মার্কিন চাপ কিংবা ইরানের অনুরোধে মাথা নত করবে না হুতিরা
Published: 18th, March 2025 GMT
ইয়েমেনের হুতিরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি জাহাজের ওপর পাল্টা হামলা চালাতে ‘পিছপা’ হবে না। ইয়েমেনি হুতিদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক চাপ কিংবা ইরানের মতো মিত্রের কাছ থেকে আবেদনও তাদের হুতিদের হামলার গতি রোধ করতে পারবে না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত সপ্তাহে ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুতিদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় একের পর এক হামলা শুরু করেছে। ইরানের দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, উত্তেজনা প্রশমিত করার জন্য ইরান শুক্রবার তেহরানে হুথি দূতকে মৌখিক বার্তা দিয়েছে এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবিবার মাস্কাট সফরের সময় হুতিদের সাথে মধ্যস্থতাকারী ওমানকে একই বার্তা দিতে বলেছিলেন। উভয় কর্মকর্তাই নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
হুতিদের নতুন করে নেওয়া পদক্ষেপের বিষয়ে সাম্প্রতিক যোগাযোগের বিষয়ে ইরান প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি। তেহরান জানিয়েছে, এই দলটি স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার জানিয়েছেন, হুতিদের দ্বারা পরিচালিত যেকোনো হামলার জন্য তিনি ইরানকে দায়ী করবেন।
সোমবার রাতে হুতি সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জামাল আমের রয়টার্সের সাথে কথা বলেছেন, "গাজায় ত্রাণ অবরোধ শেষ না করা পর্যন্ত কার্যক্রম বন্ধ করার কোনো আলোচনা হবে না। ইরান আমাদের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করছে না, তবে যা ঘটছে তা হল তারা মাঝে মাঝে মধ্যস্থতা করে কিন্তু কিছু বিষয়ে নির্দেশ দিতে পারে না।”
তেহরানে হুতি দূতকে ইরান কোনো বার্তা দিয়েছে কিনা সে সম্পর্কে তাকে অবহিত করা হয়নি উল্লেখ করে আমের জানান, অন্যান্য পক্ষ থেকে ফোনে করে বার্তা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, “এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি যে ইয়েমেন আমেরিকার সাথে যুদ্ধে লিপ্ত এবং এর অর্থ হল আমাদের সকল সম্ভাব্য উপায়ে আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে, তাই উত্তেজনা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিজিবিতে চাকরি পেলেন ফেলানীর ছোট ভাই
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহত ফেলানী খাতুনের ছোট ভাই আরফান হোসেন (২১) বিজিবির সিপাহি পদে চাকরি পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাটে ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। এ সময় আরফান হোসেনের বাবা মো. নুরুল ইসলামও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর
কক্সবাজারে ৮০ শতাংশ মাদক আসে সাগরপথে: বিজিবি
এর আগে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৫ বিজিবি আয়োজিত সিপাহি নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হন আরফান হোসেন।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম বলেন, ‘‘বিজিবি সর্বদা ফেলানীর পরিবারের পাশে আছে। ফেলানীর ছোট ভাই বিজিবি নিয়োগ পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণকেন্দ্রে গিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ শুরু করবেন। আমরা আশা করি, প্রশিক্ষণ শেষ করে তিনি একজন যোগ্য বিজিবি সদস্য হিসেবে দেশমাতৃকার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘সীমান্তে ফেলানী হত্যার মতো নৃশংস ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে, সে বিষয়ে বিজিবি সর্বদা সীমান্তে অত্যন্ত সতর্ক ও সচেষ্ট রয়েছে।’’
আরফান হোসেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনটারী গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা নুর ইসলাম দিনমজুর ও মা জাহানারা বেগম গৃহিণী। পরিবারের অন্য দুই ভাইয়ের মধ্যে জাহান উদ্দিন স্নাতক পড়ছেন এবং আক্কাস আলী পড়ছেন এইচএসসিতে। দুই বোন মালেকা খাতুন ও কাজলী আক্তারের বিয়ে হয়েছে।
আরফান হোসেন বলেন, ‘‘ফেলানী হত্যার পর সারা দেশের মানুষ যেভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিল, তখন থেকে ইচ্ছে ছিল; বিজিবিতে চাকরি করব। আজ সেই স্বপ্ন পূর্ণ হলো। আমি দেশের মানুষের জন্য কাজ করব।’’
ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, ‘‘ভারত থেকে ফেরার পথে আমার নাবালিকা মেয়েকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখে বিএসএফ। সেই দৃশ্য আজও ভুলতে পারিনি। তবে, দেশবাসী আর বিজিবি সব সময় আমাদের পাশে ছিল। আজ আমার ছেলে মেধা ও যোগ্যতায় বিজিবিতে সুযোগ পেয়েছে। এটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি।’’
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় কিশোরী ফেলানী। তার নিথর দেহ কাঁটাতারের বেড়ায় দীর্ঘ সাড়ে চার ঘণ্টা ঝুলে ছিল। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশে নিন্দার ঝড় উঠে।
ঢাকা/সৈকত/রাজীব