গাইবান্ধার চার লেন সড়ক: পথের কাঁটা বিদ্যুতের ৪৪ খুঁটি
Published: 10th, March 2025 GMT
বিদ্যুৎ বিভাগকে টাকা পরিশোধের সাত বছর পেরিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু গাইবান্ধা শহরের ব্যস্ততম ডিবি রোডের উত্তর পাশের ৪৪টি বিদ্যুতের খুঁটি এখনো সড়ানো হয়নি। খুঁটিগুলো যানবাহন চালক ও পথচারীদের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে, দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েছে। বেড়েছে মানুষের দুর্ভোগ। তবে বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, গত বছর ৪৪টি খুঁটির পাশে নতুন খুঁটি বসানো হয়েছে। সেগুলোতে তার সংযোগ দিয়ে পুরাতন খুঁটি অপসারণ করা হবে।
গাইবান্ধা সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গাইবান্ধা শহরের পূর্ব দিকে বড় মসজিদ থেকে পশ্চিমে পুলিশ সুপার কার্যালয় পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার চার লেন সড়ক নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ১১৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে সড়ক নির্মাণে ৬ কোটি ও জমি অধিগ্রহণের জন্য ১১১ কোটি টাকা। ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্স এই কাজের দায়িত্ব পায়। ২০২১ সালের ৩০ জুনের মধ্যে চার লেন সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা ছিল। সওজের বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করতে পারেনি। ফলে একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ শেষ করার সময় বাড়ানো হয়। কিছু কাজ অসমাপ্ত রেখে ২০২২ সালের প্রথম দিকে চার লেন সড়ক নির্মাণকাজ শেষ হয়।
সড়ক প্রশস্ত হওয়ায় দুই পাশের বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর প্রয়োজন দেখা দেয়। এ জন্য ২০১৯ সালের প্রথম দিকে বিদ্যুৎ বিভাগকে ৮৩ লাখ টাকা পরিশোধ করে সড়ক বিভাগ। টাকা পরিশোধের ৭ বছর পেরিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু ৪৪টি বৈদ্যুতিক খুঁটি এখনো সরানো হয়নি। শহরের পশ্চিমে পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে পূর্বে রেলগেট পর্যন্ত এসব খুঁটিতে বৈদ্যুৎ–সংযোগ রয়েছে। একই অংশের দক্ষিণ পাশে নকশাবহির্ভূত ৪৯টি খুঁটি স্থাপিত হয়। সেগুলোর কারণেও যানবাহন ও পথচারীদের চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। অবশ্য সড়কের বাকি অংশের দুই পাশের খুঁটি সরানো হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শহরের রেলগেট থেকে পশ্চিম অংশে ফায়ার সার্ভিস, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার কার্যালয়ের মতো অসংখ্য গুরত্বপুর্ণ অফিস-আদালত রয়েছে। এ জন্য পশ্চিম অংশ সব সময় ব্যস্ত থাকে। এ অংশের খুঁটি সড়াতে বিলম্ব হওয়ায় দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। সড়কটিও সংকুচিত হয়েছে। গাইবান্ধা শহরের পলাশপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী জিসান মাহমুদ বলেন, ‘উত্তর পাশের সড়ক থেকে খুঁটি না সড়ানোর কারণে সংলগ্ন ব্যবসায়ীরা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন। যেখানে খুঁটি আছে, সেখানে কখনো সড়ক দিয়ে, কখনো দোকানপাট ঘেঁষে যানবাহন চলাচল করছে। ফলে সার্বক্ষণিকভাবে আমাদেরকে সর্তক থাকতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ–ব্যবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।’
সড়কের দক্ষিণ পাশেও নকশাবহির্ভূতভাবে মূল সড়ক ঘেঁষে খুঁটি বসানো হয়েছে হলে জানান ফকিরপাড়া এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ নুরুল আলম। তিনি বলেন, এসব খুঁটির দক্ষিণ পাশ দিয়ে পাকা নর্দমা নির্মিত হয়েছে। আগে থেকেই নর্দমার দক্ষিণ পাশ দিয়ে খুঁটি ছিল। অথচ নর্দমার দক্ষিণ পাশে খুঁটি বসানোর কথা। অর্থাৎ খুঁটি ও মূল সড়কের মাঝখানে নর্দমা হওয়ার কথা। এসব খুঁটির কারণে ফুটপাত দিয়ে চলাচল করতে ভয় লাগছে।
বিষয়টি নজরে আনা হলে গাইবান্ধা বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ-২–এর (নেসকো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো.
বিদ্যুতের এসব খুঁটি সরাতে দাবি জানিয়ে আসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শহরের কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনালের ট্রাকচালক বাবলু মিয়া বলেন, ‘এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শহরে চার লেনবিশিষ্ট সড়ক নির্মাণ করা হয়। কিন্তু মূল সড়ক ঘেঁষে খুঁটি থাকায় যানবাহন চলাচল ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।’
এ বিষয়ে গাইবান্ধা সওজের বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিয়াস কুমার সেন প্রথম আলোকে বলেন, সড়ক থেকে বৈদ্যুতিক খুঁটি সরানোর জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে বারবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সড়ক ন র ম ণ চ র ল ন সড়ক এসব খ শহর র
এছাড়াও পড়ুন:
হিমাগারে কেজিপ্রতি আলুর ভাড়া সাড়ে ৫ টাকা
রাজশাহীতে আলু চাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে হিমাগার মালিকদের দ্বন্দ্বের অবসান হয়েছে। সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে সমঝোতায় বসে দুইপক্ষ আলুর ভাড়া কেজিপ্রতি সাড়ে ৫ টাকা নির্ধারণ করেছে।
সোমবার (১৬ জুন) রাজশাহী আর্মি ক্যাম্পে দুপুর ১২টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত তিন পক্ষের মধ্যে বৈঠক চলে। এ বৈঠক শেষে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সবাই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান। সেখানে ভাড়া নির্ধারণ করে চুক্তি করে রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলু চাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি। মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচারের সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠকে রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফজলুর রহমান, রাজশাহী জেলা আলু চাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি আহাদ আলী, সহসভাপতি আলম আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
পাম্পে গাড়ির চাপ, গণপরিবহনে বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ
সড়কে শিক্ষার্থীদের ব্যাঙ্গ চিত্র প্রদর্শন
বৈঠক শেষে সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা জানান, দুপক্ষের চুক্তি অনুযায়ী এখন থেকে আলুর ভাড়া নেয়া হবে কেজিপ্রতি সাড়ে ৫ টাকা। প্রতি কেজির জন্য শ্রমিক খরচ নেয়া যাবে ৫০ পয়সা। আগাম বুকিংয়ে যেসব আলু রাখা হয়েছে, সেগুলো আগের চুক্তি অনুযায়ীই ভাড়া দিতে হবে। আগাম বুকিংয়ের ক্ষেত্রেও কেজিপ্রতি ৫০ পয়সা শ্রমিক খরচ নেয়া যাবে।
প্রতি কেজি আলুর সংরক্ষণের জন্য আগে কৃষকদের ৪ টাকা ভাড়া দিতে হতো। এবার আলু ওঠার সময় ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। এখন আলু বের করতে গেলে কেজিপ্রতি ৮ টাকা করে নিতে শুরু করে হিমাগারগুলো। এর প্রতিবাদে তারা বিক্ষোভ করে আসছিলেন।
ঢাকা/কেয়া/বকুল