বছরের শুরুতেই মুম্বাইতে নিজ বাসভবন সদগুরু শরণে বলিউড অভিনেতা সাইফ আলি খানের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। সে সময় জানা যায়, আততায়ীর লক্ষ্য অভিনেতার ছোট সন্তান খুদে জেহর দিকেই। তারপর থেকেই জেহ-তৈমুরকে পাপারাজ্জিদের ক্যামেরার অন্তরালে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অভিনেত্রী কারিনা কাপুর খান। এমনকি ফটোশিকারিদের দেখলে আগে থেকেই সতর্ক বাণী দিয়ে দেন, ‘যেন বাচ্চাদের কোনো ছবি তোলা না হয়।’
এবার একই পথে হাঁটলেন অভিনেত্রী আলিয়া ভাট। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা ছোট্ট মেয়ে রাহার সব ছবি সরিয়ে ফেলেছেন আলিয়া। রণবীর-আলিয়া দম্পতির প্রথম কন্যাসন্তান ‘রাহা’ এরই মধ্যে সে রীতিমতো স্টার। এদিকে মেয়ে তো আড়াই বছর বয়সেই ‘ক্যামেরা রেডি’।
কাপুর পরিবারের মেয়ে বলে কথা! দুই ফুফু কারিশমা আর কারিনার ম্যাজিকে মুগ্ধ হয়েছেন অনুরাগীরা। অন স্ক্রিন, অফ স্ক্রিন সবখানেই কাপুর সিস্টার্সরা হিট। রাহার বাবা রণবীর কাপুরও অবশ্য কম যান না। মা আলিয়া ভাটও তাই। তবে ফটোশিকারিদের সঙ্গে আলাপ না থাকলেও আধ-আধ উচ্চারণেই তাদের কখনও শুভেচ্ছা জানায় সে, আবার কখনও বা হাত নেড়ে চুমু ছোড়ে।
এমন মিষ্টি আচরণেই সবার মন কেড়েছে রাহা। কিন্তু নিরাপত্তার স্বার্থে মেয়েকে বাড়তি ‘স্পটলাইট’ থেকে দূরে রাখতে বড় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আলিয়া। তাই পোস্ট করা রাহার সব ছবি মুছে ফেললেন। এদিকে মিষ্টি রাহাকে দেখতে না পাওয়ার আশঙ্কায় মন খারাপ অনুরাগীদের। তাদের প্রশ্ন, ‘রাহার ছবি কি আর কখনও দেখতে পাব না?’
তবে সিংহ ভাগ অবশ্য আলিয়ার, এ সিদ্ধান্তে সমর্থন জানিয়েছেন। তাদের মন্তব্য, উচিত কাজ করেছেন মা হিসেবে। কেউ বলছেন, ‘মিষ্টি বাচ্চাদের ছবি দেখে অনেকেই কুনজর দেন বা হিংসা করেন।’
একাংশ আবার প্রশ্ন ছুড়েছেন, ‘ননদ কারিনার বাড়িতে হামলার ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েই কি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আলিয়া?’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
প্রস্থেটিক মেকআপ আর্টে সোনালী মিতুয়ার বাজিমাত
বাংলাদেশের মেকআপ আর্ট জগতে নীরবে নতুনত্ব যোগ করে যাচ্ছেন সোনালী মিতুয়া। তার শৈল্পিক ইলিউশন এবং বডি পেইন্টিংগুলো আন্তর্জাতিক মানের, যা দেখে চোখ ফেরানো দায়। বর্তমানে ফিনল্যান্ডে মেকআপের ওপর উচ্চশিক্ষা নিচ্ছেন এই শিল্পী, যার ক্যানভাসে শৈশবের প্রথম গন্ধ ছিল তেল রং আর থিনারের তীব্রতা। মেকআপ ব্যবহার করে তিনি যে ক্যানভাস তৈরি করেন-তা এক কথায় অনন্য, অসাধারণ।
সোনালী মিতুয়া কখনও তার মুখে ফুটে ওঠে ফাটল ধরা পৃথিবী, যেখান থেকে গজিয়ে ওঠে সবুজ লতা। কখনও দেখা যায় তার মুখটাই এক অর্ধেক যন্ত্র, অর্ধেক প্রকৃতি, যেন মানুষ আর মেশিনের মাঝের এক অদ্ভুত, কাব্যময় দ্বন্দ্ব।আর কখনও সেই মুখটাই অন্ধকারে মিলিয়ে যায়, শুধু দেখা যায় এক ভয়ঙ্কর কালো গহ্বর — যেন মানুষের শূন্য আত্মা। এগুলো কোনো সিনেমার দৃশ্য না।এগুলো এক তরুণী মেকআপ আর্টিস্টের সৃষ্ট জীবন্ত শিল্পকর্ম।
আরো পড়ুন:
একা বাস করতে পারে যে পাখি
কেউ কটূক্তি করলে কী করবেন?
সোনালী মিতুয়ার মেকআপে একটা গল্প, একটা দর্শন, একটা গভীর বার্তা লুকিয়ে থাকে। যেখানে অধিকাংশ মানুষ মেকআপকে শুধু প্রসাধনের জগতে দেখে, সে সেখানে মেকআপকে তুলেছে এক উচ্চমাত্রার শিল্প হিসেবে। তার হাতে রঙ মানে—চামড়ার ওপরে নয়, বরং আত্মার ভাষা প্রকাশের এক মাধ্যম।
তার কাজে দেখা যায় প্রস্থেটিক মেকআপের প্রভাব— যেখানে মুখ বদলে যায়, গড়ে ওঠে নতুন রূপ, নতুন চরিত্র। এমন কৌশল একদিন তাকে সিনেমার পর্দায় প্রস্থেটিক আর্টিস্ট হিসেবে বড় জায়গায় নিয়ে যাবে—
এ কথা বলার জন্য বিশেষজ্ঞও হতে হয় না।
এই মেয়েটির সবচেয়ে বড় শক্তি তার কল্পনাশক্তি। সে মুখের ভেতরেই ফুটিয়ে তোলে গল্প—একদিকে প্রকৃতি, ফুল, প্রজাপতি; অন্যদিকে প্রযুক্তি, ধ্বংস আর শূন্যতা। দেখলে মনে হয়, এই দুইয়ের টানাপোড়েনেই গড়ে উঠেছে তার শিল্পজগৎ।
বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য এই মেয়েটি এক অনুপ্রেরণা। সে প্রমাণ করছে—শিল্পের ভাষা যদি শক্ত হয়, তাহলে দেশের সীমা পেরিয়ে বিশ্বেও পৌঁছানো যায়। যেখানে মেকআপকে এখনো অনেকেই কেবল সাজের কাজ মনে করেন, এই মেয়েটি সেখানে দেখিয়েছে — মেকআপও হতে পারে দর্শন, প্রতিবাদ আর সৃষ্টির ক্যানভাস।
তিনি জানেন, প্রস্থেটিক আর্টে (বিশেষত কৃত্রিম অঙ্গ, ক্ষত বা ফ্যান্টাসি চরিত্র তৈরি) করা যায় দক্ষতার সাথে। বর্তমানে বাংলাদেশের সিনেমায় যেখানে প্রস্থেটিকের ব্যবহার খুবই সীমিত, সেখানে সোনালী মিতুয়ার মতো একজন আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিল্পী আছেন, তার হাতেই তৈরি হতে পারে বাংলাদেশের ইতিহাসের চরিত্রদের নিখুঁত রূপ, অথবা আমাদের ফ্যান্টাসি সিনেমার ভিনগ্রহের প্রাণী।
সোনালী মিতুয়ার কাজগুলো দেখলেই বোঝা যায়, তিনি মেকআপকে স্রেফ সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যম হিসেবে দেখেন না, বরং এটিকে একটি শক্তিশালী গল্প বলার হাতিয়ার মনে করেন।
একটা ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন মানুষ প্রকৃতির মাঝে ফাটল ধরা পাথরের মতো এক রূপ ধারণ করেছেন। সবুজ, হলুদ ও লালের মিশ্রণে চোখের অংশটি গভীর এবং রহস্যময়, আর ফাটলের ভেতর দিয়ে বেরিয়ে আসা লতা-পাতা জীবনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটি তার পরিবেশ-সচেতনতা এবং ফ্যান্টাসি আর্টের দক্ষতা প্রমাণ করে।
সাদাকালো স্কেচের মতো দেখতে এই মেকআপটি অত্যন্ত কঠিন এবং চোখে পড়ার মতো। মুখের প্রতিটি অংশে পেন্সিল বা চারকোল দিয়ে আঁকা হ্যাচিংয়ের মতো স্ট্রোকগুলো ত্রিমাত্রিক চেহারাটিকে দ্বিমাত্রিক কমিক-বুক বা নয়ার চলচ্চিত্রের চরিত্র হিসেবে ফুটিয়ে তুলেছে।
চোখ ও মুখের চারপাশে মাকড়সার জাল এবং ফুলা, রক্তবর্ণ চোখের পাপড়ি ভীতি ও কষ্টের এক শক্তিশালী অনুভূতি জাগায়। এটি বিশেষ করে হ্যালোইন বা হরর থিমের জন্য পারফেক্ট।
গভীর অন্ধকারে তোলা এই ছবিটি ‘অন্ধকার গহ্বর’ বা ‘কৃষ্ঞগহ্বর’ থিমের একটি চমকপ্রদ ইলিউশন মেকআপ। নিখুঁত কনট্যুরিং এবং রঙের ব্যবহারে মুখের এক অংশে যেন সত্যিই একটি ফাঁকা, গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
ঢাকা/লিপি