রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় লুটপাটের মহোৎসবের পথ বন্ধ করতে হবে: সাংবাদিক নেতা আজিজ
Published: 5th, March 2025 GMT
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ বলেন, ভবিষ্যতে জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে, এমন দল ও নেতাকে ভোট দিতে হবে। আর কোনো দুর্নীতিবাজকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসানো যাবে না। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় লুটপাটের সব পথ বন্ধ করতে হবে।
সাংবাদিক নেতা এম এ আজিজ আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল বৈষম্যের কারণে। এখনো আমরা বৈষম্যের মধ্যেই আছি।’ আগামী নির্বাচনে সৎ নেতা বেছে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের খাদ্য নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু আজ এবি পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনকে এসব দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। আগামীতে জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে, এমন দল ও নেতাকে ভোট দিতে হবে।’
আজ বুধবার আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির উদ্যোগে আয়োজিত মাসব্যাপী গণ–ইফতারের চতুর্থ দিনের আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এম এ আজিজ এ কথা বলেন। পবিত্র রমজানের প্রথম দিন থেকে রাজধানীর বিজয়নগরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সংলগ্ন বিজয় একাত্তর চত্বরে এই গণ–ইফতারের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে জনগণের আকাঙ্ক্ষার দেশ গঠনের পরিবর্তে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দুর্নীতির মহোৎসব চলেছে অভিযোগ করে এম এ আজিজ বলেন, গণ–অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় লুটপাটের সব পথ বন্ধ করতে হবে।
এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসাইনের সভাপতিত্বে ও সহকারী শিক্ষা সম্পাদক ফয়সাল মনিরের সঞ্চালনায় গণ–ইফতার কর্মর্সূচিতে বিশেষ অতিথি ছিলেন নেজামে ইসলাম পার্টির নির্বাহী সভাপতি মাওলানা এ কে এম আশরাফুল হক। অনুষ্ঠানে এবি পার্টির নেতাদের মধ্যে যুব পার্টির সদস্যসচিব হাদিউজ্জামান খোকন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) শাহজাহান ব্যাপারী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
গণ–ইফতার অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন, এ বি এম খালিদ হাসান, উত্তরের সদস্যসচিব সেলিম খান, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল হালিম, যুগ্ম সদস্যসচিব আহমাদ বারকাজ, কেন্দ্রীয় সহকারী শিক্ষাবিষয়ক সহসম্পাদক ফয়সাল মনির, যুব পার্টির মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক মাহমুদ আজাদ, দপ্তর সম্পাদক আমানুল্লাহ সরকার প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে:
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ডিএনসিসির ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত পশ্চিম শেওড়াপাড়া, পশ্চিম কাজীপাড়া ও সেনপাড়া পর্বতা এলাকায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা, ৫ কিলোমিটার নর্দমা ও দেড় কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণকাজের উদ্বোধন ও গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।
ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, ডিএনসিসির সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রকল্পটি কবে শুরু হবে, কবে শেষ হবে, কতা টাকা বরাদ্দ আছে—এসব তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। এছাড়া, রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ হলে নির্মাণ সামগ্রী কী, সেটা জনগণের জানা দরকার। যখন জনগণ জানবে, তখন তারা জবাবদিহি করতে পারবে।
তিনি বলেন, “আমি গত সপ্তাহে কাউকে না জানিয়ে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে চলমান কাজ পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম, রাস্তাকে ধরে রাখার জন্য যে ওয়াল (বিশেষ দেয়াল) দেওয়া হয়েছে, সেটার পিলার বানানোর কথা ছিল স্টোন দিয়ে; কিন্তু বানিয়ে রেখেছে ব্রিক দিয়ে। এটা বড় দুর্নীতি। স্থানীয় মানুষ যদি না জানে, কী নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হবে, তাহলে দুর্নীতি করাটা সহজ। তথ্যের যত বেশি আদান-প্রদান হবে, তথ্য যত বেশি পাবলিক করা হবে, জনগণ তত বেশি জবাবদিহি করতে পারবে। আমি ঠিকাদারকে জানিয়ে দিয়েছি, সঠিক নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করলে বিল দেব না। তারা বলেছে, এটা ঠিক করে দেবে।”
মোহাম্মদ এজাজ বলেন, যার যার এলাকার কাজ তারা বুঝে নেবেন। বুঝে নেওয়ার জন্য যত তথ্য ও সহযোগিতা লাগবে, সেটা আমরা দেব। ডিএনসিসির ওয়েবসাইটে প্রকল্পের সব তথ্য ও ঠিকাদারের ফোন নম্বরসহ দেওয়া থাকবে। স্থানীয় জনগণ স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ বুঝে নেবেন। আমরা চাই, সকলের অংশগ্রহণে উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হবে। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় সোসাইটি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতা পাচ্ছি। সবার অংশগ্রহণ বাড়াতে আমি বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে গণশুনানি করছি। প্রতি মাসে ফেসবুক লাইভে দেশে-বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের সাথে যুক্ত হচ্ছি। ডিএনসিসির সবার ঢাকা অ্যাপ আছে, সেটির পাসওয়ার্ড পর্যন্ত আমাদের দিচ্ছে না। আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা ৪ কোটি টাকা খরচ করে এই অ্যাপ বানিয়েছে। পাসওয়ার্ড না দিলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।”
ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় হকারদের জন্য হাটা যায় না। মানুষের অবাধ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। ঢাকা শহরে মানুষের চলাচলের অধিকার সবার আগে, সেই অধিকার আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। মিরপুর-১০ এর প্রধান সড়কের যত হকার ও অটোরিকশা আছে, সেগুলো আমরা বন্ধ করে দেব। যারা এ ধরনের ইনফরমাল পেশায় যুক্ত আছেন, তাদের পুনর্বাসনের জন্যও আমরা প্ল্যাটফর্ম করব। তাদের জন্যও বিকল্প ব্যবস্থা আমরা তৈরি করব। এই শহরটা সবার, সবাই একসাথে বসবাস করব; কিন্তু অন্যদের কষ্ট না দিয়ে, অন্যের অধিকার নষ্ট না করে।
বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
ঢাকা/এএএম/রফিক