হচ্ছে। শুধু ওখানেই নয়, মহাসড়ক ঘেঁষে পৌর শহরের দত্তপাড়া এলাকাতেও ফেলা হচ্ছে আবর্জনা। বৃষ্টির পানিতে এসব ময়লা-আবর্জনা মহাসড়কের ওপর এসে জমাট বাঁধে।
কাঁচামাটিয়া নদীর সেতুর পাশের কাপড় ব্যবসায়ী রিফাতুল ইসলাম পিয়েলের ভাষ্য, ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে তারা যেমন অতিষ্ঠ, ক্রেতারাও এসে বেশিক্ষণ টিকতে পারেন না। তিনি বলেন, ‘প্রায়ই আবর্জনার স্তূপে আগুন ধরিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। তখন ধোঁয়ার গন্ধে নাড়িভুঁড়ি উল্টে আসে। সে সময় মনে হয় ব্যবসা গুটিয়ে বাড়ি চলে যাই। কিন্তু কী করব, পেট কি আর দুর্গন্ধ বুঝে!’
দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মরিয়ম আক্তার জানায়, ময়লা-আবর্জনার পচা গন্ধে আসা-যাওয়ার সময় স্বাভাবিক নিঃশ্বাস নেওয়া যায় না। নাক চেপে চলাচল করতে হয়।
ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান জানান, কাঁচামাটিয়া নদীর ধারে দীর্ঘদিন ধরে পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। দখল-দূষণে এই নদী এখন ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।
নদীতে বর্জ্য ফেলার বিষয়ে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম বলেন, বর্জ্যের কারণে জলজ প্রাণীসহ জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ হুমকির সম্মুখীন হয়। বিশেষ করে মাছের প্রজনন ক্ষমতা কমে যায় এবং বংশবৃদ্ধি পায় না। এ কারণে নদীসহ অন্যান্য জলাশয়ে বর্জ্য ফেলা যাবে না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাদিয়া তাসনিম মুনমুনের ভাষ্য, ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধ নিঃশ্বাসের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করে। এতে শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ অনেক জটিল রোগেও আক্রান্ত হতে পারে একজন মানুষ। তা ছাড়া ময়লা-আবর্জনা থেকে মশা-মাছির উৎপত্তি হয়।
ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইকবাল হোসাইন বলেন, ডাম্পিং স্টেশনের জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ আসে। পরে ডাম্পিং স্টেশনের জন্য জায়গা নির্ধারিত না থাকায় ওই টাকা ফেরত যায়। ইতোমধ্যে পৌরসভার বাইরে খাস খতিয়ানের একটি জায়গা নির্ধারণ করে ডাম্পিং স্টেশনের বরাদ্দের টাকা ফেরত চেয়ে মন্ত্রণালয়ে ফের আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ এলেই কাজ শুরু হবে।