মুক্তিপণ দিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি জহিরুলের
Published: 16th, August 2025 GMT
নেত্রকোনায় জহিরুল ইসলাম (৩৩) নামে এক যুবককে আটকে রেখে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে দুর্বৃত্তরা। চাহিদা অনুযায়ী মুক্তিপণ দেওয়ার পরও তাকে হত্যা করে লাশ ফেলে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সদর উপজেলার রঙ্গের বাজার এলাকা থেকে জহিরুলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে, বুধবার (১৩ আগস্ট) সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন তিনি।
নিহত জহিরুল জেলার কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটী ইউনিয়নের দক্ষিণ কান্দাপাড়া গ্রামের মৃত আরজ আলী খানের ছেলে। তিনি একসময় কিশোরগঞ্জে একটি ইট ভাটায় কাজ করতেন। গত ২-৩ মাস যাবত এলাকায় বসবাস করছিলেন।
আরো পড়ুন:
নেত্রকোনায় বিকাশকর্মী হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি
এবার সাংবাদিক তুহিনের হত্যাস্থলে শরবত বিক্রেতাকে ছুরিকাঘাত
এদিকে, জহিরুলের লাশ উদ্ধার হয়েছে সদর থানা এলাকা থেকে। তার বাড়ি কলমাকান্দা থানায়। আর তাকে আটকে রেখে হত্যার ঘটনাটি ঘটেছে দুর্গাপুর থানা এলাকায়। সেজন্য এ ঘটনায় তিন থানার পুলিশ বিপাকে পড়েছে। মামলা কোন থানায় হবে, তা এখনো নিশ্চিত হয়নি।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লুৎফর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, “লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল যেহেতু দুর্গাপুর থানা এলাকায়, তাই সেখানেই মামলা হওয়ার কথা। তবে বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখনো এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।”
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, “আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, দুর্গাপুর এলাকায় কয়েকজনের সঙ্গে মিলে জুয়া খেলতেন জহিরুল। জুয়া খেলা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তাকে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল।”
তিনি বলেন, “ধারণা করা হচ্ছে- মুক্তিপণ দিতে দেরি করায় জহিরুলকে নির্যাতন করে দুর্বৃত্তরা। এতে জহিরুল অসুস্থ হয়ে যায়। পরে হয়তো কোনো গাড়িতে তুলে জেলা সদরে পাঠানো হচ্ছিল। পথে রঙ্গের রাজারে জহিরুলের মৃত্য হলে তাকে ফেলে দিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হবে।”
নিহত জহিরুলের চাচাতো ভাই কৈলাটী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আনোয়ার হোসেন খান বলেন, “গত বুধবার সকাল ১০টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় জহিরুল। রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে অপরিচিত নাম্বার থেকে কল করে আমাদের জানায় যে, জহিরুল তাদের হাতে আটক আছে। তাকে জীবিত ফেরত চাইলে ৬০ হাজার টাকা দিতে হবে, এক টাকা কম দিলেও হবে না। অন্যথায় জহিরুলকে মেরে ফেলা হবে।”
তিনি বলেন, “জহিরুলের দরিদ্র পরিবারের পক্ষে দ্রুত টাকা জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছিল না। নানা জায়গা থেকে টাকা জোগাড় করতে সময় লেগে যায়। এদিকে দুর্বৃত্তরা মোবাইলে হুমকি দিয়েই যাচ্ছিল। পরে শুক্রবার দুপুরে তাদের দেওয়া মোবাইল ব্যাংকিং নাম্বারে ৬০ হাজার পাঠানো হয়। টাকা পাঠানোর পর কল দেওয়া হলেও কেউ আর রিসিভ করেনি।”
তিনি আরো বলেন, “সন্ধ্যায় খবর পাই- সদরের রঙ্গের বাজারে জহিরুলের লাশ পাওয়া গেছে। টাকা দিতে দেরি হওয়ায় দুর্বৃত্তরা নির্যাতন করে তাকে হত্যা করেছে। তার শরীরের বিভিন্ন অংশে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে যথাযথ বিচার দাবি করছি।”
নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ বলেন, “জহিরুলের লাশ সদর থানা এলাকায় পাওয়া গেলেও এর ঘটনাস্থল দুর্গাপুরে। আর তার বাড়ি কলমাকান্দায়। মুক্তিপণের জন্য আটক রেখে নির্যাতনে অসুস্থ হওয়ার পর হয়তো তাকে সদরে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসছিল। মারা যাওয়ায় ফেলে রেখে চলে গেছে। লাশ কলমাকান্দা থানা পুলিশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। বাদীর দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হবে।”
ঢাকা/ইবাদ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য মরদ হ দ র ব ত তর কলম ক ন দ এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
নিজের খেলার উন্নতির জন্য লেভেল-২ কোচিং কোর্স কমপ্লিট আকবরের
যুব বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক আকবর আলীকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। বাংলাদেশ ‘এ’ দল গিয়েছে অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট খেলতে। এর আগে তাদের ক্যাম্প হয়েছে চট্টগ্রামে। সঙ্গে বিসিবির হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের ক্যাম্পও চলেছে। কোথাও ছিলেন না আকবর।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের ব্যক্তিগত ছবি পোস্ট করে আকবর ধারনা দিয়েছিলেন, স্ত্রীকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। তাই ক্রিকেট থেকে দূরে। তবে ক্রিকেট থেকে তিনি দূরে ছিলেন না।
ফাঁকা সময়ে নিজের ক্রিকেট দক্ষতা বাড়ানো এবং খেলার গভীরতা সম্পর্কে ধারণার জন্য ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) অধীনে লেভেল-২ কোচিং সার্টিফিকেশন সম্পন্ন করেছেন আকবর। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আকবর এই খবর নিশ্চিত করেছেন।
লেভেল-২ সার্টিফিকেটের ছবি পোস্ট করে আকবর লিখেছেন, ‘‘আমি সবসময়ই খুব ছোটবেলা থেকেই এটা করতে চেয়েছিলাম। কারণ আমি বিশ্বাস করি এটি আমাকে একজন খেলোয়াড় হিসেবে এবং একজন মানুষ হিসেবেও বেড়ে উঠতে সাহায্য করবে। এই কোর্সটি সম্পন্ন করার জন্য বিসিবি এবং ইসিবির সহযোগিতার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।’’
আগামী মাসে শুরু হবে জাতীয় ক্রিকেট লিগ টি-টোয়েন্টি আসর। এর আগে ক্রিকেটারদের ফিটনেস টেস্ট হবে। ২২টি প্রথম শ্রেণি, ৯২টি লিস্ট ‘এ’ ও ৬৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা আকবরকে দেশে ফিরতে হবে শিগগিরিই।
ঢাকা/ইয়াসিন