চট্টগ্রামে ছুরিকাঘাতে এক যুবক খুন হয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে নগরের ইপিজেড থানার আকমল আলী রোডের বালুর মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত আইয়ুব নবী সাগর (২৬) বাঁশখালী উপজেলার পুঁইছড়ি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পরিবার নিয়ে আকমল আলী রোড এলাকায় থাকতেন। পেশায় রেস্তোরাঁ কর্মী। 

পুলিশ বলছে, বন্ধুর হাতে খুন হয়েছেন তিনি। স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া সন্দেহের জেরে তাকে হত্যা করা হয়। এ ঘটায় মো.

সিজান (২৫) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি ইপিজেড থানার সিমেন্ট ক্রসিং এলাকার রানী ভবনের গলির টেন্ডলের বাড়ির মৃত আলমগীরের ছেলে। সাইমন নামে আরেক যুবক পলাতক রয়েছে। সে মূল হত্যাকারী।

পুলিশ জানায়, নিহত আইয়ুব নবী, গ্রেপ্তার সিজান ও পলাতক সাইমন তিন বন্ধু। তাদের মধ্যে আইয়ুবের সঙ্গে স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ করতেন সাইমন। এতে তাদের মধ্যে শত্রুতা সৃষ্টি হয়। এর জেরে সাইমন ও সিজান মিলে তাকে ছুরিকাঘাত করে। এ ঘটনায় আইয়ুব নবীর দ্বিতীয় স্ত্রী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।

ইপিজেড থানার ওসি মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে স্থানীয় লোকজন বালুর মাঠ থেকে এক যুবককে ছুরিকাঘাতে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তার মৃত্যু হলে পুলিশ লাশ হেফাজতে নেয়। রাতে পরিবারের সদস্যরা আইয়ুব নবীর লাশ শনাক্ত করেন। আইয়ুবের সঙ্গে সাইমন নামে তার এক বন্ধুর স্ত্রীর পরকীয়া সন্দেহে এ ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে তথ্য পেয়েছি। সাইমনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

আইয়ুব নবীর বড় ভাই আহম্মদ নবী জানান, আইয়ুব নবী রেস্তোরাঁয় গ্রিল কারিগর হিসেবে বাবুর্চির কাজ করতেন। তার দুই স্ত্রী। উভয় সংসারে একটি করে দুটি ছেলে সন্তান আছে। আইয়ুবের সঙ্গে বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় বাবুর্চির কাজ করতেন সাইমন। আকমল আলী রোডে তারা পাশাপাশি বাসায় থাকতেন। তারা দুজন ভালো বন্ধু ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে আমি খবর পাই, আমার ভাইকে আকমল আলী রোডে বালুর মাঠে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমার ভাই ও সাইমন 0আপন ভাইয়ের মতো ছিল। সাইমন কীভাবে আমার ভাইকে হত্যা করতে পারল, আমি বুঝতে পারছি না।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পরক য় স ইমন

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।  

প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।  কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।

মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।

নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ