পরাজিত শক্তির যে কোনো প্রচেষ্টা দমন করা হবে: উপদেষ্টা আসিফ
Published: 6th, March 2025 GMT
কুষ্টিয়ায় আবরার ফাহাদ স্টেডিয়াম ও কুমারখালীতে তাঁর নামে মসজিদের সম্প্রসারণ কাজ উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার উপস্থিতিতে উদ্বোধন করেন আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ।
পরে আসিফ মাহমুদ বলেন, পরাজিত ফ্যাসিবাদীরা দোসরদের নিয়ে মানুষের জীবনে বিঘ্ন ঘটানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ছোটখাটো ইস্যুতে তারা জনগণকে একে অপরের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেওয়ার যড়যন্ত্র করছে। অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরিতে উগ্রবাদীদের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এ ধরনের যে কোনো প্রচেষ্টা কঠোর হাতে দমন করা হবে।
তিনি বলেন, আবরার ফাহাদ শুধু একটা নাম না, তিনি আমাদের আগ্রাসনবিরোধী লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা। তাঁর আত্মত্যাগের পথ ধরেই এসেছে জুলাই গণঅভ্যুত্থান। এ গণঅভ্যুত্থানে তরুণরা জীবন দেওয়ার প্রেরণা পেয়েছে আবরার থেকে। এ জন্য আগ্রাসনবিরোধী প্রতিটি লড়াইয়ে অনুপ্রেরণা হিসেবে থাকবেন শহীদ আবরার ফাহাদ।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আবরারের মা রোকেয়া খাতুন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব রেজাউল মাকছুদ জায়েদী, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব আমিনুল ইসলাম, কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে শহীদ আবরার ফাহাদ জামে মসজিদের সম্প্রসারণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙা এলাকায় প্রায় ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে এ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। পরে শহীদ আবরার ফাহাদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন ও কবর জিয়ারত করেন তিনি।
২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার চকবাজার থানায় মামলা করেন তাঁর বাবা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আবর র ফ হ দ
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মির্জা ফখরুলের
গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নে দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গণসংযোগের সময় দেওয়া বক্তব্যে এই আহ্বান রাখেন তিনি।
শেখ হাসিনার শাসন আমলে বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। গুম, খুন, ভিত্তিহীন মামলা, লুটপাট, টাকা পাচার, বাকস্বাধীনতা হরণ ও ভোট চুরিসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
জুলাই গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনের বিরুদ্ধে আরেক মামলা
হাসিনা-রেহানাসহ ২২ জনের গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত প্রতিবেদন ১২ মে
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের নেতাকর্মীদের গুম করা হয়েছে। লাখ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের ঘরে থাকতে দেননি আপনি। আমরা তো কোথাও পালিয়ে যাইনি। আদালতে মিথ্যা মামলা আইনের মাধ্যমে ফেইস (মোকাবিলা) করেছি। উকিল ধরে জামিন নিয়েছি। আপনি (শেখ হাসিনা) পালিয়ে আছেন কেন? আপনিও মামলা লড়েন। আপনি দেশে এসে দাড়ান না দেখি।”
জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা অনেকে মনে করেন শেখ হাসিনা আবারো দেশে ফিরে আসবেন। তিনি তো ১৫ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান একজন বিখ্যাত মানুষ ছিলেন। তার তো দেশ থেকে পালানোর কথা ছিল না। তিনি পালালেন কেন? কারণ তিনি একজন ডাইনি ছিলেন। জনগণের ওপর এমন নির্যাতন করেছেন যে, তিনি পালাতে বাধ্য হয়েছেন। জনগণ যদি সেদিন তাকে পেত, তাহলে ছিঁড়ে খেত।”
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, “হাসিনা দেশে ফিরে রাজনীতি করলে আমাদের কিছু করতে হবে না, জনগণই তাকে দেখে নেবে।”
আওয়ামী লীগের শাসনামলের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপির নেতাকর্মীরা যেন আওয়ামী লীগের মতো অন্যায় না করে; এতে মানুষ ভালোবাসবে না। দলের কোনো নেতাকর্মীরা অন্যায় করলে যেন জেলার নেতারা তাদের শক্ত হাতে দমন করেন; তারা যেন অন্যায়কারীদের পুলিশের হাতে তুলে দেন। তাই অপকর্ম বন্ধ করুন, না হলে আওয়ামী লীগের মতো অবস্থা হবে।”
ত্রোদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দৃষ্টি রেখে জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। মির্জা ফখরুলসহ দলটির শীর্ষ নেতারা সভা-সমাবেশ করছেন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা, না রাখা নিয়ে ব্যাপক মতপার্থক্য রয়েছে; সেই সঙ্গে আইনি ঝক্কিও সামনে আসছে।
গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একাধিক মামলায় আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে। এ ছাড়া কয়েক শত ফৌজদারি মামলায় তিনি আসামি। অনেক মামলায় তাকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। তবে ভারতের আশ্রয়ে থাকা শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর কোনো নিশ্চয়তা এখনো তৈরি হয়নি।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ছোট বোন রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। সেদেশে উচ্চনিরাপত্তা শৃঙ্খলে বসবাস করছেন বলে আন্তর্জাতিক সাংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়ে থাকে। সেখান থেকে দেশে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে অনলাইনে তার কথোপকথনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যা নিয়ে অস্বস্তির কথা ভারতকে জানিয়ে রেখে অন্তর্বর্তী সরকার।
ঢাকা/মঈনুদ্দীন/মাসুদ