সন্তান হত্যার বিচারের আগে মা হিসেবে কোনো নির্বাচন আশা করব না
Published: 10th, March 2025 GMT
শহীদ পরিবার এবং আহতদের নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ইফতার অনুষ্ঠানে আশুলিয়ায় শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহিনা বেগম বলেছেন, ‘আমার সন্তানকে মারার উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। আমার সন্তান হত্যার বিচারের আগে কোনো নির্বাচন মা হিসেবে আশা করব না।’
আজ সোমবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শহীদ পরিবার এবং আহতদের নিয়ে এনসিপির ইফতার মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন।
শাহিনা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেকে মেরে লাশ ভ্যানে স্তূপ করে রেখে আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। আমরা কীভাবে মেনে নিতে পারি, কত কষ্ট করে সন্তানকে বড় করেছি। সেই সন্তানকে কুকুর-বিড়ালের মত কীভাবে মারা হলো। আমার সন্তানকে কেন মারা হলো, এর উত্তর কে দেবে? প্রস্তুত থাকুন।’
তিনি বলেন, ‘আমার সন্তানের বিচারের জন্য আমি সবজায়গায় যাব, আমি বসে থাকব না। হাসিনা সারাজীবন স্বজন হারানোর বক্তব্য দিয়ে এসেছে। তার জন্য এত লোককে ফাঁসি দিয়েছে। আমাদের এত মায়ের আর্তনাদ- প্রত্যেক সন্তানের জন্য যদি একবার করে ফাঁসি দেওয়া হয়, তাহলে হাসিনা সরকার এবং তার দোসরদের কতবার ফাঁসি দেওয়া দরকার, আমার প্রশ্ন।’
শহীদ জাবির ইবরাহীমের বাবা নওশের আলী বলেন, ‘শহীদ এবং আহতদের বিচার আমরা আগে চাই। বিচারের আগে কোনো রকম নির্বাচন চাই না। আগে বিচার হবে তারপর সংস্কার হবে। সংস্কার না হলে আরেকটা চব্বিশ অপেক্ষা করছে। আমরা আর বাংলাদেশে চব্বিশ, নব্বই, একাত্তরের রক্তক্ষরণ চাই না।’
অনুষ্ঠানে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশে আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ড.
এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেন, ‘যারা আহত যোদ্ধাদের রক্তের উপরে, শহীদদের জীবনের উপরে এই নতুন বাংলাদেশে কথা বলতে পারছে তারা যদি বিচারের আগে নির্বাচনের কথা বলেন তাদের মুখের উপরে বলবেন, যে রক্তের উপর দাঁড়িয়ে নির্বাচনের কথা বল সেই রক্তের বিচার না চেয়ে বেঈমানের মত নির্বাচনের কথা বলতে লজ্জা লাগে না?’
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের জায়গা থেকে নির্বাচন চাই, কিন্তু যে খুনি হাসিনার হুকুমে এতগুলো প্রাণ গেল সেই খুনি হাসিনার বিচার হওয়ার আগে কোন মুখে শুধু নির্বাচনের কথা বলেন?’
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, ‘খুনি হাসিনার বিচারের দাবিতে আমরা একমত। আমরা অলরেডি সবাই শহীদ। আমাদের বুকে আর ভয় নাই। আমরা আবার ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নামব। আওয়ামী লীগের খুনি মন্ত্রী, ব্যবসায়ী গোষ্ঠী যারা হাসিনা রেজিমকে টিকিয়ে রেখেছিলেন, বুদ্ধিজীবী-শিক্ষক যারা খুন-গুম-নির্যাতনের মাধ্যমে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিলেন, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘যে সংবিধানের কারণে আমাদের এত ভাই শহীদ হয়েছে, সেই সংবিধান ছুঁড়ে ফেলে নতুন করে মাঠে নামতে হবে। নতুন সংবিধান গণপরিষদ বিচার এবং সংস্কারের দাবিতে আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টি এবং আহত শহীদ পরিবার আবার মাঠে নামব, রাজপথের লড়াইয়ে দেখা হবে।’
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, ‘সকল খুনের নির্দেশদাতা ওই খুনি হাসিনা ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন। অতিদ্রুত শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করতে হবে। এটি সম্ভব না হলে আন্তর্জাতিকভাবে মানবতাবিরোধী অপরাধে হাসিনার বিচার করতে হবে। খুনিদের বিচার যেন আমরা দেখে যেতে পারি।’
ইফতার অনুষ্ঠানে আরও কথা বলেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনীম জারা, আহত আসিফ শাহরিয়ার। এ সময় এনসিপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনস প ইফত র এনস প র আম দ র র উপর
এছাড়াও পড়ুন:
কুলিয়ারচরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, ৩০ যাত্রী আহত
কিশোরগঞ্জ-ভৈরব মহাসড়কে যাত্রীবাহী একটি বাস খাদে পড়ে ৩০ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মহাসড়কের আগরপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রাইম পরিবহন নামের একটি বাস ৩০-৩৫ জন যাত্রী নিয়ে শেরপুর থেকে সিলেট যাচ্ছিল। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাত ১টার দিকে বাসটি মহাসড়কের আগরপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে পূর্ব জগৎচর নামক স্থানে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে খাদে পড়ে যায়।
দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে রাতে ৯ জনকে ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আহতদের বরাত দিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের একজন নার্স জানান, যাত্রীদের মধ্যে কয়েকজন শেরপুর থেকে আসেন। তারা প্রয়োজনীয় উপকরণসহ ছাগল নিয়ে সিলেট মাজারে যাচ্ছিলেন।
হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে হারিছ মিয়া (৫৫) নামে এক যাত্রী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার স্বজন ফজর আলী (৫০) বলেন, তিনি কিশোরগঞ্জের যশোদল গ্রামে আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে এসেছিলেন। রাতে তিনি কিশোরগঞ্জ থেকে বাসে উঠেন। সুনামগঞ্জের বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি। বাকিরা আজ সকালে চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।
এ ব্যাপারে ভৈরব হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাহাবুর রহমান বলেন, রাতে দুর্ঘটনার পর আমরা ঘটনাস্থলে এসে যাত্রী ও তাদের মালামাল উদ্ধার করি এবং বুঝিয়ে দেই। কম বেশি সব যাত্রীই আহত হয়েছেন বলে তিনি জানান।