একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে আগে ফুল দেওয়া নিয়ে হিজলায় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পর সর্বস্তরের জনগণ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গাফফার তালুকদারের সমর্থকদের সঙ্গে সদস্য সচিব মনির দেওয়ান ও যুগ্ম আহ্বায়ক খোকন দপ্তরির সমর্থকদের মধ্যে মারামারির এ ঘটনাটি ঘটেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, একুশের প্রথম প্রহরে পর্যায়ক্রমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইলিয়াস হোসেন, হিজলা থানা, নৌ পুলিশ, আনসার, হিজলা সরকারি ডিগ্রি কলেজ ও ফায়ার সার্ভিস শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর বিএনপিকে শ্রদ্ধা নিবেদনের আহ্বান জানানো হয়। তখন আহ্বায়ক গাফফার তালুকদার এবং সদস্য সচিব মনির দেওয়ান ও যুগ্ম আহ্বায়ক খোকন দপ্তরির নেতৃত্বে পৃথক দুটি গ্রুপ শহীদ মিনার পাদদেশে অপেক্ষমাণ ছিল। আগে ফুল দেওয়ার জন্য দুই পক্ষই শহীদ মিনারে ওঠে।

পদাধিকার বলে আহ্বায়ক আগে ফুল দেবে এমন দাবিতে তার অনুসারীরা অপরপক্ষকে বাধা দেয়। তখন দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। এতে লাঞ্ছিত হন আহ্বায়ক গাফফার তালুকদার। তখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইলিয়াস হোসেন এসে গাফফার তালুকদারকে নিরাপদে সরিয়ে নেন। পুলিশ প্রথমে নীরব থাকলেও পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে আহ্বায়ক, সদস্য সচিব ও যুগ্ম আহ্বায়ক নিয়ে সমঝোতা করার পর তারা একত্রে শহীদ মিনারে ফুল দেন বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আহ্বায়ক গাফফার তালুকদার দাবি করেন, তাদের মধ্যে কিছু হয়নি। প্রশাসনের পর বিএনপির শ্রদ্ধা জানানোর সিদ্ধান্ত ছিল। ঘোষক বিএনপিকে এড়িয়ে শিক্ষক সমিতির নাম ঘোষণা দেয়। এতে বিএনপি কর্মীরা প্রতিবাদ জানানোয় শহীদ মিনারে বিশৃঙ্খল হয়েছিল। তারা ৩ নেতা একসঙ্গেই ফুল দিয়েছেন।

সদস্য সচিব মনির দেওয়ান বলেন, আহ্বায়কের সঙ্গে যুবদলের একজন শহীদ মিনারে ওঠেন। পদাধিকার বলে তিনি উঠতে পারেন না। তাকে নামিয়ে দেওয়ায় কিছুটা বিশৃঙ্খলা হয়। পরে আহ্বায়ককে সঙ্গে নিয়ে একসঙ্গে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, শ্রদ্ধা নিবেদনের সিরিয়ালের ঘোষক বিএনপির আহ্বায়কের আগে সদস্য সচিব ও যুগ্ম আহ্বায়কের নাম ঘোষণা দেন। এনিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। পরে তাদের মিটমাট করে দিলে ৩ নেতা একসঙ্গে শ্রদ্ধা জানান।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ২১ ফ ব র য় র ব এনপ র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

আইএমএফের পর্ষদ বৈঠক ২৩ জুন, এরপর মিলতে পারে দুই কিস্তি অর্থ

২৩ জুন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদের বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেই বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে আইএমএফের চলমান ঋণ কর্মসূচির দুই কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়টি উত্থাপনের কথা রয়েছে। বৈঠকে অনুমোদন হলে চলমান ঋণ কর্মসূচির আওতায় একসঙ্গে দুই কিস্তির অর্থ পাবে বাংলাদেশ। আইএমএফ গতকাল শুক্রবার তার কার্যসূচিতে নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকের এ তারিখ নির্ধারণসংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আইএমএফের এ বৈঠকে চলমান ঋণ কর্মসূচির তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যালোচনার (রিভিউ) প্রতিবেদন উপস্থাপনের কথা রয়েছে। এ প্রতিবেদন পর্ষদ অনুমোদন করলে বাংলাদেশ একসঙ্গে পেয়ে যাবে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ। দুই কিস্তির অর্থ একসঙ্গে হতে পারে ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার।

এর আগে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। ঋণ অনুমোদনের সময় আইএমএফ বলেছিল, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করবে এ ঋণ কর্মসূচি। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়া, টাকার দরপতন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া—মূলত এ তিন কারণে ওই সময় আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।

আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির মধ্যে বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিলসহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ৩৩০ কোটি ডলার। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ১৪০ কোটি ডলার। আরএসএফ আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকেই প্রথম ঋণ দেওয়া হচ্ছে। ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ও ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ তিন কিস্তিতে আইএমএফ থেকে এখন পর্যন্ত ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ঋণের ২৩৯ কোটি ডলার।

আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ গত বছরের ডিসেম্বরে পাওয়ার কথা থাকলেও তা আর পাওয়া যায়নি। আইএমএফের সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থিত। প্রায় প্রতিবছর ওয়াশিংটনসহ প্রতিবেশী রাজ্যগুলোতে বড় ধরনের তুষারপাত হয়। গত বছরও তাই হয়েছে। অতিমাত্রার বরফের কারণে অচল হয়ে যায় জনজীবন। মার্কিন প্রশাসন সতর্কবার্তা জারি করে। তুষারপাতের কারণে আইএমএফসহ অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল অনেক দিন।

পরে আইএমএফের পক্ষ থেকে প্রথমে এ বছরের ফেব্রুয়ারি ও পরে মার্চে পর্ষদ বৈঠকের কথা বলা হয়। গত এপ্রিলে আইএমএফের একটি দল পর্যালোচনা করতে ঢাকায় আসে দুই সপ্তাহের জন্য। এর মধ্যে শর্ত পরিপালন নিয়ে দর–কষাকষিতে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় আটকে যায়। এরপর ওয়াশিংটনে গত ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। তখন দর-কষাকষি হচ্ছিল মূলত মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা নিয়ে। আইএমএফ তা চাইলেও করতে চাইছিল না সরকার।

সবশেষে গত মাসে এ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কয়েকটি ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১২ মে দুই পক্ষ চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছায় ও বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে বাংলাদেশ। ১৪ মে আইএমএফ ওয়াশিংটন থেকে এক বিবৃতিতে জানায়, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এবং ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে জুনে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সাধারণত পর্ষদ বৈঠকে অনুমোদন হওয়ার দুই থেকে তিন দিনের মাথায় আইএমএফ অর্থ ছাড় করে দেয়। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তদন্ত প্রতিবেদন দিতে এক মাস সময় বাড়ালেন ট্রাইব্যুনাল
  • কেন এবার একসঙ্গে পেকে যাচ্ছে ক্ষিরশাপাতি, আম্রপালি, ল্যাংড়া
  • শরীরের পাঁচ থেকে সাতটি অঙ্গ একসঙ্গে ব্যথা হয় যে কারণে
  • বাবাকে একটি সুন্দর দিন উপহার দিতে যা যা করতে পারেন
  • ফেনীতে একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম দিলেন গৃহবধূ 
  • আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশের কিস্তির প্রস্তাব উঠছে আইএমএফ পর্ষদে
  • আইএমএফের পর্ষদ বৈঠক ২৩ জুন, এরপর মিলতে পারে দুই কিস্তি অর্থ
  • এবার বাগ্‌দানের কথা নিজেই জানালেন ডুয়া
  • দেশের ক্রিকেট নিয়ে সাকিবের সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে মিরাজের
  • নিজের সিনেমা দেখারও টিকিট পাননি জয়া আহসান