রণবীরের সেই নগ্ন দৃশ্য নিয়ে মুখ খুললেন পরিচালক
Published: 5th, March 2025 GMT
পরিচালক সন্দীপ রেড্ডি ভাঙা নির্মিত আলোচিত সিনেমা ‘অ্যানিমেল’। ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর বিশ্বব্যাপী মুক্তি পায় এটি। এতে প্রথমবার জুটি বেঁধে অভিনয় করেন রণবীর কাপুর-রাশমিকা মান্দানা। মুক্তির পর সিনেমাটি যেমন সমালোচনার মুখে পড়েছিল, তেমনি বক্স অফিসেও ঝড় তুলেছিল।
‘অ্যানিমেল’ সিনেমায় একটি দৃশ্য সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় হাঁটতে দেখা যায় রণবীর কাপুরকে। প্রস্থেটিক ব্যবহার করে দৃশ্যটির শুটিং করার কথা ছিল। কিন্তু সর্বশেষ তা হয়নি। প্রস্থেটিক ছাড়া শুটিং করার কথা বলার সঙ্গে রাজি হয়ে যান রণবীর। মূলত, সন্দীপ রেড্ডি ভাঙার উপরে আস্থা রেখে নগ্ন হয়ে বিনা বাক্যে শট দেন এই অভিনেতা।
কয়েক দিন আগে স্ক্রিন-কে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন সন্দীপ রেড্ডি ভাঙা। এ আলাপ চারিতায় তিনি বলেন, “আমার যা পছন্দ, তারও তাই পছন্দ ছিল। কিন্তু এখনো জানি না এটা কীভাবে হয়েছিল। এমনকি, আমি যখন তাকে জিজ্ঞাসা করছিলাম, আমরা সঠিক পথে এগোচ্ছি কিনা, তখনো সে আমাকে বলেছিল, ‘যা করতে চান তা করতে থাকুন, এ নিয়ে আমাকে কিছু জিজ্ঞাসা করতে হবে না।”
আরো পড়ুন:
ছাবা ঝড়: ১৬ দিনে আয় ৮২৫ কোটি টাকা
‘ছাবা’ ঝড়: ১১ দিনে আয় ৬২১ কোটি টাকা
রণবীরের নগ্ন দৃশ্যের শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা ব্যাখ্যা করে সন্দীপ রেড্ডি ভাঙা বলেন, “রণবীরের উরু এবং তার শরীরের নিচের অংশে প্রস্থেটিক ব্যবহার করেছিলাম। পরীক্ষামূলক শুটিংয়ে এটি নিখুঁত দেখাচ্ছিল। কিন্তু চূড়ান্ত শুটিংয়ের সময়ে সুন্দর লাগছিল না। দৃশ্যটি সম্পূর্ণ ফোকাসে রেখে শুটিং করার পরিকল্পনা করেছিলাম। হাঁটার সময়ে কুঁচকে যাওয়া অংশ ঢেকে রাখার জন্য প্রপস ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু প্রস্থেটিক সঠিকভাবে কাজ না করায় বলেছিলাম, ‘দৃশ্যটির শুটিং ফোকাসের বাইরে করব।”
পরের ঘটনা বর্ণনা দিয়ে সন্দীপ রেড্ডি ভাঙা বলেন, “তাৎক্ষণিকভাবে সে (রণবীর) বলল, ‘ওকে, ঠিক আছে।’ এ নিয়ে কোনোরকম আলোচনা হয়নি। এটি দশ মিনিটের কথোপকথন ছিল, যেখানে আমি বলেছিলাম, ‘আউট অব ফোকাসে শুটিং করব। এতে করে দৃশ্যটিকে আরো বেশি ভুতুড়ে এবং কৌতূহলী করে তুলবে।’ সে প্রস্তুত ছিল। দেখুন, ফলাফল যেকোনো কিছু হতে পারে। কিন্তু যদি এটি ঘটে, তবে সিনেমাটি মজার হবে; সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হবে।”
রণবীর কাপুরের সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়া হওয়ার কারণে এমন সাহসী দৃশ্য রূপায়ন করা সম্ভব হয়েছে বলেও মনে করেন এই পরিচালক।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর রণব র ক প র রণব র
এছাড়াও পড়ুন:
ভোগবাদী যুগে ইসলামে সুখের খোঁজ
আপনার বাড়িতে কি অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের স্তূপ জমে আছে? জানেন কি, এর থেকে মুক্তির পথ আছে ইসলামের সরল জীবনধারায়? আধুনিক বিশ্বে ভোগবাদের তীব্র ঝড়ে আমরা প্রায়ই নিজেদের দেখি অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রে ঠাসা ঘরে।
নতুন ফ্যাশনের পোশাক, সর্বশেষ প্রযুক্তির গ্যাজেট বা মধ্যরাতে এক ক্লিকে কেনা অপ্রয়োজনীয় পণ্য—এসব আমাদের জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ইসলাম আমাদের ন্যূনতম একটি সরল জীবনধারার পথ দেখায়, যা পার্থিব লোভ থেকে মুক্ত করে আমাদের আল্লাহর পথে নিবেদিত হতে উৎসাহিত করে।
আয়েশা, তুমি যদি আমার সঙ্গে মিলিত হতে চাও, তবে এই দুনিয়া থেকে একজন পথিকের প্রয়োজনীয় জিনিসের মতো সামান্য গ্রহণ করো।সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১৭,৮০০সংযম কেন জরুরিমিনিমালিজম বা ন্যূনতাবাদ এমন একটি জীবনধারা, যেখানে আমরা শুধু প্রয়োজনীয় জিনিসের ওপর নির্ভর করব এবং অতিরিক্ত ভোগবিলাস থেকে দূরে থাকব। ক্রমাগত কেনাকাটার দিকে প্রলুব্ধ না হয়ে শুধু যেটুকু না হলেই জীবন চলে না, সেটুকু নিজের কাছে রাখব।
আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘হে আদম সন্তান, প্রত্যেক নামাজের সময় বেশভূষা সৌন্দর্য গ্রহণ করো, খাও এবং পান করো, কিন্তু অপচয় কোরো না। নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা আ’রাফ, আয়াত: ৩১)।
এই আয়াত আমাদের জীবনে সংযম ও সরলতার গুরুত্ব মনে করিয়ে দেয়।
আরও পড়ুনদুনিয়ার ভোগ–বিলাস নিয়ে সুরা তাকাসুরের সতর্কতা১০ এপ্রিল ২০২৩বিজ্ঞাপনের প্রলোভন আজকাল আমাদের অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটার দিকে ঠেলে দেয়। প্রায়ই এমন জিনিস কিনে ফেলি, যেমন একটি ইউএসবি মগ হিটার বা জামাকাপড়, যা তারপর বছরের পর বছর অব্যবহৃত পড়ে থাকে।
বাড়িতে জমে থাকে প্যাকেট না খোলা গ্লাস–বক্স, অপঠিত বইয়ের স্তূপ। প্রশ্ন করে দেখি তো, আমাদের আসলেই কি এগুলো প্রয়োজন ছিল?
মহানবী (সা.)-এর সাদাসিধা জীবনমহানবীজি (সা.) এবং তাঁর সাহাবারা সরল জীবনযাপনের উজ্জ্বল উদাহরণ। হজরত আয়েশা (রা.)-কে নবীজি বলেছিলেন, ‘হে আয়েশা, তুমি যদি আমার সঙ্গে মিলিত হতে চাও, তবে এই দুনিয়া থেকে একজন পথিকের প্রয়োজনীয় জিনিসের মতো সামান্য গ্রহণ করো। ধনীদের সঙ্গে মেলামেশা থেকে সাবধান থাকো এবং কোনো পোশাককে তখনই জীর্ণ হয়ে গেছে মনে করো, যখন তুমি তাতে প্যাঁচ লাগিয়েছ (মানে যখন পুরোনো হয়ে যাওয়ার কারণে পেঁচিয়ে যায়)।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১৭,৮০০)।
এই হাদিসে নবীজি (সা.) স্পষ্টভাবে সরল জীবনযাপন এবং অতিরিক্ত সম্পদ সঞ্চয় থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
উপহারের পরিবর্তে আমরা দাতব্য সংস্থায় দানের জন্য অনুরোধ করতে পারি। এমনকি আমাদের একটি অনলাইন সাবস্ক্রিপশন বাতিল করে সেই অর্থ স্থানীয় মসজিদে দান করতে পারি।ইসলাম আমাদের শেখায় যে পার্থিব সম্পদ ক্ষণস্থায়ী এবং এটি আমাদের চিরস্থায়ী জীবনের জন্য প্রস্তুতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। নবীজি (সা.) কখনো অপ্রয়োজনীয় সম্পদ সঞ্চয় করেননি এবং সব সময় দানশীলতার মাধ্যমে আল্লাহর পথে ব্যয় করতে উৎসাহিত করেছেন।
দানের সংস্কৃতিআজকের বিশ্বে ভোগবাদী সংস্কৃতি আমাদের জীবনকে জটিল করে তুলেছে। ক্রেডিট কার্ড, সহজলভ্য ঋণ এবং ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলো আমাদের ক্রমাগত কেনাকাটার দিকে প্রলুব্ধ করে। আমাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম, যেমন আমাদের দাদা-দাদিরা, সীমিত সম্পদের মধ্যে সরল জীবন যাপন করতেন। কিন্তু গত কয়েক দশকে বিশ্বব্যাপী মধ্যবিত্ত শ্রেণির উত্থান এবং সহজে ঋণ পাওয়ার সুযোগ আমাদের ভোগবাদী প্রবৃত্তিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুনখাদ্যনিরাপত্তা নিয়ে ইসলামের নির্দেশনা০৯ জুন ২০২৫কিন্তু ইসলাম আমাদের শেখায়, প্রয়োজনের বাইরে অতিরিক্ত সম্পদ সঞ্চয় করা লোভ ও কৃপণতার দিকে নিয়ে যায়, যা একজন মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়।
ইসলাম আমাদের জীবনকে সরল করার পাশাপাশি আল্লাহর পথে ব্যয় করতে উৎসাহিত করে। আমরা চাইলে মাসিক বাজেটের একটি অংশ দানের জন্য বরাদ্দ করতে পারি।
যে ব্যক্তি নিজের সম্পদে সংযমী হয় এবং আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে যায়।সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯৯৪বিয়ের মতো উৎসবে আমরা বিলাসবহুল আয়োজনের পরিবর্তে সরলতা বেছে নিতে পারি। উপহারের পরিবর্তে আমরা দাতব্য সংস্থায় দানের জন্য অনুরোধ করতে পারি। এমনকি আমাদের একটি অনলাইন সাবস্ক্রিপশন বাতিল করে সেই অর্থ স্থানীয় মসজিদে দান করতে পারি।
নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিজের সম্পদে সংযমী হয় এবং আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে যায়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯৯৪)।
আমাদের ভালো কাজ এবং দানশীলতা পরকালে যেমন উপকারে আসবে, তেমনি সমাজের জন্যও হবে কল্যাণকর। অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে দানশীলতার দিকে মনোযোগ দিলে সমাজের দরিদ্র ও অভাবী মানুষের জীবন উন্নত হবে।
ভোগবাদী জীবন মানুষকে অস্থির করে তোলে এবং ন্যূনতম খরচের জীবনধারা মানুষকে তৃপ্তির জীবন উপহার দেয়। এটি একই সঙ্গে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনেরও একটি পথ।
আমরা যদি আমাদের অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে আল্লাহর পথে ব্যয় করি, তবে তা আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনকে সমৃদ্ধ করবে। ন্যূনতমবাদ আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আমাদের প্রকৃত সুখ পার্থিব সম্পদে নয়, বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালের প্রস্তুতিতে নিহিত।
আরও পড়ুনআধুনিক এই প্রবণতার শিকড় ইসলামে২০ মে ২০২৫