সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ধুকুরিয়াবেড়া ইউনিয়নের ছোট সগুনা গ্রামে নির্মাণাধীন একটি মসজিদের উন্নয়নে চাঁদা তোলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, যার ফলস্বরূপ আজাহার আলী (৫০) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। রোববার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিরাজগঞ্জ শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।

শনিবার সন্ধ্যায়, ইফতারের পূর্বমুহূর্তে দুই পক্ষের মধ্যে এই সংঘর্ষ শুরু হয়। বিষয়টি শুরু হয়েছিল মসজিদ নির্মাণের জন্য গ্রামের লোকজনের কাছ থেকে চাঁদা সংগ্রহকে কেন্দ্র করে। জানা গেছে, আলাউদ্দিন গ্রুপ ও কারিমুল গ্রুপের মধ্যে এই চাঁদা তোলার বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। সংঘর্ষের পর উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, এবং গুরুতর আহত আজাহার আলীকে পরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়, যেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় পুলিশ ৩ জনকে আটক করেছে—শাহিন আনোয়ার, আমির হামজা, এবং মোশারফ হোসেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বেলকুচি থানার ওসি জাকেরিয়া হোসেন জানিয়েছেন, পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

ওসি জাকেরিয়া হোসেন আরও বলেন, গ্রামে মসজিদের নির্মাণ কাজ চলছে, আর এই চাঁদা তোলাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা ছিল। সংঘর্ষে আজাহার আলী গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন, এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।এ ঘটনায় ভিকটিমের ছেলে রাশেদুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয় প্রশাসন গ্রামে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য বিশেষ নজরদারি রেখেছে।

 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ মসজ দ

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ