Risingbd:
2025-08-01@21:58:49 GMT

‘মা, আমি মরতে চাই’

Published: 19th, March 2025 GMT

‘মা, আমি মরতে চাই’

ব্রাশ দিয়ে চুল আঁচড়ানোর অভিনয় করে সামা তুবাইল আয়নায় নিজের প্রতিবিম্বের দিকে তাকিয়ে কেঁদে ফেলে।

মাথায় হাত রেখে সিএনএনকে সামা বলেন, “আমি খুবই দুঃখিত যে আমার ব্রাশ দিয়ে আঁচড়ানোর জন্য একটি চুলও নেই। আমি আয়না ধরে থাকি। কারণ আমি আমার চুল আঁচড়াতে চাই: আমি সত্যিই আবার আমার চুল আঁচড়াতে চাই।”

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর আগে সামা এর চুল এমন ছিল না। তার লম্বা চুল ছিল এবং উত্তর গাজার জাবালিয়ায় তার বন্ধুদের সাথে বাইরে খেলাধুলা করত। কিন্তু তারপর থেকে, সামা এবং তার পরিবার সেই ১৯ লাখ ফিলিস্তিনিদের মধ্যে রয়েছেন যাদের জোরপূর্বক তাদের বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে, যারা ইসরায়েলি সামরিক আদেশে প্রথমে ছিটমহলের দক্ষিণ রাফাহ অঞ্চলে পালিয়ে যায়। সহিংসতা বৃদ্ধি পেলে, সামা গাজার মধ্যাঞ্চলের খান ইউনিসের একটি বাস্তুচ্যুত শিবিরে চলে যান। ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ৪৮ হাজার ছাড়িয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ শুরু করে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী,ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে ৪৯ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ গত জুনে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, গাজার প্রায় ১২ লাখ শিশুর মানসিক সহায়তা প্রয়োজন, বিশেষ করে যারা বারবার আঘাতমূলক ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে।

জানুয়ারিতে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার এক সপ্তাহ পরে জাতিসংঘের মানবিক সংস্থার প্রধান টম ফ্লেচার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, “একটি প্রজন্ম মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত। শিশুদের হত্যা করা হয়েছে, অনাহারে রাখা হয়েছে এবং হিমায়িত অবস্থায় মারা গেছে। কিছু শিশু তাদের প্রথম নিঃশ্বাসের আগেই মারা গেছে - প্রসবের সময় তাদের মায়েদের সাথে মারা যাচ্ছে।”

গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ভোরে ইসরায়েল নতুন করে বিমান হামলা শুরু করেছে, যার ফলে যুদ্ধবিরতি ভেঙে গেছে এবং শত শত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। 

একজন চিকিৎসক সিএনএনকে বলেন, গাজা সিটির একটি হাসপাতালের দৃশ্য ‘আমি আগে যা দেখেছি তা আগের মতো নয়।’ হাসপাতালে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শিশু দেখেছেন তিনি।

গত বছর চিকিৎসকরা নির্ণয় করেছিলেন যে সামা’র চুল পড়া ‘নার্ভাস শক’ এর ফলে হয়েছে, বিশেষ করে আগস্টে রাফায় তার প্রতিবেশীর বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলার পর। তারা বলেছে, ৭ অক্টোবরের পর থেকে তার দৈনন্দিন জীবনের বেদনাদায়ক পরিবর্তন সম্ভবত তার অ্যালোপেসিয়ায় অবদান রেখেছে, যা চুল পড়ার কারণ।

গত বছরের শেষের দিকে ওয়ার চাইল্ড অ্যালায়েন্স এবং গাজাভিত্তিক কমিউনিটি ট্রেনিং সেন্টার ফর ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্টের একটি প্রতিবেদনে গত বছর গাজায় ইসরায়েলি আক্রমণের ফলে শিশুদের উপর যে মারাত্মক মানসিক আঘাত নেমে এসেছে তা তুলে ধরা হয়েছে। পাঁচ শতাধিক ঝুঁকিপূর্ণ শিশুর যত্নশীলদের উপর করা জরিপের উপর ভিত্তি করে তৈরি এই প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে, সেই পরিস্থিতিতে ৯৬ শতাংশ শিশু মনে করে যে ,মৃত্যু আসন্ন এবং প্রায় অর্ধেক- ৪৯ শতাংশ ইসরায়েলের আক্রমণের কারণে ‘মরে যাওয়ার ইচ্ছা’ প্রকাশ করেছে।

চুল পড়ার জন্য অন্যান্য শিশুদের নেতিবাচক কথাবার্তায় সামা’র মানসিক যন্ত্রণা আরো তীব্র হয়। এর ফলে সে ঘরের ভেতরেই থেকে যায়। বাইরে, সে তার মাথার ত্বক ঢাকতে গোলাপী রঙের একটি ব্যান্ডানা পরে থাকতো।

মাকে সামা বলেছিল,“মা, আমি ক্লান্ত-আমি মরতে চাই। আমার চুল কেন গজাচ্ছে না? আমি মরতে চাই এবং আল্লাহর ইচ্ছায় জান্নাতে আমার চুল গজাতে চাই।”

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম র চ ল র একট ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা

অবৈধ পথে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ১৪ তরুণ। কিন্তু দুবাই হয়ে লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর পাঁচ মাস ধরে তাঁদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্বজনদের দাবি, দালালের প্রলোভনে পড়ে জনপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণও দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সন্ধান না পাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।

ইউরোপের কোনো দেশে গেলে সচ্ছলতা আসবে, এমন ধারণা নিয়ে প্রতিবছর মাদারীপুর থেকে শত শত তরুণ সেখানে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছেন। তবে অবৈধ পথে ইউরোপ যেতে গিয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। কেউবা দালালের খপ্পরে পড়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে কাটাচ্ছেন বন্দিজীবন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্য বলছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত জেলার ৪৫ জন লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মারা গেছেন। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে লিবিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে পেরেছেন অন্তত ৩৫০ তরুণ। নিখোঁজ আছেন তিন শতাধিক।

সবশেষ নিখোঁজ তরুণদের সবার বাড়ি রাজৈরের বাজিতপুর ইউনিয়নে। তাঁরা হলেন পাখুল্লা গ্রামের জাহাঙ্গীর ব্যাপারীর ছেলে সালমান ব্যাপারী, চৌরাশী গ্রামের মোসলেম শিকদারের ছেলে বাবুল শিকদার, একই গ্রামের মজিবর বয়াতীর ছেলে সাজ্জাদ বয়াতী, জাকির মাতুব্বরের ছেলে বাদল মাতুব্বর, কানাই রায়ের ছেলে লিটন রায়, নিরঞ্জন বাড়ৈর ছেলে বাঁধন বাড়ৈ, কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামের আলম চৌকিদারের ছেলে ইমন চৌকিদার, অহিদুল মাতুব্বরের ছেলে নয়ন মাতুব্বর, আজিজ খালাসির ছেলে খলিল খালাসি, সোনা মিয়া চৌকিদারের ছেলে সোহেল চৌকিদার, নয়াকান্দি বাজিতপুর গ্রামের গৌরাঙ্গ বাড়ৈর ছেলে গৌতম বাড়ৈ, একই গ্রামের সামচু সরদারের ছেলে ইমরান সরদার, শ্রীনাথদী বাজিতপুরের জলিল বয়াতীর ছেলে আল আমিন বয়াতি ও শ্রীনদী গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ঘরামির ছেলে আলী ঘরামি। তাঁদের সবার বয়স ১৮ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে।

স্বজনদের অভিযোগ, মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য বাজিতপুর এলাকার বাবুল হাওলাদার ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ১৬ লাখ টাকা করে নেন। পরে লিবিয়ায় বন্দী করে আদায় করেন আরও ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এর পর থেকে ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত বাবুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

মাদারীপুরের ১৪ তরুণ ইতালি যেতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দালালের হাত ধরে ঘর ছাড়েন। নিখোঁজ তরুণদের সন্ধানে তাদের ছবি হাতে স্বজনেরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হুতিদের হামলায় সৌদি যুবরাজের লোহিত সাগর বন্দর পরিকল্পনা কি ভেস্তে যাবে
  • গাজায় নৃশংসতা চালিয়ে ইসরায়েল কি পশ্চিমা বিশ্বেও একঘরে হয়ে যাচ্ছে
  • স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগ থেকে মুক্তি পাকেতার
  • কলকাতায় বাংলাদেশি অভিনেত্রী গ্রেপ্তার , দাবি ভারতীয় গণমাধ্যমের
  • কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি অভিনেত্রী
  • ওভালে টস হেরে ব্যাটিংয়ে ভারত, একাদশে চার পরিবর্তন
  • কর্মস্থলে অনুপস্থিত, পাঁচ প্রকৌশলী ও এক স্থপতি বরখাস্ত
  • গণপূর্ত অধিদপ্তরের ৫ প্রকৌশলী ও স্থাপত্য অধিদপ্তরের স্থপতি বরখাস্
  • মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা
  • দলবদলের বাজারে চেলসিই রাজা, শীর্ষ দশে আর কারা