নওগাঁয় আত্রাই নদের পানি বেড়েছে, বন্যার আশঙ্কা
Published: 16th, August 2025 GMT
নওগাঁয় আত্রাই নদের একটি পয়েন্টে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে। নদের পানি বেড়ে যাওয়ায় মান্দার চকরামপুর এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। ভাঙা স্থান দিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। এতে নওগাঁর নিচু এলাকা মান্দা, রানীনগর ও আত্রাই উপজেলায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নওগাঁ কার্যালয় সূত্র জানায়, ধামইরহাট উপজেলার শিমুলতলী পয়েন্টে নদের পানি বিপৎসীমার ১৪ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই পয়েন্টে বিপৎসীমা ৪৫ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার। এ ছাড়া মান্দার জোতবাজার পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ৪২ দশমিক ৩৮ সেন্টিমিটার। সেখানে আজ শনিবার সকাল ৯টায় পানির উচ্চতা মাপা হয় ৩১ দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার।
পাউবো নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়জুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, শিমুলতলী পয়েন্টে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত ১৫ ঘণ্টায় পানির উচ্চতা বেড়েছে ৫ সেন্টিমিটার। আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও উজান থেকে নেমে আসা পানির স্রোত থেকে অনুমান করা হচ্ছে, আগামী দু-তিন দিন পানি আরও কিছুটা বাড়বে।
নদতীরবর্তী এলাকার লোকজন বলছেন, আত্রাই নদে পানি বাড়লেই বাঁধ ভাঙে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ থাকলেও তা কোনো কাজে লাগছে না। গত ১০ বছরে ৬ বার বাঁধ ভেঙে মান্দা ও আত্রাই এলাকা প্লাবিত হয়েছে। অনেক আগে নির্মিত এই বাঁধ সংস্কার না করার কারণে দুর্ভোগ হচ্ছে বলে তাঁদের অভিযোগ।
নওগাঁ পাউবো সূত্রে জানা গেছে, বন্যার হাত থেকে রক্ষার জন্য ১৯৮০-৮১ সালের দিকে আত্রাই নদের দক্ষিণ তীর দিয়ে মান্দা উপজেলা থেকে আত্রাই হয়ে রানীনগর উপজেলা পর্যন্ত ৫৮ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ১৯৮৫ সালে নির্মাণকাজ শেষ হয়। যানবাহন চলাচলের জন্য ২০০৭ সালে এর ওপরে কার্পেটিং করা হয়। বাঁধের সামনে দিয়ে ১৯৭১ সালের আগে মান্দা উপজেলার নুরুল্লাবাদ ইউনিয়নে প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ একটি বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। সেই বাঁধও দুর্বল হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় লোকজন বলেন, বেড়িবাঁধ ঠিক রাখতে পারলে অন্তত এক হাজার পরিবার দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে পারবে। কিন্তু প্রতিবারই বেড়িবাঁধ ভাঙে আর সেই পানির তোড়ে পেছনের মূল বাঁধটিও ভেঙে যায়। গত বছর মান্দার চকরামপুর এলাকায় বেড়িবাঁধের দুই জায়গায় ভেঙে নুরুল্লাবাদ ইউনিয়নের চার কিলোমিটার এলাকার তিন জায়গায় মূল বাঁধ ভেঙে যায়। মূল বাঁধ মেরামত করা হলেও বেড়িবাঁধের ভাঙা স্থান মেরামত করা হয়নি।
আজ দুপুরে চকরামপুর এলাকায় বেড়িবাঁধের ভাঙনের কাছে গিয়ে দেখা যায়, প্রথম ভাঙনের পর পারাপারের জন্য যে বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়েছিল, তা–ও ভেসে গেছে। বর্তমানে চকরামপুর নামাপাড়া এলাকার প্রায় ১৫০টি পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
মান্দা উপজেলার নুরুল্লাবাদ গ্রামের বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বাঁধ ভেঙে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল ২০১৭ ও ২০২০ সালে। মান্দার নুরুল্লাবাদ, কালিকাপুর, প্রসাদপুর ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের অন্তত ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল।
নুরুল্লাবাদ ইউপির চেয়ারম্যান জায়দুর রহমান বলেন, গতকাল থেকে চকরামপুর এলাকায় বাঁধের ভাঙা স্থান দিয়ে পানি ঢুকছে। এতে বাড়িঘরসহ সদ্য লাগানো আমন ধানের চারা ডুবে যাওয়ায় কৃষকদের ক্ষতি হয়েছে।
নওগাঁ শহরের ছোট যমুনা নদীর পানিও বেড়েছে। জেলার অনেক জায়গায় নদ–নদীর পানি বাঁধ উপচে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। মান্দার নুরুল্লাবাদ, প্রসাদপুর ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের অন্তত ৩০টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: নদ র প ন ব পৎস ম দশম ক উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা: বিদেশি শিক্ষার্থীদের ২২৪ আসন বরাদ্দ
২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তির জন্য এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সে বিদেশি শিক্ষার্থীদের আসন পুনর্বিন্যাস করেছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। এ বছর বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ২২৪টি আসন বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ ২২৪ আসনের মধ্যে এমবিবিএস কোর্সে ১৮৪ এবং বিডিএস কোর্সের জন্য ৪০টি আসন নির্ধারণ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২২৪ আসনের মধ্যে ১২৫টি সার্ক দেশগুলোর জন্য এবং ৯৯টি আসন নন-সার্ক দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত। সার্ক ও নন-সার্ক কোটা সম্পূর্ণ আলাদা রাখা হয়েছে। নন-সার্ক কোটা সংরক্ষিত আসনে কোনো সার্ক দেশের শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হবে না।
আরও পড়ুনঅস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস ফেলোশিপ, ৬ খাতে বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণের সুযোগ৪ ঘণ্টা আগেসার্ক দেশের আসন বণ্টনে ভারতের জন্য এমবিবিএসে ২২ ও বিডিএসে ২টি, পাকিস্তানের জন্য এমবিবিএসে ২১টি ও বিডিএসে ২টি, নেপালের জন্য এমবিবিএসে ১৯ ও বিডিএসে ৩টি, শ্রীলঙ্কার জন্য এমবিবিএসে ১৩ ও বিডিএসে ২টি, ভুটানের জন্য এমবিবিএসে ৩টি ও বিডিএসে ১টি, মালদ্বীপের জন্য এমবিবিএসে ৬টি ও বিডিএসে ১টি এবং আফগানিস্তানের জন্য এমবিবিএসে ৩টি ও বিডিএসে ১টি আসন বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে সার্ক দেশের জন্য এমবিবিএসে মোট ১১২ ও বিডিএসে ১৩, অর্থাৎ সর্বমোট ১২৫টি আসন বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুনমেডিকেল-ডেন্টালে ভর্তি পরীক্ষা : দেখে নিন আবেদনের নিয়মাবলি১৩ নভেম্বর ২০২৫নন-সার্ক দেশের আসন বণ্টনে সার্ক দেশের মতো একই বৃত্তির আওতায় মিয়ানমারের জন্য এমবিবিএসে ৫টি ও বিডিএসে ২টি, ফিলিস্তিনের জন্য এমবিবিএসে ১৮ ও বিডিএসে ৩টি এবং অন্য সব দেশের জন্য এমবিবিএসে ৪৯ ও বিডিএসে ২২টি আসন বরাদ্দ রয়েছে। সব মিলিয়ে নন-সার্ক দেশের জন্য এমবিবিএসে ৭২ ও বিডিএসে ২৭টি, অর্থাৎ মোট ৯৯টি আসন রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুননিউজিল্যান্ড আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের যে নতুন সুযোগ দিল ১৬ নভেম্বর ২০২৫