বিরল মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী বিশ্ববাসী, এককাতারে দেখা যাচ্ছে ৭ গ্রহ
Published: 26th, February 2025 GMT
বিরল এক মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী হচ্ছে বিশ্ববাসী। পৃথিবী থেকে একসঙ্গে দেখা যাচ্ছে সৌরজগতের সাতটি গ্রহ। জোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলা হয় ‘প্ল্যানেটারি প্যারেড’ বা গ্রহের কুচকাওয়াজ। গতকাল মঙ্গলবার, আজ বুধবার ও আগামীকাল বৃহস্পতিবার সূর্যাস্তের পর এই দৃশ্য দেখা যাওয়ার কথা। এরপর ২০৪০ সাল পর্যন্ত এমন দৃশ্য অবলোকনের সুযোগ পাবেন না এ গ্রহের বাসিন্দারা।
সৌরজগতের যে সাত গ্রহ এককাতারে এসেছে সেগুলো হলো মঙ্গল, বৃহস্পতি, ইউরেনাস, শুক্র, নেপচুন, বুধ ও শনি। এর মধ্যে বুধ, শুক্র, বৃহস্পতি ও মঙ্গল গ্রহ দেখা যাবে খালি চোখে। দিগন্তের নিম্নরেখায় অবস্থান করার কারণে খালি চোখে শনি গ্রহ দেখা হবে কঠিন। আর ইউরেনাস ও নেপচুনকে দেখতে হলে প্রয়োজন হবে টেলিস্কোপের।
মেঘমুক্ত আকাশ থাকলে এ দৃশ্য ভালোভাবে দেখা যাবে। তবে এককাতারে সাত গ্রহের দেখা মিলবে খুবই অল্প সময়ের জন্য। সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে শনি ও বুধও অস্ত যাবে বলে এই দুই গ্রহের দেখা পাওয়াটা হবে কঠিন।
লন্ডনভিত্তিক রয়্যাল অবজারভেটরি গ্রিনউইচের জ্যোতির্বিজ্ঞানী এডওয়ার্ড ব্লুমার বলেন, এক সারিতে সাতটি গ্রহের দেখা পাওয়ার এ এক বিরল সুযোগ। এ দৃশ্য দেখার জন্য সূর্যাস্তের পর কয়েক মিনিট মাত্র সময় পাওয়া যাবে। কারণ, এরপরই তারা দিগন্তে মিলিয়ে যাবে। তবে এরপরও শুক্র, বৃহস্পতি ও মঙ্গল—এই তিন গ্রহকে বেশ খানিকটা সময় ধরে দেখা যাবে।
পৃথিবীসহ সৌরজগতের আটটি গ্রহ একই কক্ষপথে থেকে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। তবে তাদের প্রদক্ষিণ করার গতি ভিন্ন ভিন্ন হয়। গ্রহগুলোর গতি ভিন্ন ভিন্ন হওয়ায় কখনো কখনো কিছু গ্রহ সূর্যের একই পাশে সারিবদ্ধ হয়ে প্রদক্ষিণ করতে থাকে। গ্রহগুলো যদি সূর্যের ডানদিকে থেকে প্রদক্ষিণ করতে থাকে, তখন সেগুলো পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সৌরজগতের নতুন বামন গ্রহ নিয়ে এত আলোচনা কেন
আমাদের সৌরজগতের অচেনা ও অন্ধকার প্রান্তে ‘প্ল্যানেট নাইন’ নামের বিশাল ও রহস্যময় গ্রহ লুকিয়ে আছে বলে মনে করেন অনেক বিজ্ঞানী। আর তাই দীর্ঘদিন ধরে কল্পিত এই প্ল্যানেট নাইন গ্রহের সন্ধান করছেন তাঁরা। গ্রহটির সন্ধান পাওয়া না গেলেও সৌরজগতের অচেনা ও অন্ধকার প্রান্তে একটি নতুন বামন গ্রহ খুঁজে পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা। নতুন এই বামন গ্রহের অস্তিত্ব প্ল্যানেট নাইন তত্ত্বকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। আর তাই বামন গ্রহটি নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে চলছে তুমুল আলোচনা।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, নেপচুনের অপর পাশে বরফের পাথরের অদ্ভুত, গুচ্ছবদ্ধ কক্ষপথ ইঙ্গিত দেয় সেখানে বড় কিছু আছে। এই বড় কিছুর মধ্যে প্ল্যানেট নাইনও থাকতে পারে। সেই এলাকাতেই ‘২০১৭ ওএফ২০১’ নামের বামন গ্রহের অবস্থান শনাক্ত করা হয়েছে। প্রায় ৭০০ কিলোমিটার বিস্তৃত এই গ্রহটি প্রায় ২৫ হাজার বছরে নিজ কক্ষপথে আবর্তন করায় পৃথিবী থেকে খুব কম সময়ের জন্য পর্যবেক্ষণ করা যায়।
নতুন বামন গ্রহটির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডির বিজ্ঞানী সিহাও চেং বলেন, এই বামন গ্রহ প্লুটোর চেয়ে তিন গুণ ছোট হলেও বামন গ্রহ হিসেবে বিবেচিত হওয়ার জন্য যথেষ্ট বড়। গ্রহটির দীর্ঘ কক্ষপথ রয়েছে। পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যকার দূরত্বের ১ হাজার ৬০০ গুণের বেশি দূরত্বে অবস্থান করছে গ্রহটি।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে প্লুটোকে বামন গ্রহের মর্যাদা দেওয়া হয়। সৌরজগতে সব মিলিয়ে আরও চারটি বামন গ্রহ রয়েছে। নতুন বামন গ্রহটি এই তালিকায় শিগগিরই যুক্ত করা হবে। জেমস ওয়েব, হাবল ও আলমা টেলিস্কোপের তথ্য বিশ্লেষণ করে গ্রহটির অবস্থান শনাক্ত করা বিজ্ঞানী স্যাম ডিন বলেন, বামন বস্তুটি সৌরজগতের আকর্ষণীয় আবিষ্কারের মধ্যে একটি।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া