বিশেষ নিরাপত্তা প্ররক্ষা নির্দেশিকা বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে স্বরাষ্ট্রসচিবকে তলব
Published: 6th, March 2025 GMT
গুরুত্বপূর্ণ বা বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বিশেষ নিরাপত্তা প্রদানসংক্রান্ত প্ররক্ষা নির্দেশিকার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনিকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। তাঁকে ১৮ মার্চ আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দেন। এর আগে গুরুত্বপূর্ণ বা বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বিশেষ নিরাপত্তা প্রদানবিষয়ক প্ররক্ষা নির্দেশিকা–২০২৫ জারি করা হয়।
ওই নির্দেশিকার বিষয়টি আদালতের নজরে এনে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো.
পরে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে নিরাপত্তা প্ররক্ষা নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, এখানে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতিকে রেঞ্জ ডিআইজি, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ অন্যদের সঙ্গে একই রকমভাবে তুলনা করা হয়েছে। হাইকোর্টের বিচারকদেরকে সিনিয়র সচিব ও সচিবদের সঙ্গে রাখা হয়েছে।…একই বিষয়ে আপিল বিভাগ একটি রায় দিয়েছিলেন, সে মামলায় আপিল বিভাগ যে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (রাষ্ট্রীয় পদক্রম) ফিক্স (নির্ধারণ) করে দেওয়া হয়েছে এবং সর্বশেষ ২০২০ সালের যে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স আছে—সবকিছু লঙ্ঘন করে এটি জারি করা হয়েছে। এ জন্য ওই নোটিফিকেশন (নির্দেশিকাটি) আদালতের নজরে আনেন বলে জানান তিনি।
আদালতে ২০২০ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স দেখানো এবং আপিল বিভাগে নিষ্পত্তি হওয়া মামলার রায়ের কথা উল্লেখ করেছেন বলে জানান শিশির মনির। তিনি বলেন, ‘সেই মামলার রিভিউ আবেদন ২৭ এপ্রিল শুনানির জন্য রয়েছে। এই প্রেক্ষিতে কী করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ ধরনের নিরাপত্তা প্ররক্ষা নীতিমালা জারি করা হলো—এটা একটা বিস্ময়কর বিষয়। আইনকানুন ও ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সের তোয়াক্কা না করে এই ধরনের নীতিমালা জারি করে মূলত বাংলাদেশের সংবিধান এবং বিচার বিভাগের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছে। শুনানি নিয়ে আদালত সুয়োমোটো রুল ইস্যু করেছেন, কেন এই নির্দেশিকাকে অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না। সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনিকে ১৮ মার্চ আদালতে সশরীর হাজির হয়ে তাঁর কন্ডাক্ট, কী কারণে পত্রজারি করেছেন, তাঁর আচরণ ব্যাখ্যার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।’
জানতে চাইলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো. আব্দুল ওয়াহাব প্রথম আলোকে বলেন, কিসের ভিত্তিতে নির্দেশিকাটি জারি করা হয়েছে, সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনিকে ১৮ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে ৪ আইনজীবীকে বহিষ্কার
যশোরে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চার আইনজীবীকে জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর।
অভিযুক্ত আইনজীবীরা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি, রফিকুল ইসলাম এবং তরফদার আব্দুল মুকিত।
জেলা আইনজীবী সমিতি সূত্র জানায়, ওই চার আইনজীবীর মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক এক এনজিওর ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ করেন। ওই টাকা ফেরত দিতে তিনি অঙ্গীকার করে ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। কিন্তু পরবর্তীতে ওই চেক ডিজ অনার হয় এবং একই সাথে তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এ ঘটনায় মক্কেল আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন।
অন্যদিকে, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি একটি জমি ক্রয় করেন। কিন্তু ওই জমির মালিককে পূর্ণাঙ্গ টাকা না দিয়ে তালবাহানা করেন। শেষমেষ আট লাখ টাকা না দেওয়ায় জমির মালিক আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন।
এছাড়া, রফিকুল ইসলাম নিজে আইনজীবী হয়েও আরেক আইনজীবী নুরুল ইসলামকে নির্বাহী আদালতে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় নুরুল ইসলাম অভিযোগ দেন। অন্যদিকে, তরফদার আব্দুল মুকিত এক মক্কেলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কাজ করেননি। এছাড়া তিনি ওই মক্কেলের কাগজপত্র আটকে রেখে জিম্মি করে রাখেন। বাধ্য হয়ে তিনি মুকিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন সমিতিতে।
এসব অভিযোগ জেলা আইনজীবী সমিতি পৃথকভাবে তদন্ত করে। একই সাথে চার আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর।
তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার লিখিতভাবে তাদেরকে নোটিশ দিয়ে অবগত করা হবে।”
ঢাকা/রিটন/এস