‘কারো করুণা নয়, অধিকার নারীকেই আদায় করে নিতে হবে’
Published: 11th, March 2025 GMT
নারীদের অধিকার আদায়ে পিছপা না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, “নারীদের যোগ্যতা অর্জনের বিকল্প নাই, কারো করুণা নিয়ে বেঁচে থাকা যাবে না। নারীর অধিকার নারীকেই আদায় করে নিতে হবে।নারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অধিকার আদায়ে এগিয়ে আসলে দ্বিগুণ গতিতে আপনাদের জন্য এগিয়ে আসব।”
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২৫ উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, “দেশে এবারের আন্তর্জাতিক নারী দিবস শুরু হয়েছে খারাপ কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে। আর এসব ঘটনার মাধ্যমে সরকারকে খারাপভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হচ্ছে এবং তা বিশ্বাস করার অনেক কারণ রয়েছে। আবার কিছু ক্ষেত্রে সমাজে এখনও নারীদের নিরাপত্তা দেওয়া যায়নি।”
তিনি আরো বলেন, “সমাজে কিছু মানুষের পাশবিকতা, হিংস্রতা বর্ণনা বা নিন্দা করার ভাষা আমাদের জানা নাই।”
জাতীয় সংসদে নারীদের সরাসরি নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “কিছু দিনের জন্য নারীদের আসন সংরক্ষণ করা যেতে পারে। এখানে শুধু রাজনৈতিক দল নয় যেকোনো নারী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে সে ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু পূর্ববর্তী কোনো সরকার এ ধরনের ব্যবস্থা তৈরি করে যায়নি। যা নারীদের জন্য দুঃখজনক।”
নারী পুরুষের সমতার ক্ষেত্রে কর্ম তরান্বিত করার আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “যে গতিতে কাজ হচ্ছে সে গতিতে চললে আগামী শতাব্দীতে নারী-পুরুষের সমতা হবে। কাজেই এ গতিতে চলা যাবে না। এ দিবসটি থাকার ফলেই আজ যেভাবে নারীরা তাদের মৌলিক দাবিগুলো উত্থাপন করতে পেরেছে, তাদের অধিকারের কথা বলতে পরেছে।”
ফ্যাসিবাদে নারী পুরুষ নাই-ফ্যাসিবাদ ফ্যাসিবাদই উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ শুধু একজন ব্যক্তির কারণে গড়ে উঠেনি বরং কাঠামোগত কারণে ফ্যাসিবাদের সৃষ্টি হয়েছে। আর এভাবেই একজন ব্যক্তি ফ্যাসিবাদের প্রতীক হয়ে উঠেছে, যা খুবই দুঃখজনক।”
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডাক্তার বেগম শামছুন নাহার আহম্মেদের সভাপতিত্বে আরো বক্তৃতা করেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড.
এতে স্বাগত বক্তৃতা করেন প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার ডা. তাহমিনা বেগম।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে আবারও এক শ্রমিক নিহতের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাত আটটার দিকে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত।
নিহত মো. রাকিব (২৪) বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে কাজ করতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
এর আগে চলতি বছরের ১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন লাইব্রেরি ভবনের চারতলা থেকে পড়ে মো. আরিফুল নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। এর তিন মাসের মাথায় আবারও এক শ্রমিকের মৃত্যু হলো।
ভবনটির নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন ওই ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ করছিলেন রাকিব। শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে দিকে ভবনের জানালা দিয়ে তিনি ময়লা-আবর্জনা ফেলতে গিয়ে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে ভবনের কর্মচারীরা উদ্ধার করে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান। রাত আটটার দিকে তিনি সেখানে মারা যান।
ভবনটিতে সাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ চলছিল। রাকিব ভবনের জানালা দিয়ে ময়লা ফেলতে গিয়ে পড়ে যান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এই বহুতল ভবনটির কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমিন ট্রেডার্স। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, ভবনের মধ্যে কাজ চলছিল। ভবনটির বাইরের কাজ শেষ তাই ‘সেফটি নেট’ খুলে ফেলা হয়েছে।
মো. আজিজ জানান, রাকিবের মরদেহ তাঁর গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভবনটিতে কর্মরত ফোরম্যানের তত্ত্বাবধানে তাঁর মরদেহ বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। আমরা বারবার তাদেরকে যথাযথ সেফটি (নিরাপত্তা) নিশ্চিত করে তারপর কাজ করতে বলি। কিন্তু অনেক সময় এসব কর্মচারীরা মানে না। এ বিষয়ে প্রকল্প অফিস ও প্রশাসন থেকে বারবার তাদের তাগাদা দেওয়া হয়। এরপরও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেল।’