Samakal:
2025-08-01@02:06:58 GMT

পাসপোর্টে ভোগান্তি কমেছে

Published: 4th, March 2025 GMT

পাসপোর্টে ভোগান্তি কমেছে

পাসপোর্টের জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন না থাকায় ভোগান্তি কমেছে আবেদনকারীদের। আগে মাসের পর মাস ঘুরতে হতো আবেদনকারী অনেককে। পাসপোর্ট অফিসে আবেদন জমা দেওয়ার পর তদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হতো পুলিশের এসবি অফিসে। তথ্যের ঘাটতিসহ নানা অজুহাতে পুলিশ কালক্ষেপণ করছে– এমন অভিযোগ উঠত অহরহ।
তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই আবেদনকারীদের কাছ থেকে নেওয়া হতো ঘুষ। না দিলে আবেদনকারীর বিপক্ষে দেওয়া হতো প্রতিবেদন। এতে অনেকেই পড়তেন চরম ভোগান্তিতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তদন্তের নামে বেড়াজালে আটকিয়ে আবেদনকারীদের ফেলা হতো নানা ধরনের হয়রানিতে। এখন ভেরিফিকেশন বা তদন্ত ছাড়াই যে কার্যক্রম চলছে, তা নাগরিকদের জন্য স্বস্তিদায়ক। পাসপোর্ট অফিসগুলো যথাযথ দায়িত্ব পালন ও সেবা দেওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করলে সুফল পাবেন দেশের নাগরিক।
পুলিশ ভেরিফিকেশন বাতিল ঘোষণা করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগ থেকে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি পরিপত্র জারি করা হয়েছে। এখন প্রাপ্তবয়স্কদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও ১৮ বছরের নিচে যাদের বয়স তাদের জন্মসনদের তথ্যে পাসপোর্ট দেওয়া হবে। রাজধানীর বিভিন্ন পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে আবেদনকারীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের স্বস্তির কথা জানা গেছে। কেউ কেউ বলেছেন, অপরাধ করে কেউ যেন বিদেশে পালানোর জন্য পাসপোর্ট না পায়, সে ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে।

সম্প্রতি উত্তরা পাসপোর্ট অফিসে কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিমন দাসের সঙ্গে। নিজের পাসপোর্টের আবেদন জমা দিতে এসেছেন তিনি। তাঁর বাড়ি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার জমিদার টিলা। পুলিশ ভেরিফিকেশন তুলে দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। তদন্তের নামে যে হয়রানি করা হতো, সেটা এখন আর হবে না। আফতাবনগর পাসপোর্ট অফিসে পূর্ব রামপুরা থেকে তানভীর আহমেদ কবির আসেন তাঁর মেয়ের পাসপোর্টের আবেদন জমা দিতে। তিনি বলেন, ‘পুলিশের তদন্ত দরকার আছে বলে আমি মনে করি। যারা অপরাধী তাদের অবশ্যই তদন্তের আওতায় আনা উচিত। যারা নিরপরাধ তাদের যেন হয়রানি করা না হয়। হয়রানি কীভাবে বন্ধ করা যায়, সে বিষয়টি ভেবে দেখা উচিত।’
আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে পশ্চিম নাখালপাড়া থেকে আবেদন করতে আসেন রনি দাস। সমকালকে তিনি জানান, সকাল ৯টার দিকে তিনি অফিসে পৌঁছান। পাসপোর্টের আবেদন পত্র জমা দেওয়ার পর জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করার জন্য তাঁকে ১০৫ নম্বর কক্ষে পাঠানো হয়। সেখানে এনআইডি কার্ড জমা দিতে গেলে দায়িত্বরত কর্মকর্তা জানান, সার্ভার ডাউন। দুই ঘণ্টা পর ওই কক্ষে গেলে আবারও তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এক ঘণ্টা পর তিনি আবার গেলে তাঁর এনআইডির ভেরিফায়েড কপি দেওয়া হয়। তিনি বলেন, সহজে যাতে আবেদন ফরম জমা দেওয়া ও পাসপোর্ট পাওয়া যায়, সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে ভাবতে হবে।

বছিলায় পাসপোর্ট অফিসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেদার টেকনোলজি বিভাগে মার্স্টাস শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ফারজানা রহমান আসেন নিজের পাসপোর্ট করতে। পুলিশি তদন্ত বাতিল বিষয়ে তিনি বলেন, এটা অবশ্যই ভালো দিক। তবে কোনো অপরাধী যেন পার পেয়ে না যায়, সেদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
পাসপোর্টের সেবা সহজীকরণে পুলিশ ভেরিফিকেশন বাতিল প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাবেক সচিব আবু আলম মো.

শহীদ খান সমকালকে বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্মসনদ থাকলে সে ক্ষেত্রে আর পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হয় না। পুলিশের তদন্তের নামে যে জনহয়রানি ও ভোগান্তি, তা মোটেই কাম্য ছিল না। বর্তমান সরকার একটি ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পাসপোর্ট পাওয়া মানেই বিদেশে গমন নয়। পাসপোর্টে ভিসা থাকতে হয়। ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে যে তালিকা থাকে, সেই তালিকায় স্বীকৃত অপরাধীদের নাম থাকে। সেই অনুযায়ী তারা দায়িত্ব পালন করলে অপরাধীরা দেশের বাইরে যেতে পারবে না।

পুলিশ ভেরিফিকেশন বাতিল প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজী গোলাম তৌসিফ সমকালকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অনুশাসন হিসেবেই নতুন পাসপোর্টের তদন্ত বাতিল করা হয়েছে। পাসপোর্ট পাওয়া দেশের নাগরিকের অধিকার।
এ প্রসঙ্গে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল নূরুল আনোয়ার বলেন, পুলিশ ভেরিফিকেশনের কারণে পাসপোর্ট আবেদনকারীরা হয়রানির সম্মুখীন হতো। এতে অধিদপ্তরের সেবা সম্পর্কে আবেদনকারীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতো। তিনি বলেন, পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়া সুপার এক্সপ্রেস সার্ভিসের আওতায় যে কোনো জরুরি প্রয়োজনে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নতুন পাসপোর্ট দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। পাসপোর্ট সেবার ক্ষেত্রে এটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
পুলিশ ভেরিফিকেশন বাতিল সম্পর্কে জানতে চাইলে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এটা অবশ্যই ইতিবাচক দিক। দেশের সব নাগরিককে অপরাধী ভাবা ঠিক না। আমরা দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ ভেরিফিকেশনের বিপক্ষে কথা বলেছি। এর আগে পুলিশ ভেরিফিকেশনের পক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নানা যুক্তি দেখিয়েছে। অবশেষে এ সরকার আমাদের দাবির প্রতিফলন ঘটিয়েছে। দেশের নাগরিকরা এখন পুলিশি তদন্তের নামে চাঁদাবাজি ও হয়রানি ছাড়াই পাসপোর্ট পাবেন। তিনি বলেন, এটা চিরস্থায়ী হতে হবে। পুলিশ ভেরিফিকেশন বাতিলের পাশাপাশি পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষকে সেবা সহজীকরণে দায়িত্বশীল হতে হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: তদন ত র ন ম র তদন ত প রসঙ গ র জন য অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

নারীদের সেরা সঞ্চয়; পরিবার সঞ্চয়পত্রে মুনাফা কত, কীভাবে কিনবেন

দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় সঞ্চয়পত্র হলো পরিবার সঞ্চয়পত্র। নারীরা এই সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন। এই সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার তুলনামূলক বেশি এবং প্রতি মাসে মুনাফা তোলা যায়।

পরিবার সঞ্চয়পত্র নামে এই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করলে মেয়াদ শেষে অর্থাৎ পাঁচ বছর পর ১১ দশমিক ৯৩ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন।

বর্তমানে যে চারটি সঞ্চয়পত্র আছে, এর মধ্যে পেনশনার সঞ্চয়পত্রের পরেই এই সঞ্চয়পত্রে সবচেয়ে বেশি মুনাফার হার। ২০০৯ সালে এই সঞ্চয়পত্র চালু করে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর। দেড় দশক ধরে এই সঞ্চয়পত্র দেশের অন্যতম জনপ্রিয় সঞ্চয়পত্র হিসেবে পরিচিত।

মূল্যমান কত

১০ হাজার টাকা, ২০ হাজার টাকা, ৫০ হাজার টাকা, ১ লাখ টাকা, ২ লাখ টাকা এবং ১০ লাখ টাকা।

কোথায় পাওয়া যায়

জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো, বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখাসমূহ, বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ এবং ডাকঘর থেকে কেনার পাশাপাশি নগদায়ন করা যায়।

মেয়াদ

পাঁচ বছর

মুনাফার হার

১ জুলাই থেকে সরকার সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমিয়েছে। যেমন পরিবার সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে পঞ্চম বছর শেষে ১১ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ।

মেয়াদ পূর্তির আগে নগদায়ন করলে কম হারে মুনাফা প্রাপ্য হবে এবং অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধিত হয়ে থাকলে তা মূল টাকা থেকে কর্তন করে সমন্বয়পূর্বক অবশিষ্ট মূল টাকা পরিশোধ করা হবে।

উৎসে কর

পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত সর্বমোট বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার ওপর ৫ শতাংশ হারে এবং এর অধিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার ওপর ১০ শতাংশ হারে উৎসে কর কর্তন করা হয়।

কারা কিনতে পারবেন

তিন শ্রেণির বিনিয়োগকারী পরিবার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবে। এক. ১৮ ও তদূর্ধ্ব বয়সের যেকোনো বাংলাদেশি নারী; দুই. যেকোনো বাংলাদেশি শারীরিক প্রতিবন্ধী (পুরুষ ও মহিলা); তিন. ৬৫ ও তদূর্ধ্ব বয়সের যেকোনো বাংলাদেশি (পুরুষ ও মহিলা) নাগরিক।

ক্রয়ের ঊর্ধ্বসীমা

একক নামে সর্বোচ্চ ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) লাখ টাকা।

অন্য সুবিধা

পরিবার সঞ্চয়পত্র কেনায় কিছু সুবিধা আছে। যেমন মাসিক ভিত্তিতে মুনাফা পাওয়া যায়; নমিনি নিয়োগ বা পরিবর্তন ও বাতিল করা যায়; সঞ্চয়পত্রের ক্রেতার মৃত্যুর পর নমিনি সঙ্গে সঙ্গে সঞ্চয়পত্র নগদায়ন করে টাকা উত্তোলন করতে পারেন অথবা মেয়াদ পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত যথারীতি মাসে মাসে মুনাফা উত্তোলন করতে পারেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারীদের সেরা সঞ্চয়; পরিবার সঞ্চয়পত্রে মুনাফা কত, কীভাবে কিনবেন