নওগাঁয় আত্রাই নদের একটি পয়েন্টে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে। নদের পানি বেড়ে যাওয়ায় মান্দার চকরামপুর এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। ভাঙা স্থান দিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। এতে নওগাঁর নিচু এলাকা মান্দা, রানীনগর ও আত্রাই উপজেলায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নওগাঁ কার্যালয় সূত্র জানায়, ধামইরহাট উপজেলার শিমুলতলী পয়েন্টে নদের পানি বিপৎসীমার ১৪ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই পয়েন্টে বিপৎসীমা ৪৫ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার। এ ছাড়া মান্দার জোতবাজার পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ৪২ দশমিক ৩৮ সেন্টিমিটার। সেখানে আজ শনিবার সকাল ৯টায় পানির উচ্চতা মাপা হয় ৩১ দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার।

পাউবো নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়জুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, শিমুলতলী পয়েন্টে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত ১৫ ঘণ্টায় পানির উচ্চতা বেড়েছে ৫ সেন্টিমিটার। আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও উজান থেকে নেমে আসা পানির স্রোত থেকে অনুমান করা হচ্ছে, আগামী দু-তিন দিন পানি আরও কিছুটা বাড়বে।

নদতীরবর্তী এলাকার লোকজন বলছেন, আত্রাই নদে পানি বাড়লেই বাঁধ ভাঙে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ থাকলেও তা কোনো কাজে লাগছে না। গত ১০ বছরে ৬ বার বাঁধ ভেঙে মান্দা ও আত্রাই এলাকা প্লাবিত হয়েছে। অনেক আগে নির্মিত এই বাঁধ সংস্কার না করার কারণে দুর্ভোগ হচ্ছে বলে তাঁদের অভিযোগ।

নওগাঁ পাউবো সূত্রে জানা গেছে, বন্যার হাত থেকে রক্ষার জন্য ১৯৮০-৮১ সালের দিকে আত্রাই নদের দক্ষিণ তীর দিয়ে মান্দা উপজেলা থেকে আত্রাই হয়ে রানীনগর উপজেলা পর্যন্ত ৫৮ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ১৯৮৫ সালে নির্মাণকাজ শেষ হয়। যানবাহন চলাচলের জন্য ২০০৭ সালে এর ওপরে কার্পেটিং করা হয়। বাঁধের সামনে দিয়ে ১৯৭১ সালের আগে মান্দা উপজেলার নুরুল্লাবাদ ইউনিয়নে প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ একটি বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। সেই বাঁধও দুর্বল হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় লোকজন বলেন, বেড়িবাঁধ ঠিক রাখতে পারলে অন্তত এক হাজার পরিবার দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে পারবে। কিন্তু প্রতিবারই বেড়িবাঁধ ভাঙে আর সেই পানির তোড়ে পেছনের মূল বাঁধটিও ভেঙে যায়। গত বছর মান্দার চকরামপুর এলাকায় বেড়িবাঁধের দুই জায়গায় ভেঙে নুরুল্লাবাদ ইউনিয়নের চার কিলোমিটার এলাকার তিন জায়গায় মূল বাঁধ ভেঙে যায়। মূল বাঁধ মেরামত করা হলেও বেড়িবাঁধের ভাঙা স্থান মেরামত করা হয়নি।

আজ দুপুরে চকরামপুর এলাকায় বেড়িবাঁধের ভাঙনের কাছে গিয়ে দেখা যায়, প্রথম ভাঙনের পর পারাপারের জন্য যে বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়েছিল, তা–ও ভেসে গেছে। বর্তমানে চকরামপুর নামাপাড়া এলাকার প্রায় ১৫০টি পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

মান্দা উপজেলার নুরুল্লাবাদ গ্রামের বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বাঁধ ভেঙে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল ২০১৭ ও ২০২০ সালে। মান্দার নুরুল্লাবাদ, কালিকাপুর, প্রসাদপুর ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের অন্তত ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল।

নুরুল্লাবাদ ইউপির চেয়ারম্যান জায়দুর রহমান বলেন, গতকাল থেকে চকরামপুর এলাকায় বাঁধের ভাঙা স্থান দিয়ে পানি ঢুকছে। এতে বাড়িঘরসহ সদ্য লাগানো আমন ধানের চারা ডুবে যাওয়ায় কৃষকদের ক্ষতি হয়েছে।

নওগাঁ শহরের ছোট যমুনা নদীর পানিও বেড়েছে। জেলার অনেক জায়গায় নদ–নদীর পানি বাঁধ উপচে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। মান্দার নুরুল্লাবাদ, প্রসাদপুর ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের অন্তত ৩০টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: নদ র প ন ব পৎস ম দশম ক উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দরে বীরমুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম আর নেই

বন্দরে  বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম ওরফে মুক্তি কাসেম (৯৭) আর নেই। ইন্না লিল্লাহি.......  রাজিউন।

শনিবার (১৬ আগস্ট ) সকল মাড়ে ৬টায়   বার্ধক্য জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বন্দর উপজেলার  কামতালস্থ তার  নিজ বাস ভবনে বার্ধক্য জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

বীরমুক্তিযোদ্ধা মৃত্যুর খবর পেয়ে বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযুদ্ধা মরহুম আবুল কাশেমের কফিনে  শ্রদ্ধা নিবেদনের পর  রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।

গার্ড অব অনার প্রদানে উপস্থিত ছিলেন কামতাল তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) জহিরুল ইসলাম সহ সঙ্গীয় ফোর্স।

 রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মাননা প্রদানের পূর্বে ইউএনও মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের আত্মত্যাগের কারণে আজকে আমরা একটি স্বাধীন দেশে বসবাস করছি।

তিনি আরো বলেন, দিন দিন আমরা আমাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হারিয়ে ফেলছি।আমরা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এখানে এসেছি তাদের সম্মান জানাতে।

এসময় পরিবারের হাতে আর্থিক সহযোগিতা অর্থ  তুলে দেন তিনি। ওই সময় বন্দর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আবদুল লতিফ,মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

মরহুমের নামাজের জানাযা শেষে কামতাল ডাকসমাজ কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ