ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদ রাবি শিক্ষার্থীদের
Published: 19th, March 2025 GMT
ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যা ও গাজার প্রধানমন্ত্রীকে শহীদ করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৯ মার্চ) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এরপর ফিলিস্তিনি ভাইবোনদের প্রতি সংহতি জানিয়ে খোলা আকাশের নিচে তারা ইফতার করেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ফ্রম দ্য রিভার টু দ্য সী’, ‘প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’, ‘লং লিভ প্যালেস্টাইন’, ‘থ্রোর এভরি হার্ড টাইম, লং লিভ প্যালেস্টাইন’, ‘অ্যাগেইনস্ট দ্য ক্রুয়েল টাইম’, ‘লং লিভ প্যালেস্টাইন’, ‘ফর পিচ্ ইন টাইম’, ‘ফ্রি ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘নো মোর জেনোসাইড’, ‘নো জাস্টিস’, ‘নো পিচ্’, ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ ইত্যাদি লেখা সম্বলিত প্লাকার্ড হাতে নিয়ে স্লোগান দেন।
আরো পড়ুন:
রাবির গবেষণা: মাটি ছাড়াই উৎপাদন হবে সবুজ পশুখাদ্য
রাবির ক্রীড়াঙ্গনে যুক্ত হচ্ছে আর্চারি
ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েল নারী, শিশু, স্কুল, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে জঘন্য ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। এ বর্বরোচিত হামলা সারা বিশ্বে শান্তিকামী সাধারণ মানুষকে ব্যথিত করছে, যা মানবতার বিরুদ্ধে জঘন্যতম অপরাধ। আমরা এ বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের দাবি জানাই।
বক্তারা আরো বলেন, আজ আমরা মুসলাম হিসেবে অনেক বেশি লজ্জিত। ফিলিস্তিনে আমাদের মুসলমান ভাই, বোন, শিশুদের নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছে। অথচ সারা বিশ্ব নিরব ভূমিকা পালন করছে। মুসলমানদের এমন অবস্থা হয়েছে, গাজায় হাজার হাজার মানুষ মারা যাওয়ার পরও তাদের বিবেকের কড়া নড়ছে না। মুসলমানদের আর বিভক্ত থাকার দিন নেই। আমরা যত বেশি বিভক্ত হব, আমাদের বিরোধী শক্তি তত বেশি শক্তিশালী হবে।
বিশ্বের মুসলিম নেতৃবৃন্দের কাছে আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, পুরো মুসলিম জাতি যদি এক হয়ে হুংকার দেওয়া যায়, তাহলে শুধু নেতানিয়াহু নয়, পুরো ইসলাম বিরোধী শক্তির মসনদ ভেঙে যাবে। বিশ্বের মুসলিম নেতৃবৃন্দের কাছে আহবান জানাই, আপনারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ফিলিস্তিনের মানুষের পাশে দাঁড়ান এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা পালন করুন।
এর আগে দুপুর ২টার বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির সামনে সংহতি জানান ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প য ল স ট ইন
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)