নাহ্, পাকিস্তানের ক্রিকেটপ্রেমীদের আশা পূরণ হলো না। দুবাইয়ে সেমিফাইনালে ভারত হারলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনাল ফিরবে পাকিস্তানের মাটিতে—এ–ই ছিল তাঁদের চাওয়া। কিন্তু রান তাড়া করতে নেমে বিরাট কোহলি ক্রিজে জমে গেলে আসলে কারও চাওয়াই পূর্ণ হয় না, শুধু কোহলিরটা ছাড়া!

অস্ট্রেলিয়ার ২৬৪ রান তাড়া করতে নেমে ভারত যে বিপদে পড়েনি, তা নয়। ৭.

৫ ওভারে ৪৩ রানের মধ্যে ফিরে যান দুই ওপেনার শুবমান গিল ও রোহিত শর্মা। তিনে নামা কোহলি এরপর দাবার চালের মতো অস্ট্রেলিয়ার রানটা এমনভাবে তাড়া করার পথ বের করলেন যে ম্যাচটা ভারত ১১ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে জিতে গেল। রান তাড়ায় ৯৮ বলে ৮৪ রানের আরেকটি ‘মাস্টারক্লাস’ ইনিংস খেলে কোহলি আগামী রোববার দুবাইয়ে ভারতের ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করার মূল নায়ক। যেখানে ভারতের প্রতিপক্ষ আজ নিউজিল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় সেমিফাইনালের বিজয়ী দল। লাহোরে এই সেমিফাইনালই হবে এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে পাকিস্তানে শেষ ম্যাচ।

আরও পড়ুনআইপিএলে ড্রেসিংরুমে নিষিদ্ধ খেলোয়াড়দের বউ–বান্ধবী৫৮ মিনিট আগে

ভারতকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পঞ্চম ফাইনালে তোলার পথে রান তাড়ায় ৮ হাজার রানের মাইলফলক পেরোনো কোহলির ইনিংসটি অনেককে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল তাঁর সেরা সময়ে। পঞ্চম ওভারে ৩০ রানে অস্ট্রেলিয়ার পেসার বেন ডরশুইসের বলে গিলকে হারায় ভারত। কোহলি নামার ১৬ বল পর রোহিতও ফেরেন স্পিনার কুপার কনোলির বলে এলবিডব্লু হয়ে। পয়েন্টে ‘জীবন’ পাওয়া রোহিত আগেই ফিরেছেন ২৮ রানে।

উইকেট শুকনো ও স্পিনবান্ধব হওয়ায় অস্ট্রেলিয়া ভেবেছিল, আগেভাগে স্পিনার এনে দ্রুত উইকেট তুলে চাপে ফেলা যাবে ভারতকে। সে পথে অস্ট্রেলিয়া প্রথম দফায় সফল হলেও পরে আর পারেনি। কারণ, কোহলি ব্যাটকে ছুরি বানিয়ে ফিল্ডিংয়ের ফাঁকফোকর দিয়ে যেমন রান বের করেছেন, তেমনি বাকিরাও তাঁকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন।

সতীর্থদের সঙ্গে জুটি গড়ে ভারতকে জয়ের পথচ্যূত হতে দেননি কোহলি

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ