খাদ্য সহায়তা না দিয়েই মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা
Published: 16th, March 2025 GMT
‘বেসরকারি একটি এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে জাল কিনছি। প্রতি সপ্তাহে চার হাজার টাকা কিস্তি দিতে হয়। এ জাল আর নৌকাই মোগো সম্বল। মাছ ধরেই সংসার চালাই। আগে ১৬০ কেজি চাল আসত। এ্যাহন হুনি আইতে দেরি হবে। পেট তো দেরি মানে না।’ কথাগুলো বলেন বাউফল উপজেলার ধুলিয়া এলাকার জেলে আবুল রাঢ়ী ও সহিদ খাঁ। তারা আরও বলেন, সরকার নিষেধাজ্ঞা দেয়; কিন্তু কাজ বা খাওনের ব্যবস্থা করে না। বাধ্য হয়ে নদীতে জাল পাতি। আর তখনই জেল-জরিমানা করে। বউ, পোলা, মাইয়া নিয়া কি খামু।’
চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের জেলে রুহুল আমিন বলেন, নদীতে এমনিতেই মাছের আকাল। তার পরে যা পাওয়া যেত তা দিয়ে ধারদেনা করে সংসার মোটামুটি চলে যেত। ভাবছিলাম, সরকারি খাদ্য সহায়তা পেলে পরিবার নিয়ে কোনোভাবে কাটিয়ে দেব। কিন্তু কোনো আশাই পূরণ হয় না।
দেশে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে পাঁচটি অভয়াশ্রমে ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে মৎস্য অধিদপ্তর। বাউফলের চররুস্তম থেকে ভোলা জেলার চরভেদুরিয়া পর্যন্ত তেঁতুলিয়া নদীর ১০০ কিলোমিটার এলাকা এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে। এ উপজেলায় মৎস্য অফিসের নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৬ হাজার ৫২১। বেসরকারিভাবে এ সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। এসব জেলে প্রতিবছর এ সময়ে চার কিস্তিতে ৪০ কেজি করে মোট ১৬০ কেজি খাদ্য সহায়তা হিসেবে চাল পেয়ে থাকেন। কিন্তু এবার নিষেধাজ্ঞা জারির ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও সরকারিভাবে খাদ্য সহায়তা আসেনি। নিষেধাজ্ঞার ঘোষণার পর প্রথমে জেলেরা নদীতে মাছ ধরা বন্ধ রেখেছিলেন। কিন্তু ১৫ দিনেও খাদ্য সহায়তা না পেয়ে সংসার চালাতে বাধ্য হয়ে জাটকা নিধন করছেন তারা। এসব জাটকা বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে। এতে ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন জানান, গলাচিপা, দশমিনা, রাঙ্গাবালীর কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কাশিপুর, বগা ফেরিঘাট, যাত্রীবাহী বাসে করে জাটকা পরিবহন করে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করছেন। সম্প্রতি ডলফিন নামে একটি বাস থেকে বেশ কিছু জাটকা জব্দ করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
কেশবপুর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার শাহজাহান জানান, অধিকাংশ জেলে ধারদেনা ও ঋণের কিস্তিতে জর্জরিত। তাদের আয় শুধু নদীর মাছ শিকার। এখন নিষেধাজ্ঞা থাকায় বিপাকে পড়েছেন জেলেরা।
বাউফল উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, জেলেদের খাদ্য সহায়তা দ্রুত সময়ের মধ্যে দেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম মো. আরিফুল। শুক্রবার বেলা এগারোটার দিকে তিনি ভবন থেকে পড়ে যান বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক নিংতম বলেন, বেলা এগারোটার দিকে কয়েকজন ওই শ্রমিককে নিয়ে আসেন। অবস্থা গুরুতর দেখে তখনই তাঁকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
নির্মাণাধীন ভবনটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মোমিনুল করিম শুক্রবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ভবনটির নির্মাণকাজ বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। তবে কিছু শ্রমিক ওই ভবনে থাকেন। দুপুরের দিকে তিনি জানতে পারেন একজন শ্রমিক ভবন থেকে পড়ে গেছেন। তাঁকে এনাম মেডিকেলে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিলো। সন্ধ্যাবেলায় তাঁকে জানানো হয় ওই শ্রমিক মারা গেছেন।
তবে এনাম মেডিকেলের ডিউটি ম্যানেজার সুলতান প্রথম আলোকে বলেন, জাহাঙ্গীরনগর থেকে একজন রোগীকে আনা হয়েছিল। উনি ছাদ থেকে পড়ে গেছেন বলে জানানো হয়। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তিনি মারা যান।
শুক্রবার রাত পৌনে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম রাশিদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আধা ঘণ্টা আগে খবর পেয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। এমন একটি ঘটনা আমাদের আগে জানানো হয়নি কেন, তা জিজ্ঞাসা করেছি। বিষয়টি প্রো-ভিসি (এডমিন) দেখছেন।’