সাড়ে চার শ বছর আগের এক অনন্য মসজিদ
Published: 14th, March 2025 GMT
ছাউনিসমৃদ্ধ শানবাঁধানো পুকুরঘাটে বসে কথা বলছিলেন স্থানীয় লোকজন। নামাজের আগে-পরে সেখানে সময় কাটান তাঁরা। ওই ঘাট থেকে হেঁটে ৫০ ফুট পশ্চিমে গেলে একটি চওড়া ফটক। ওই ফটকের বাঁ পাশ দিয়ে সিঁড়ির মতো কাঠামো। একসময় আজান দেওয়া হতো সেই স্থান থেকে। ফটকের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করতেই সুন্দর টাইলসসমৃদ্ধ উঠান আর লাল রঙের গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ চোখে পড়ে। মসজিদের চারপাশে সুপরিসর জায়গা। নান্দনিক স্থাপত্যে গড়া সুলতানি আমলের এই মসজিদের নাম বখশি হামিদ মসজিদ। আজ থেকে সাড়ে চার শ বছর আগে এটি নির্মাণ করা হয়। চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের মধ্য ইলশা গ্রামে এই মসজিদ অবস্থিত।
মসজিদে প্রবেশের তিনটি দরজার মধ্যে মাঝখানের প্রধান দরজার ওপরে আরবিতে লেখা তিন লাইনের একটি শিলালিপি রয়েছে। ওই শিলালিপিতে লেখা আছে, ‘এই পবিত্র মসজিদ জাতি এবং ধর্মের খুঁটি। সুলতান সম্রাট সোলাইমান খান কররানীর আমলে নির্মিত এই মসজিদ। আল্লাহ তাঁকে সব আপদ বিপদ থেকে নিরাপদ রাখুন।’
শিলালিপির বক্তব্যমতে, এই মসজিদ সুলতান সোলাইমান খান কররানির (শাসনকাল: ১৫৬৫-১৫৭২) আমলে তৈরি। তবে লোকমুখে বখশি হামিদ মসজিদ বলে পরিচিতি পেয়েছে এটি।
এলাকার প্রবীণ ব্যক্তি এবং ইতিহাসবিদেরা জানান, বখশি হামিদের পুরো নাম মুহাম্মদ আবদুল হামিদ। বখশি ছিল তাঁর উপাধি। বখশি ফারসি শব্দ। আর এর অর্থ কালেক্টর বা করগ্রহীতা। তৎকালীন সময়ে আবদুল হামিদ এ অঞ্চলের কালেক্টর বা প্রশাসক ছিলেন। তিনি এলাকার শিক্ষা, সভ্যতা, সংস্কৃতির ব্যাপক উন্নতি সাধন করেন। তিনিই এ মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা।
সুলতানি আমলে নির্মিত এই মসজিত সাড়ে চার শ বছরের পুরোনো। সম্প্রতি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের মধ্য ইলশা গ্রামে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সবাই ভেবেছিলেন কিশোরী ডুবে গেছে, ১০ দিন পর ফোন করে জানাল সে গাজীপুরে আছে
১০ দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে গত বুধবার রাতে মাকে ফোন করেছে সোহানা; জানিয়েছে সে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।
নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর নাম সোহানা খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ায়। তার বাবা গোলাম মওলা ও মা শিরিনা খাতুন।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড় ধুতে গিয়েছিল সোহানা। দীর্ঘ সময়েও না ফেরায় তার মা নদীর ধারে যান; দেখেন, সোহানার কাপড় পড়ে আছে। এরপর স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরদিন খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে। ২১ জুলাই এক কবিরাজ এনে নদীতে খোঁজার চেষ্টাও করেন সোহানার বাবা–মা।
এমন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ সোহানা তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকার গাজীপুরে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেছি। এমনকি কবিরাজও এনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বুধবার আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, সে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে। আমরা বিষয়টি গতকাল রাতে পুলিশকে জানিয়েছি।’ বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমা চান।
স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় সোহানা এবং দুজন বিয়ে করে। তবে বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে সোহানা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। নদীতে নিখোঁজ হওয়ার ‘নাটক’ করে সে পালিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, শুরুতে পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল, নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। গতকাল আবার তার বাবা জানিয়েছে, মেয়ে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।