সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। এতে ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় এ ইউনিটে (বিজ্ঞান) সর্বোচ্চ নম্বর উঠেছে ৯২ দশমিক ৮। গতকাল রোববার সন্ধ্যার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।

ভর্তি কমিটির সদস্যসচিব মোহম্মদ রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ফলাফল প্রত্যেক ভর্তি–ইচ্ছুক পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন করা মুঠোফোন নম্বরে খুদে বার্তায় (মেসেজ) মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। তা ছাড়া শিক্ষার্থীরা ওয়েবসাইট থেকে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল ডাউনলোড করতে পারবেন। তবে পাসের হার সম্পর্কে কোনো তথ্য সরবরাহ করেনি ভর্তি কমিটি।

অন্যদিকে, ফলাফল প্রকাশের তালিকায় একই রোল নম্বর একাধিকবার থাকায় ভর্তি–ইচ্ছুকদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। এ ইউনিটের (বিজ্ঞান) পাস করা প্রার্থীদের তালিকার ২১০৫৫৪৯ রোল নম্বরটি ও পাসের র‍্যাঙ্ক ৪৮৭০ দুবার করে রয়েছে। এ রকম অন্তত দশের অধিক রোল নম্বর ও র‍্যাঙ্ক তালিকায় দেখা গেছে। এটা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে শিক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকদের মধ্যে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

শাবিপ্রবির ফলাফলসংক্রান্ত একটি পোস্টে একজন ভর্তি–ইচ্ছুকদের অভিভাবক সঞ্জয় সরকার মন্তব্য করেন, ‘ভাই একটু দেখবেন ২১২৫০২৬ এ রোল নম্বরটা দুবার দেওয়া কিন্তু আমার ভাইয়ের রোল নম্বর ২১২৫০২৭, এমনটা কেন হলো?

আরও পড়ুনগুচ্ছে এবার ১৯ বিশ্ববিদ্যালয়, আবেদন শুরু, আছে দ্বিতীয়বারের সুযোগ, জেনে নিন বিস্তারিত০৫ মার্চ ২০২৫

এ ছাড়া ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই ভর্তি–ইচ্ছুকরা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারছিলেন না বলে জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিহাব উদ্দিন নামের একজন লিখেছেন, ‘সার্ভার (ওয়েবসাইট) ডাউন ভাই, সন্ধ্যা ৭টা থেকে চেষ্টা করছি, ৯টা পর্যন্তও কিন্তু ঢুকতে পারিনি।’

এ বিষয়ে ভর্তি কমিটির সদস্যসচিব মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম রাত সোয়া ১০টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি মূল র‍্যাঙ্কিং তালিকায় কোনো পরিবর্তন আনবে না। এটি আসলে একটি ধরনের টাইপো (টাইপিং ভুল)। সংশোধন করে এখনই আপলোড করা হচ্ছে।’

আরও পড়ুনতুরস্কে বিলকেন্ট ইউনিভার্সিটির বৃত্তি, আইইএলটিএসে ৬.

৫ হলে আবেদন ০৮ মার্চ ২০২৫

প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, এ-১ ইউনিটের বিজ্ঞান শাখায় সর্বোচ্চ প্রাপ্ত নম্বর ৯২ দশমিক ৮, বি ইউনিটের বিজ্ঞান শাখায় সর্বোচ্চ ৮১ দশমিক ৬, মানবিকে ৮৫ ও বাণিজ্যে ৭৫। এ ছাড়া এ-২ আর্কিটেকচার বিভাগে ১৩০ নম্বরের মধ্যে সর্বোচ্চ প্রাপ্ত নম্বর ১০১ দশমিক ২০।

প্রসঙ্গত, চার বছর পর গুচ্ছ থেকে বের হয়ে এ বছর শাবিপ্রবি আগের মতো নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিয়েছে। দেশের পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

আরও পড়ুন৪৮ জেলায় ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ, এইচএসসি পাস ১৮-৩৫ বয়সীর সুযোগ, ভাতা দৈনিক ২০০০৬ মার্চ ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ক ষ র র ফল ফল ইউন ট প রথম দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

বিজিবিতে চাকরি পেলেন ফেলানীর ছোট ভাই

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহত ফেলানী খাতুনের ছোট ভাই আরফান হোসেন (২১) বিজিবির সিপাহি পদে চাকরি পেয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাটে ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। এ সময় আরফান হোসেনের বাবা মো. নুরুল ইসলামও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর

কক্সবাজারে ৮০ শতাংশ মাদক আসে সাগরপথে: বিজিবি 

এর আগে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৫ বিজিবি আয়োজিত সিপাহি নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হন আরফান হোসেন।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম বলেন, ‘‘বিজিবি সর্বদা ফেলানীর পরিবারের পাশে আছে। ফেলানীর ছোট ভাই বিজিবি নিয়োগ পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণকেন্দ্রে গিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ শুরু করবেন। আমরা আশা করি, প্রশিক্ষণ শেষ করে তিনি একজন যোগ্য বিজিবি সদস্য হিসেবে দেশমাতৃকার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘সীমান্তে ফেলানী হত্যার মতো নৃশংস ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে, সে বিষয়ে বিজিবি সর্বদা সীমান্তে অত্যন্ত সতর্ক ও সচেষ্ট রয়েছে।’’

আরফান হোসেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনটারী গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা নুর ইসলাম দিনমজুর ও মা জাহানারা বেগম গৃহিণী। পরিবারের অন্য দুই ভাইয়ের মধ্যে জাহান উদ্দিন স্নাতক পড়ছেন এবং আক্কাস আলী পড়ছেন এইচএসসিতে। দুই বোন মালেকা খাতুন ও কাজলী আক্তারের বিয়ে হয়েছে।

আরফান হোসেন বলেন, ‘‘ফেলানী হত্যার পর সারা দেশের মানুষ যেভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিল, তখন থেকে ইচ্ছে ছিল; বিজিবিতে চাকরি করব। আজ সেই স্বপ্ন পূর্ণ হলো। আমি দেশের মানুষের জন্য কাজ করব।’’

ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, ‘‘ভারত থেকে ফেরার পথে আমার নাবালিকা মেয়েকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখে বিএসএফ। সেই দৃশ্য আজও ভুলতে পারিনি। তবে, দেশবাসী আর বিজিবি সব সময় আমাদের পাশে ছিল। আজ আমার ছেলে মেধা ও যোগ্যতায় বিজিবিতে সুযোগ পেয়েছে। এটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি।’’

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় কিশোরী ফেলানী। তার নিথর দেহ কাঁটাতারের বেড়ায় দীর্ঘ সাড়ে চার ঘণ্টা ঝুলে ছিল। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশে নিন্দার ঝড় উঠে।

ঢাকা/সৈকত/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ