গাজায় ভয়াবহ হামলার প্রতিবাদে চবিতে বিক্ষোভ
Published: 19th, March 2025 GMT
যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গাজায় দখলদার ইসরাইলের ভয়াবহ গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রশিবিরের দাওয়াতি সংগঠন ‘মিনার’।
বুধবার (১৯ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট এলাকায় এ বিক্ষোভ সমাবেশ করে সংগঠনটি। এ কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় সংগঠনটির নেতাকর্মীরা ‘ফ্রম দ্য রিভার টু দ্য সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’, ‘যুদ্ধবিরতিতে হামলা কেন, ইসরাইল জবাব দাও’, ‘বিশ্ববাসী এক হও, গাজা দখল রুখে দাও’, ‘বদরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘নিপাত যাক নিপাত যাক, ইহুদিবাদ নিপাত যাক’, ‘ইহুদিদের কালো হাত, ভেঙে দাও পুড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
আরো পড়ুন:
চবি সমাবর্তনে থাকতে পারবে মূল সনদ গ্রহণকারীরাও
নওগাঁ মেডিকেল কলেজ বন্ধ না করার দাবি চবি শিক্ষার্থীদের
সমাবেশে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, “ইসরায়েল আবারো আমাদের অসহায় ফিলিস্তিনের ওপর নির্মম গণহত্যা চালিয়েছে। কোথায় আজ মানবাধিকারের বুলি আওড়ানো জাতিসংঘ? জাতিসংঘ মূলত করা হয়েছে, পশ্চিমা আর ইহুদিদের দালালি করার জন্য।’
শাখা ইসলামী আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, “আমরা এখনো নিজেদের মুসলিম জাতিসত্তায় রূপান্তরিত করতে পারিনি। মুসলিমরা আপনারা একেকজন সালাহউদ্দিন আইয়ুবী, তারেক বিন যিয়াদ হয়ে উঠুন। বিশ্ব মোড়লরা আজ কোথায়? পশ্চিমা বিশ্ব বরাবরই মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। মুসলিম নিধনই তাদের একমাত্র লক্ষ্য।”
শাখা শিবিরের অফিস সম্পাদক হাবিবুল্লাহ খালেদ বলেন, “পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গণহত্যা হয়েছে গতকাল (মঙ্গলবার)। তাদের আক্রমণ থেকে বাদ যায়নি মায়ের কোলের শিশুরাও। তাদের মদদ দিচ্ছে মানবতার বুলি আওড়ানো জাতিসংঘ ও আমেরিকা। বিশ্বের এমন কোনো যুদ্ধ আইন নেই, যে আইনে গণহত্যা করা বৈধ।”
শাখা শিবিরের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আলী বলেন, “যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যেই গতকাল (মঙ্গলবার) আমাদের পূণ্যভূমি গাজা উপত্যকায় সন্ত্রাসী জায়োনিস্টরা নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। কিন্তু আমরা দেখেছি, মানবতার ধোঁয়া উড়ানো বিশ্ব মোড়লরা নিশ্চুপ। মসজিদুল আকসা এবং ফিলিস্তিনকে রক্ষা করার জন্য ওআইসি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু ওআইসি আজ নির্জীব। এই নির্জীব ওআইসি আমাদের প্রয়োজন নেই। আমাদের প্রয়োজন একজন সালাহউদ্দিন আইয়ুবীর মত সেনাপতি, যিনি আমাদের সঙ্গে নিয়ে ফিলিস্তিনকে আবারো স্বাধীন করবেন।”
বিশ্ব মুসলিম নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আপনাদের এই নিষ্ক্রিয়তা, অলসতা একদিন আপনাদের ঘাড়েও এসে বসবে। এখন হয়তো আপনারা বিনোদন করছেন, ক্ষমতায় টিকে আছেন। কিন্তু একদিন আপনাদের এ সময় আর থাকবে না। ফিলিস্তিনিদের ওপর পড়া প্রতিটি বোমা একদিন আপনাদের ওপরও পড়বে। তখন বুঝবেন এসব বোমার তেজস্ক্রিয়তা কত।”
ঢাকা/মিজান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আপন দ র গণহত য আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
২ মে ঢাকায় এনসিপির বিক্ষোভ, প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ৭ অপরাধ
‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে’ আগামী ২ মে (শুক্রবার) রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করবে নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। রাজধানীর গুলিস্তানে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে এনসিপির ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে এই সমাবেশ হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের উদ্যোগে গঠিত দল এনসিপি।
সমাবেশ উপলক্ষে তৈরি করা প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামলের সাতটি অপরাধের কথা উল্লেখ করেছে এনসিপি। এগুলো হলো ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহ দমনের নামে ৫৭ সেনা কর্মকর্তার হত্যাকাণ্ড; গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহরণ; ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে তিনটি অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ; ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে চালানো হত্যাযজ্ঞ; লাখ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি, লুটপাট ও পাচার; ২০২১ সালে নরেন্দ্র মোদিবিরোধী আন্দোলনে চালানো হত্যাকাণ্ড এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় চালানো নজিরবিহীন গণহত্যা।
এরপর চারটি দাবিও উল্লেখ করা হয়েছে প্রচারপত্রে। এগুলো হলো প্রতিটি অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ট্রাইব্যুনাল বা কমিশন গঠন করে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচারের ব্যবস্থা; আগামী নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগ প্রশ্নের মীমাংসা তথা আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল; বিচার চলাকালে আওয়ামী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাখা এবং ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার ও তাঁদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা।
দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, সমাবেশে প্রায় ২০ হাজার মানুষের জমায়েত হতে পারে। এই সমাবেশে এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
দলগতভাবে আওয়ামী লীগের বিচার, দলটির নিবন্ধন বাতিল ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে গত ২১ এপ্রিল থেকে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় বিক্ষোভ, সমাবেশ ও মশালমিছিল করছে এনসিপি। এর ধারাবাহিকতায় এবার কিছুটা বড় পরিসরে ঢাকা মহানগর শাখার ব্যানারে সমাবেশ হতে যাচ্ছে।
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশির। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা মহানগরের থানা পর্যায়ে কিছুদিন ধরে এনসিপির যে কর্মসূচিগুলো হচ্ছে, এগুলোরই চূড়ান্ত সমাবেশটা হবে আগামী ২ মে।