দুবাইয়ে লটারিতে ৬৬ কোটি টাকা জিতল বাংলাদেশি কর্মী ও তার বন্ধুরা
Published: 4th, March 2025 GMT
দুবাইয়ে লটারিতে প্রায় ৬৬ কোটি (দুই কোটি দিরহাম) টাকা জিতেছেন এক বাংলাদেশি কর্মী ও তার ১৩ বন্ধু। মঙ্গলবার গালফ নিউজ এ তথ্য জানিয়েছে।
আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত ২৭২ নম্বর র্যাফেল ড্র সিরিজে জেতা বাংলাদেশির নাম জাহাঙ্গীর আলম। ৪৪ বছর বয়সী এই প্রবাসী গত ছয় বছর ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাস করছেন। ২০২২ সাল থেকে তিনি লটারির টিকিট কেনা শুরু করেছিলেন।
গালফ নিউজকে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “আমি প্রায় তিন বছর ধরে টিকিট কিনছি। আমার বন্ধুরা আমাকে বুঝিয়েছিল যে, জ্যাকপট জিতলে জীবন বদলে যায়, তখন থেকেই এই অভ্যাস শুরু হয়।”
জাহাঙ্গীর আলমের বন্ধুদের দলে ১৩ জন বাংলাদেশি এবং একজন ভারতীয় রয়েছেন। তারা সবাই জাহাজ নির্মাণ শিল্পের বিভিন্ন পেশায় কাজ করেন, যেমন ওয়েল্ডার, টেকনিশিয়ান, রঙ মিস্ত্রি ও ক্লিনার। এদের মধ্যে জাহাঙ্গীর টেকনিশিয়ান হিসেবে কর্মরত। লটারির টিকিট তারা তাদের সঞ্চিত অর্থ দিয়ে একসঙ্গে কিনতেন। তাই জ্যাকপটের অর্থ ১৪ জন ভাগ করে নেবেন বলে জানিয়েছে গালফ নিউজ।
জাহাঙ্গীর বলেন, “এই দলে বিভিন্ন স্তরের পেশাদাররা আছেন। আমাদের বার্ষিক বেতন ৩৫ হাজার দিরহাম থেকে ৪০ হাজার দিরহাম এবং তারও বেশি। আমি মাসে প্রায় তিন হাজচার দিরহাম আয় করি।”
তিনি বলেন, “বিশেষ করে গত দুই মাস ধরে সৌভাগ্যের আশায় আমি প্রার্থনা করছিলাম। ড্রয়ের সময় আমি নামাজ পড়ছিলাম। মসজিদের ভেতরে আমার ফোনটি না নেওয়ায় আমি বিগ টিকিটের কলটি মিস করেছিলাম। কিন্তু মসজিদ থেকে ফিরে আসার পর আমার বন্ধুরা আমাকে খবরটি জানিয়েছিল। আমি কখনো ভাবিনি যে আমি আসলেই ভাগ্যবান হব। আমি কেবল অন্যদের জয়ের কথা পড়েছিলাম। অবশেষে, আমার সময় এলো।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।