পবিত্র ঈদুল ফিতর উৎসবমুখর ও নিরাপদ পরিবেশে উদযাপনের লক্ষে এবং ঈদে বাসা-বাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণি-বিতানের সার্বিক নিরাপত্তায় ১৪ দফা নির্দেশনা জারি করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

ইতোমধ্যে সব নিরাপত্তা নিশ্চিতে সকল ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। পুলিশকে সহায়তা করার জন্য ইতোমধ্যে অক্সিলারি পুলিশ নিয়োগ করা হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তারা কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

ঈদের ছুটিতে যাওয়ার আগে বাসার অর্থ, মূল্যবান সামগ্রী ও দলিল নিরাপদ স্থানে বা নিকট আত্মীয়ের হেফাজতে রেখে যেতে হবে। প্রয়োজনে ব্যাংক লকারের সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ডিএমপি।

আরো পড়ুন:

স্কুল ছাত্রীকে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ অভিযোগে আটক ৪

বরগুনায় থানায় ঢুকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা, মহিলা দলের নেত্রী গ্রেপ্তার

ডিএমপি মনে করছে, পুলিশের গৃহীত পদক্ষেপের পাশাপাশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে নিরাপত্তা সচেতনতাবোধ তৈরি করা গেলে, সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে ও অপরাধ দমনে অধিকতর সফল হওয়া সম্ভব।

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, ডিএমপির গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি ঈদে বাসা-বাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণি-বিতানের অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিম্নবর্ণিত নির্দেশনাসমূহ মেনে চলার জন্য সম্মানিত নগরবাসীকে অনুরোধ করা হচ্ছে।

১৪ দফা নির্দেশনা ডিএমপির  

১.

বাসা-বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, ব্যাংক-বীমাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণি-বিতানের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত নিরাপত্তা রক্ষীদের ডিউটি জোরদার করতে হবে এবং যে কোনও অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা নজরদারির ব্যবস্থা রাখতে হবে। সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারক করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী একসঙ্গে ছুটি প্রদান না করে একটি অংশকে দায়িত্বপালনে নিয়োজিত রাখা যেতে পারে যাতে তারা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সার্বিক তদারক করতে পারে।

২. বাসা-বাড়ি ও প্রতিষ্ঠান ত্যাগের পূর্বে দরজা-জানালা সঠিকভাবে তালাবদ্ধ করে যেতে হবে। প্রয়োজনে একাধিক তালা ব্যবহার করা যেতে পারে। দরজা-জানালা দুর্বল অবস্থায় থাকলে তা মেরামত করে যথাসম্ভব সুরক্ষিত করতে হবে।

৩. বাসা-বাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণি-বিতানে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে এবং স্থাপিত সিসি ক্যামেরাসমূহ সচল থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

৪. বাসা-বাড়ির মূল দরজায় অটোলক ও নিরাপত্তা এ্যালার্মযুক্ত তালা ব্যবহার করা যেতে পারে।

৫. রাতে বাসা ও প্রতিষ্ঠানের চারপাশ পর্যাপ্ত আলোকিত রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।

৬. অর্থ, মূল্যবান সামগ্রী ও দলিল নিরাপদ স্থানে বা নিকট আত্মীয়ের হেফাজতে রেখে যেতে হবে। প্রয়োজনে ব্যাংক লকারের সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।

৭. বাসা-বাড়ি ত্যাগের পূর্বে যে সব প্রতিবেশী/পাশের ফ্ল্যাটের অধিবাসী ঢাকায় অবস্থান করবেন তাদের বাসার প্রতি লক্ষ্য রাখতে অনুরোধ করতে হবে এবং ফোনে তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে।

৮. ভাড়াটিয়াদের পূর্বেই বাসার মালিককে ঈদ উপলক্ষ্যে বাসা ত্যাগের বিষয়টি অবহিত করতে হবে।

৯. অনুমতি ব্যতীত কেউ যেন বাসা বা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতে না পারে এ বিষয়ে বাসা বা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মীকে সতর্ক করতে হবে ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করতে হবে।

১০. বাসা-বাড়ি বা প্রতিষ্ঠান ত্যাগের পূর্বে লাইট, ফ্যানসহ অন্যান্য ইলেকট্রিক লাইনের সুইচ, পানির ট্যাপ, গ্যাসের চুলা ইত্যাদি বন্ধ করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে।

১১. বাসা বা প্রতিষ্ঠানের গাড়ির গ্যারেজ সুরক্ষিত রাখতে হবে। 

১২. বাসার জানালা/দরজার পাশে কোনও গাছ থাকলে অবাঞ্ছিত শাখা-প্রশাখা কেটে ফেলতে হবে যাতে অপরাধীরা গাছের শাখা-প্রশাখা ব্যবহার করে বাসায় প্রবেশ করতে না পারে।

১৩. মহল্লা/বাড়ির সামনে সন্দেহজনক কাউকে/দুস্কৃতকারীকে ঘোরাফেরা করতে দেখলে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি ও থানাকে অবহিত করতে হবে।

১৪. ঈদে মহল্লা/বাসায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে থাকলে বা ঘটার সম্ভাবনা থাকলে তা স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি ও থানাকে অবহিত করতে হবে।

জরুরি প্রয়োজনে পুলিশি সহায়তার জন্য যোগাযোগের নম্বরসমূহ :

ডিএমপি কন্ট্রোল রুমের নম্বর : ০১৩২০-০৩৭৮৪৫; ০১৩২০-০৩৭৮৪৬;
২২৩৩৮১১৮৮; ০২৪৭১১৯৯৮৮; ০২৯৬১৯৯৯৯।
জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর : ৯৯৯।

ঢাকা/মাকসুদ/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঈদ ব যবস থ ড এমপ র র জন য ত করত

এছাড়াও পড়ুন:

তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রাম ঘেঁষে তুলশীগঙ্গা নদীর অদূরে সন্ন্যাসতলীর বটতলা। জায়গাটিতে প্রায় একশ বছর আগে থেকে বাংলা জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ শুক্রবার আয়োজন হয় ঘুড়ির মেলা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অন্তত ৫০ গ্রামের হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে শুক্রবার সন্ন্যাসতলী ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

মেলার দিনক্ষণ মনে রেখে সময়মতো দোকানিদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা ভিড় জমান নিভৃত পল্লীতে। আগে মেলার দিন বৃষ্টি হওয়া যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে। প্রচণ্ড গরম ও তাপপ্রবাহের মধ্যেই চলে এ আয়োজন। বৈরী পরিবেশের কারণে উৎসবের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা বলছেন, সন্ন্যাসতলীর এ ঘুড়ি উৎসব শুরুর দিন বিকেলে বটতলায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় সন্ন্যাস পূজা পালন করেন। তাদের এ পূজা-অর্চনা ঘিরেই মূলত এ মেলার উৎপত্তি। তবে শুরুর কথা কেউ বলতে পারেননি। প্রবীণরা শুধু জানেন, একশ বছরের বেশি সময় ধরে তারা এ মেলার আয়োজন দেখে আসছেন।

মেলার নিজস্ব জায়গা না থাকলেও এর ব্যাপ্তি প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই এক দিনের এ মেলা ঘিরেই জেলার জামালগঞ্জ চারমাথা থেকে ঐতিহাসিক আছরাঙ্গাদীঘি পর্যন্ত রকমারি পণ্যের দোকান বসে। এখান থেকে সংসারের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আসবাব থেকে শুরু করে ছোট মাছ ধরার বাঁশের তৈরি পণ্য খলসানি, টোপা, ডালা, চালুন কিনে নেন অনেকে।

সুতার তৈরি তৌরা জাল, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, বিভিন্ন ধরনের খেলনা, মিষ্টান্ন, প্রসাধনী, মাটির তৈজসপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য ছিল নাগরদোলার ব্যবস্থাও। আর মেলার বড় আকর্ষণ ঘুড়ি ওড়ানো ও বিক্রি। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসেছিলেন ঘুড়ি বিক্রি করতে।

প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি তেমন হাওয়া-বাতাস না থাকায় এবার ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা সেভাবে জমে ওঠেনি। তবে ঘুড়ি বেচাকেনা ও শিশু-কিশোরদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এ উপলক্ষে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীর নিরাপত্তার জন্য মেলায় সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল ছিল।

আদমদীঘির শিববাটি গ্রামের ঘুড়ি ব্যবসায়ী সালাম হোসেনের ভাষ্য, সন্ন্যাসতলীর মেলা বড় হওয়ায় তিনি এসেছেন ঘুড়ি বিক্রির জন্য। মেলায় প্রত্যাশা অনুযায়ী ঘুড়ি বিক্রি করতে পেরে তিনি খুশি। জয়পুরহাটের পার্বতীপুর এলাকার ঘুড়ি ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন ও মজনু সরদার বলেন, পূর্বপুরুষের আমল থেকে এ মেলার কথা শুনে আসছেন তারা।

মেলা উদযাপন ও পূজা কমিটির সদস্য মহব্বতপুর গ্রামের মন্টু মণ্ডল বলেন, মেলাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও এটি আসলে সব ধর্মালম্বীর মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। 

মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিলন হোসেনের ভাষ্য, এক দিনের আয়োজনে যে এত লোকের সমাগম হতে পারে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। মেলায় যেন অনৈতিক কর্মকাণ্ড না হয়, সে ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ক্ষেতলাল থানার ওসি মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং মেলায় আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক আছে। মেলায় অনৈতিক আচরণ লক্ষ্য করা গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চট্টগ্রামে সাংবাদিক পরিচয়ে হোটেল কক্ষে তল্লাশি, সমালোচনা 
  • ভারতে কোনো বাংলাদেশি থাকলে উপযুক্ত চ্যানেলে পাঠাতে হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • নির্বাচনের জন‌্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি রয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • গাজীপুরে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে কারখানার কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে মারধর, আটক ৪৩
  • তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা
  • বিএনপি ও গণ অধিকারের মধ্যে উত্তেজনার জেরে পটুয়াখালীর ২ উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি
  • দীর্ঘ ছুটি শেষে জীবিকার তাগিদে ঢাকায় ফিরছে মানুষ