নারীদের অধিকার আদায়ে পিছপা না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, “নারীদের যোগ্যতা অর্জনের বিকল্প নাই, কারো করুণা নিয়ে বেঁচে থাকা যাবে না। নারীর অধিকার নারীকেই আদায় করে নিতে হবে।নারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অধিকার আদায়ে এগিয়ে আসলে দ্বিগুণ গতিতে আপনাদের জন্য এগিয়ে আসব।”

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২৫ উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, “দেশে এবারের আন্তর্জাতিক নারী দিবস শুরু হয়েছে খারাপ কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে। আর এসব ঘটনার মাধ্যমে সরকারকে খারাপভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হচ্ছে এবং তা বিশ্বাস করার অনেক কারণ রয়েছে। আবার কিছু ক্ষেত্রে সমাজে এখনও নারীদের নিরাপত্তা দেওয়া যায়নি।” 

তিনি আরো বলেন, “সমাজে কিছু মানুষের পাশবিকতা, হিংস্রতা বর্ণনা বা নিন্দা করার ভাষা আমাদের জানা নাই।”

জাতীয় সংসদে নারীদের সরাসরি নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “কিছু দিনের জন্য নারীদের আসন সংরক্ষণ করা যেতে পারে। এখানে শুধু রাজনৈতিক দল নয় যেকোনো নারী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে সে ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু পূর্ববর্তী কোনো সরকার এ ধরনের ব্যবস্থা তৈরি করে যায়নি। যা নারীদের জন্য দুঃখজনক।”

নারী পুরুষের সমতার ক্ষেত্রে কর্ম তরান্বিত করার আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “যে গতিতে কাজ হচ্ছে সে গতিতে চললে আগামী শতাব্দীতে নারী-পুরুষের সমতা হবে। কাজেই এ গতিতে চলা যাবে না। এ দিবসটি থাকার ফলেই আজ যেভাবে নারীরা তাদের মৌলিক দাবিগুলো উত্থাপন করতে পেরেছে, তাদের অধিকারের কথা বলতে পরেছে।”

ফ্যাসিবাদে নারী পুরুষ নাই-ফ্যাসিবাদ ফ্যাসিবাদই উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ শুধু একজন ব্যক্তির কারণে গড়ে উঠেনি বরং কাঠামোগত কারণে ফ্যাসিবাদের সৃষ্টি হয়েছে। আর এভাবেই একজন ব্যক্তি ফ্যাসিবাদের প্রতীক হয়ে উঠেছে, যা খুবই দুঃখজনক।”

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডাক্তার বেগম শামছুন নাহার আহম্মেদের সভাপতিত্বে আরো বক্তৃতা করেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড.

মো. আবু সুফিয়ান, পরিচালক প্রশাসন ডা. মো. বয়জার রহমান, বিসিএস লাইভস্টক একাডেমির সহকারী অধ্যাপক ডা. কাউসাইন মোবশ্বের, ঢাকা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বাসনা আখতার, উপপরিচালক ডা. শারমিন সামাদ।

এতে স্বাগত বক্তৃতা করেন প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার ডা. তাহমিনা বেগম।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা

রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।

এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।

রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।

এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।

সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।

এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।

রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।

রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।

আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ