এই দেশে কোনো মেজরিটি-মাইনরিটি মানি না, সবাই মিলে ইউনিটি: জামায়াত আমির
Published: 26th, February 2025 GMT
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা এই দেশে কোনো মেজরিটি-মাইনরিটি মানি না, আমরা সবাই মিলে ইউনিটি। আমাদের পরিচয় আমরা বাংলাদেশি। কিসের সংখ্যালঘু আর কিসের সংখ্যাগুরু। এই দেশে যে-ই জন্ম নিয়েছে, সে-ই এ দেশের গর্বিত নাগরিক।’
আজ বুধবার দুপুরে পঞ্চগড় চিনিকল মাঠে জেলা জামায়াতের এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন জামায়াতের আমির। তিনি বলেন, ‘আমরা নাগরিকদের কোনো ভাগ-বাঁটোয়ারা, ধর্ম কিংবা দলের দিক থেকে গড়ার পক্ষে নই। এই বোর (বিরক্তিকর) খাসলত ছিল অতীতের পতিত স্বৈরাচারের। তারা এই জাতিকে ভেঙে টুকরা টুকরা করে মুখোমুখি লাগিয়ে দিয়েছিল।’
সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, নির্যাতন ও অত্যাচারের অনুসন্ধানের আহ্বান জানিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, ‘যাঁরা এই দেশে মেজরিটি (সংখ্যাগরিষ্ঠ) আর মাইনরিটির (সংখ্যালঘু) জিকির তুলে রেখেছিলেন, আমি আল্লাহর ওপর ভরসা করে বুকে হাত দিয়ে বলছি, তাঁরা যাঁদের মাইনরিটি বলতেন, এই ভাইদের সম্পদ, ইজ্জত এবং তাঁদের জীবনের ওপর সবচেয়ে বেশি ক্ষতি সাধন করেছেন তাঁরাই। আমি দাবি জানাব, বাংলাদেশ সরকার এবং জাতিসংঘের যৌথ উদ্যোগে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে আজ পর্যন্ত এই দেশে এ রকম যত ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর অনুসন্ধান করে তার শ্বেতপত্র জনগণের সামনে প্রকাশ করা।’
ভারতকে উদ্দেশ্য করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী। প্রতিবেশীকে অহেতুক উষ্টা দিতে চাই না। তবে প্রতিবেশীও যেন আমাদের ওপর অসম্মানজনক ও অপমানজনক কোনো কিছু চাপিয়ে না দেয়। যদি তাঁরা এমন কিছু করেন, তাহলে দেশের স্বার্থে আমরা ভূমিকা পালন করতে কারও চোখের দিকে তাকাব না। আমরা বিবেকের দিকে তাকিয়ে বিবেকের দায়বদ্ধতা থেকে দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য হব।’
মানবিক দেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে আর গডফাদারদের বাংলাদেশ দেখতে চাই না, গডফাদারদের বাংলাদেশ দেখতে চাই না, মাফিয়াতন্ত্রের বাংলাদেশ দেখতে চাই না, ফ্যাসিবাদের বাংলাদেশ দেখতে চাই না।’
নারীদের উদ্দেশ্যে শফিকুর রহমান আরও বলেন, ‘মা-বোনেরা সমাজের উন্নয়নে সব জায়গায় ইনশা আল্লাহ গর্বের সঙ্গে আপনারাও ভূমিকার রাখবেন। যে দুইটা জিনিস এখন পান না, সেই দুইটা জিনিসও আপনারা পাবেন। একটি হচ্ছে মর্যাদা আর অন্যটি নিরাপত্তা। এই মর্যাদা ও নিরাপত্তার সঙ্গে আপনারা দেশের উন্নয়নে অবদান রাখবেন।’
জেলা জামায়াতের আমির ইকবাল হোসাইনের সভাপতিত্বে জনসভায় অন্যদের মধ্যে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাহবুবুর রহমানসহ জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয়, আঞ্চলিক ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন। জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেন ও জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আবুল বাশার বসুনিয়ার সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি তাসমিয়া প্রধান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের পঞ্চগড় জেলা শাখার সভাপতি মীর মোর্শেদ প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আশুলিয়ায় বিএনপির জনসভা ও এনসিপির পদযাত্রা আজ, নিরাপত্তা জোরদার
সাভার উপজেলার আশুলিয়ার কাছাকাছি স্থানে বিএনপি ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পৃথক কর্মসূচি ঘিরে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করার কথা জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আজ বুধবার দুপুরের পর আশুলিয়ায় শ্রীপুর এলাকায় বিএনপির জনসভা করার কথা আছে। সেখান থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে বাইপাইল এলাকায় বিকেলে পদযাত্রা ও পথসভার কর্মসূচি রয়েছে এনসিপি।
বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ ছাত্র-শ্রমিক-জনতার পরিবারের সম্মানে আজ বেলা ৩টার দিকে শ্রীপুরের দারুল ইহসান মাদ্রাসা মাঠে জনসভা করবে দলটি। ঢাকা জেলা বিএনপির আয়োজনে এই সভায় লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেওয়ার কথা আছে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের। এ ছাড়া সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ একাধিক কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকতে পারেন। এতে সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক। সভা পরিচালনা করবেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী।
নিপুণ রায় প্রথম আলোকে বলেন, তারেক রহমান ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে ছাত্র-জনতা-শ্রমিকসহ সবার উদ্দেশ্যে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন। তাঁর নির্দেশনায় জনগণের স্বার্থ, অধিকার আদায় ও প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা থাকবে। কাছাকাছি দূরত্বে এনসিপির কর্মসূচির বিষয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, একে অপরের প্রতি সম্মান দেখিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিজেদের কর্মসূচি দেবে এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে কর্মসূচি পালন করবে—এটাই রাজনৈতিক সৌন্দর্য। রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকতেই পারে। তবে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে সবার মধ্যে ঐক্য থাকতে হবে। একে অপরের সঙ্গে কথা বলে কর্মসূচির সময়টি আগে পরে নির্ধারণ করা হয়েছে।
এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও ঢাকা জেলার সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী মেহরাব সিফাত প্রথম আলোকে বলেন, বিকেল ৫টায় আশুলিয়ার বাইপাইলে পদযাত্রা ও সভা অনুষ্ঠিত হবে। দলের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারাসহ কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত থাকবেন। কাছাকাছি দূরত্বে বিএনপির সমাবেশ হলেও সময় ভিন্ন হওয়ায় কোনো ধরনের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
বাইপাইলে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের চন্দ্রামুখী সার্ভিস লেনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভার জন্য তৈরি মঞ্চ