ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ঐতিহ্যবাহী মসজিদ আংশিক জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ
Published: 8th, March 2025 GMT
ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে অধিকৃত পশ্চিম তীরের নাবলুস শহরে ঐতিহাসিক একটি মসজিদ আংশিক জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা। তাঁরা বলেছেন, গতকাল শুক্রবার অভিযান চালানোর সময় ইসরায়েলি সেনারা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।
অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি ঘটেছে নাবলুসের ওল্ড সিটির ঐতিহ্যবাহী আল–নাসর মসজিদে। এএফপিটিভিতে এ ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, আংশিক পুড়ে যাওয়া মসজিদের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখছেন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুনগাজা ও লেবানন থেকে সম্পদ লুটে বিক্রি করছেন ইসরায়েলি সেনারা২২ ঘণ্টা আগেএএফপিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, গতকাল দিবাগত রাত দুইটা থেকে সকাল ছয়টা পর্যন্ত ইসরায়েলি সেনারা নাবলুসে অভিযান চালান। স্থানীয় ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, ছয়টি মসজিদ ঘিরে অভিযান চালানো হয়। এমন এক সময় এ মসজিদে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হলো, যখন মুসলিমরা পবিত্র রমজান মাসের প্রথম শুক্রবার পালন করলেন।
পশ্চিম তীরের উত্তরাঞ্চলীয় ওই শহরে অভিযানের বিষয়ে জানতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল এএফপি। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
মসজিদে ইসরায়েলি দখলদারদের এমন আক্রমণ চালানোর সমালোচনা করেছেন নাবলুসের এনডাউমেন্ট পরিচালক শেখ নাসের আল–সালমান।
আরও পড়ুনহামাসের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সরাসরি আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র, কী চায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠনটি০৭ মার্চ ২০২৫এক বিবৃতিতে শেখ নাসের অভিযোগ করেন, ইসলাম ধর্মের পবিত্র স্থাপনা আর মসজিদগুলো অপবিত্র করার জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছে ইসরায়েল।
আল–নাসর মসজিদ আংশিক পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে নাবলুস পৌর কর্তৃপক্ষ। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এটি একটি ঐতিহাসিক মসজিদ হিসেবে বিবেচিত। ওল্ড সিটির গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক জায়গা এটি।
নাবলুসের পৌরমেয়র হুসাম শাখশির অভিযোগ জানিয়ে বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী অগ্নিনির্বাপণ কর্মীদের ওই মসজিদে যেতে বাধা দিয়েছে। এ কারণে তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেননি।
আরও পড়ুনট্রাম্পের হুমকি নেতানিয়াহুকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনে উৎসাহিত করছে: হামাসের অভিযোগ০৬ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ন বল স মসজ দ
এছাড়াও পড়ুন:
তেহরানে আটকা ইন্টার মিলানের স্ট্রাইকার তারেমি
চলমান ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের প্রভাবে জটিল হয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক যাতায়াত। এরই মধ্যে বড় এক ভোগান্তির শিকার হয়েছেন ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলানের নতুন স্ট্রাইকার ও ইরানি ফুটবলার মেহদি তারেমি। তিনি তেহরানে আটকা পড়েছেন, ফ্লাইট জটিলতায় ইতালি পৌঁছাতে পারছেন না।
বার্তা সংস্থা এএফপি শনিবার (১৫ জুন) জানিয়েছে, ইরানে অবস্থানরত মেহেদি তারেমি বর্তমান উত্তেজনার কারণে দেশে আটকে পড়েছেন এবং ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের সূচনালগ্নে দলের সঙ্গে যোগ দিতে পারছেন না।
৩২ বছর বয়সি এই ইরানি ফরোয়ার্ড গত সপ্তাহে জাতীয় দলের হয়ে খেলতে তেহরানে ছিলেন। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে দেশের হয়ে উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয়ে একটি গোল করেন তিনি। ম্যাচ শেষে ইউরোপে ফেরার কথা থাকলেও মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ এবং বিমান চলাচলে সীমাবদ্ধতার কারণে তেহরান থেকে কোনো ফ্লাইট পাচ্ছেন না তারেমি।
আরো পড়ুন:
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে হোয়াইট হাউস কী ভাবছে?
ইরান হরমুজ প্রণালি বন্ধ করলে কী কী ঘটতে পারে?
এএফপি জানায়, তারেমির লস অ্যাঞ্জেলেসে ইন্টার মিলানের ক্লাব বিশ্বকাপ প্রস্তুতিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার অনুপস্থিতি এখন দলের জন্য বড় এক ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত কেবল রাজনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রেই নয়, এর প্রভাব পড়ছে খেলাধুলা, আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ও বৈশ্বিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানেও। তারেমির মতো একজন আন্তর্জাতিক তারকা যেখানে আটকে পড়েন, সেখানে বিশ্ববাসীর ভ্রমণ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ আরো বেড়ে যায়।
এই মুহূর্তে ইন্টার মিলান বা ইরানি ফুটবল ফেডারেশনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না এলেও ক্লাবের ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, তারা তারেমির পরিস্থিতির ওপর নিবিড় নজর রাখছে এবং যত দ্রুত সম্ভব তাকে যুক্তরাষ্ট্রে আনার জন্য কাজ করছে।
এটি শুধু একজন ফুটবলারের আটকে পড়ার গল্প নয়; এটি মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার একটি বাস্তব ও মানবিক সংকটের প্রতিফলন।
ঢাকা/রাসেল