দুর্নীতি ও অপচয়ের কারণে সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার করতে পারছি না: জ্বালানি উপদেষ্টা
Published: 16th, August 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, ‘আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ খুব একটা নেই। কিছু প্রাকৃতিক গ্যাস ছিল। সেটাও ফুরিয়ে আসছে। এমনকি দুর্নীতি ও অপচয়ের কারণে আমরা সীমিত সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার করতে পারছি না। প্রকল্পগুলো নির্ধারিত সময়ে শেষ হয় না, ব্যয়ও বাড়ে। এসব থামাতে হবে।’
আজ শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম–ঢাকা জ্বালানি তেল সরবরাহের পাইপলাইন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা এ কথাগুলো বলেন। চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গায় অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, ‘বড় সমস্যা হলো, আমাদের প্রকল্পের ব্যয় বেশি। আমাদের সড়ক নির্মাণ ব্যয় অন্য দেশের তুলনায় বেশি। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর তুলনায়ও অনেক বেশি। সুতরাং ব্যয় কমাতে হবে।’
পাইপলাইনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল পরিবহনে ২০১৬ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছিল বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। তিন দফা মেয়াদ বাড়িয়ে গত মার্চে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। এতে প্রায় ৩ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। গত ২২ জুন পরীক্ষামূলকভাবে পাইপে ডিজেল সরবরাহের কাজ শুরু হয়। ৪ আগস্ট পর্যন্ত ৪ কোটি ৮২ লাখ লিটার ডিজেল সরবরাহ করা হয়েছে। আজ উদ্বোধনের পর আনুষ্ঠানিকভাবে ডিজেল সরবরাহ শুরু হয়।
সরবরাহ উদ্বোধন করে উপদেষ্টা বলেন, পাইপলাইনে ডিজেল সরবরাহের মাধ্যমে অপচয় কমবে। চুরিও ঠেকানো যাবে। এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্প। যদিও নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হয়নি। এখন প্রকল্পটি ভালোভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে।
দেশের প্রকল্প–সংস্কৃতির সমালোচনা করে অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের শুধু ব্যয় বেশি এমনটা নয়, বিলম্বেও কাজ শেষ হয়। কোনো কোনো প্রকল্প ১৭ থেকে ১৮ বছর ধরেও চলেছে। এসব প্রকল্প আমরা আর টানতে পারব না।’
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক আলোচনার প্রসঙ্গ টেনে উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রকল্পগুলোয় নিজস্ব ভ্যালু যুক্ত করতে হবে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্টা শুল্ক নিয়ে নেগোসিয়েশন (দর–কষাকষি) হলো। সেখানেও ভ্যালু যুক্ত করা নিয়ে কথা হয়েছে। সামনের দিনে ভ্যালু বাড়াতে না পারলে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হব। আমাদের অসংখ্য প্রকৌশলী বেকার। এমনকি বুয়েট থেকে পাস করা প্রকৌশলীকেও বেকার থাকতে হচ্ছে। অন্য দেশের ঠিকাদারের ওপর আমরা অতি নির্ভরশীল। এ নির্ভরশীলতা কমাতে হবে।’
চট্টগ্রাম-ঢাকা জ্বালানি তেল সরবরাহের পাইপলাইন প্রকল্পের উদ্বোধন করছেন জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান । আজ শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গায়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ড জ ল সরবর হ ল সরবর হ র প রকল প র উপদ ষ ট শ ষ হয় আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে সাবমেরিন সরবরাহের অনুমোদন দিল জার্মানি
জার্মানি ইসরায়েলের কাছে একটি উন্নতমানের সাবমেরিন সরবরাহের অনুমোদন দিয়েছে। যদিও জার্মান সরকার মাত্র কয়েকদিন আগেই ইসরায়েলে সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল। খবর আনাদোলুর।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবমেরিনটির নির্মাতা কোম্পানি থাইসেনক্রুপ গত শুক্রবার বার্ষিক সাধারণ সভায় এই পরিকল্পিত রপ্তানি নিশ্চিত করেছে।
গত ৮ আগস্ট জার্মানি ঘোষণা করেছিল যে, গাজায় ব্যবহৃত হতে পারে এমন কোনো সামরিক সরঞ্জাম ইসরায়েলে রপ্তানি করা হবে না। তবে সাবমেরিন সরবরাহ অনুমোদন জার্মানির ঐতিহাসিক মিত্রতা এবং সাম্প্রতিক নীতি পরিবর্তনের দ্বৈত অবস্থান তুলে ধরে।
আরো পড়ুন:
গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়াল
নেতানিয়াহু পথ হারিয়ে ফেলেছেন: নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী
বুধবার (১৩ আগস্ট) বার্লিনে সরকারি প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ড্যানিয়েল গ্রেভ এই নির্দিষ্ট ইস্যুতে কোনো মন্তব্য করেননি।
ড্যানিয়েল গ্রেভ সাংবাদিকদের বলেন, “আমি এখানে ভিন্ন ভিন্ন সব ইস্যুতে মন্তব্য করতে পারছি না...সাধারণত ফেডারেল সরকার ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতি এবং বৈদেশিক ও নিরাপত্তা নীতি বিবেচনা করে অস্ত্র রপ্তানির অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেয়।”
ইসরায়েলের জন্য ষষ্ঠ ডলফিন-ক্লাস সাবমেরিন আইএনএস ড্রাকন সরবরাহের অনুমোদন দিয়েছে জার্মানি। গত সপ্তাহের শুরুতে সাবমেরিনটি বাল্টিক সাগরের রুগেন দ্বীপে সমুদ্র পরীক্ষায় দেখা গেছে।
সাবমেরিন ক্রয়ের চুক্তি ২০১২ সালে স্বাক্ষরিত হয়। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ফেডারেল সিকিউরিটি কাউন্সিল সরবরাহের জন্য সবুজ সংকেত দেয়। তবে জার্মান অর্থনীতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ফেডারেল অফিস ফর ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড এক্সপোর্ট কন্ট্রোল থেকে প্রয়োজনীয় রপ্তানি লাইসেন্স স্থগিত ছিল। সাবমেরিনটির মোট ক্রয়মূল্য প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ৫৮৫.৮ মিলিয়ন ডলার), যার মধ্যে জার্মান সরকারের অবদান ছিল ১৩৫ মিলিয়ন ইউরো।
সাবমেরিন চুক্তি ইতোমধ্যেই ইসরায়েলি বিচার বিভাগীয় তদন্তের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। একটি তদন্ত কমিশন জার্মান অস্ত্র প্রস্তুতকারক থাইসেনক্রুপ মেরিন সিস্টেমসের সঙ্গে চুক্তিগুলো খতিয়ে দেখছে। এই ঘটনার পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুও পুলিশের সামনে সাক্ষ্য দিয়েছেন। জার্মান পাবলিক ব্রডকাস্টার নর্ডডয়েচার রুন্ডফাঙ্ক সম্প্রতি বিস্তৃত তদন্ত প্রকাশ করেছে, যেখানে টিকেএমএসের চুক্তি এবং নেতানিয়াহুর সঙ্গে তাৎক্ষণিক স্বার্থের দ্বন্দ্ব তুলে ধরা হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ