যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোর (এফবিআই) নতুন পরিচালক ক্যাশ প্যাটেল জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বলেছেন, তিনি সংস্থার এক হাজার কর্মীকে দেশের বিভিন্ন মাঠপর্যায়ের কার্যালয়ে সরিয়ে নিতে চান। এ ছাড়া আরও ৫০০ কর্মীকে আলাবামার হান্টসভিল এলাকায় এফবিআইয়ের একটি কার্যালয়ে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন তিনি। জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ক্যাশ প্যাটেলের আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি এসব কথা বলেন।

গতকাল শুক্রবার এফবিআইয়ের প্রধান হিসেবে হোয়াইট হাউসে শপথ নিয়েছেন ক্যাশ প্যাটেলে। এদিনই তিনি তাঁর পরিকল্পনার কথা জানান।

আরও পড়ুনএফবিআইয়ের প্রধান পদে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ক্যাশ প্যাটেলের নিয়োগ অনুমোদন২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

এক বিবৃতিতে এফবিআই বলেছে, পরিচালক প্যাটেল মার্কিন জনগণের প্রতি তাঁর যে প্রতিশ্রুতি আছে, তা স্পষ্ট করেছেন। বলেছেন, এফবিআইয়ের সদস্যদের এমন হতে হবে যেন তাঁরা সহিংস অপরাধ মোকাবিলাকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করেন। আর এই প্রতিশ্রুতি পূরণে একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তবে ওই বিবৃতিতে সুনির্দিষ্ট করে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় ক্যাশ প্যাটেল যে পরিকল্পনাগুলোর কথা বলেছেন, তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। এ ব্যাপারে যে সূত্র কথা বলেছেন, তিনি তাঁর নাম প্রকাশ করেননি।

গত বৃহস্পতিবার এফবিআইয়ের প্রধান হিসেবে ক্যাশ প্যাটেলের নিয়োগ অনুমোদন করে সিনেট। তাঁর পক্ষে ভোট দিয়েছে ৫১ জন আর বিপক্ষে ভোট দিয়েছে ৪৯ জন। নিজ দল রিপাবলিকান পার্টির দুজন আইনপ্রণেতা প্যাটেলের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। তাঁরা হলেন মেইন অঙ্গরাজ্যের সুসান কলিন্স এবং আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের লিসা মুরকৌস্কি।

শপথ অনুষ্ঠানে ক্যাশ প্যাটেলে বলেছেন, এফবিআইয়ের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পাওয়াটা তাঁর জীবনের ‘সবচেয়ে সম্মানজনক বিষয়’।

গত মাসে এফবিআইয়ের একদল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে পদত্যাগে বাধ্য করেছে মার্কিন বিচার বিভাগ। এ ছাড়া ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে সংঘটিত দাঙ্গার ঘটনা তদন্তে অংশগ্রহণকারী কয়েক হাজার কর্মীর নাম প্রকাশেরও দাবি জানানো হয়েছে। এসব ঘটনায় এফবিআইয়ের অভ্যন্তরে অস্থিরতা চলছে। আর এর মধ্যেই সংস্থাটির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ক্যাশ প্যাটেল।

ডেমোক্র্যাটরা কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই এই নিয়োগের বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আসছেন। তাঁদের আশঙ্কা, ক্যাশ প্যাটেল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনুগত হিসেবে কাজ করবেন। তিনি ট্রাম্পের বিরোধীদের বিরুদ্ধে এফবিআইয়ের আইন প্রয়োগকারী ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন।

মনোনীত হওয়ার আগে ক্যাশ প্যাটেল বলেছিলেন, তিনি সরকার ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত ট্রাম্পবিরোধী ‘ষড়যন্ত্রকারীদের’ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। আর সে প্রসঙ্গই এখন সামনে নিয়ে আসছেন ডেমোক্র্যাটরা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বল ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত

নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।

কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।

১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)

আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)

ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।

৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)

ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।

৪. ঋণের মেয়াদ

কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।

৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)

শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।

৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)

ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।

৭. প্রসেসিং ফি

আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।

৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)

বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।

৯. জামানত (কোলেটারাল)

ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।

১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও

আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ