নির্ধারিত সময়ের বেশ আগেই পাঁচ তারকা হোটেলের হল ভর্তি হয়ে যায়। সম্ভবত বাংলাদেশের সবকটি গণামধ্যমের একাধিক প্রতিনিধি ছিলেন হাজির। বাংলাদেশ ফুটবল দলের কোনো খেলার আগে নিয়মিতই সংবাদ সম্মেলন হয়েছে; কিন্তু এমন আনুষ্ঠানিকতা, এমন সরগরম অবস্থা স্মরণকালে দেশের ফুটবলে ঘটেনি।

হবেই না বা কেন? এফএ কাপ জয়ী ফুটবলার, দীর্ঘ সময় ধরে ইংলিশ লিগ মাতানো ফুটবলার হামজা চৌধুরীর আগমন বলে কথা। হবিগঞ্জের স্নানঘাট হয়ে ঢাকায় পা পড়েছে হামজার। সোমবার রাতে পৌঁছানোর পর মঙ্গলবার দুপুরে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন, উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের পর সন্ধ্যায় দলীয় অনুশীলন। ফুটবলের বাইরে এমন ব্যস্ততা হয়তো হামজার জীবনে খুব একটা আসেওনি।

আরো পড়ুন:

ফাহামিদুলের বাদ পড়া এবং কিছু প্রশ্ন

‘মেসির সঙ্গে’ পরিচয় করিয়ে দিলেন জামাল, ছেত্রীর সঙ্গে তুলনায় দিলেন অন্যরকম উত্তর

হামজা লাল-সবুজের জার্সিতে খেলবেন। এমন ঘোষণার পর থেকে বদলে যেতে থাকে ফুটবলের চেহারা। কিট স্পন্সর থেকে শুরু করে ফুটবল দল পেয়ে গেছে পাঁচ বছরের পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান। সবকিছুর মূলেই হামজা। তাকে নিয়ে বাড়তি আকর্ষণ, বাড়তি চাওয়া থাকবে সেটা অনুমেয়। আজ তাই দেখা গেল।

সব নিয়ে রোমাঞ্চ কাজ করছে হামজার মধ্যেও। লেস্টার কিংবা শেফিল্ড ইউনাইটেডের হয়ে খেললেও হামজার ভাবনায় ছিল দেশের হয়ে খেলা।

“হ্যাঁ, আমি সবসময়ই বাংলাদেশের হয়ে খেলার কথা ভেবেছি। এ নিয়ে আমি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। তবে (ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার সুযোগ পেলেও বাংলাদেশের হয়ে খেলতাম কিনা) এই সিদ্ধান্ত আমার নিতে হয়নি। আমার যখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এলো, তখন পরিবারের সঙ্গে কথা বললাম, তারা আমার জন্য সবচেয়ে বড় ব্যাপার। তারাই বাংলাদেশের হয়ে খেলার জন্য আমাকে এখানে টেনে নিয়ে এলো (হাসি)।”

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় দলের কোচ অধিনায়ক থেকে শুরু করে ছিলেন পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানের কর্তাও। কিন্তু শুরু না হতেই হামজাকে প্রশ্ন করা শুরু করে দেন কয়েকজন। যেন তর সইছে না। নানা প্রশ্নের ফাঁকে হামজা জানিয়েছেন নিজের ভাবনাও। মাঠে নামার আগেই এমন তুলকালাম অবস্থা হামজা চাপ অনুভব করছেন কী না?

“না, আমি তা মনে করি না। আমি মনে করি, দিনশেষে আমরা একটা ফুটবল ম্যাচই খেলছি। সেখানে যেকোনও কিছুই হতে পারে। কোচ বলেছেন, ইতোমধ্যে তিনি প্রস্তুতি নিয়েছেন, আমি এখানে এসেছি, আমি যা পারি, তা দলে যুক্ত করার জন্য। আমি কোনও চাপ অনুভব করছি না, আমি অনেক ভালোবাসা অনুভব করছি। আমার দিক থেকে, আমি চেষ্টা করবো যতটা সম্ভব দলের উন্নতিতে সহায়তা করার” -বলছিলেন হামজা।

কীভাবে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে যুক্ত হলেন সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন হামজা, “অনেকগুলো বিষয় ছিল, যে কারণে আমি এই অপশন বেছে নিয়েছি। যখন নতুন সভাপতি তাবিথ আউয়াল আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন, পরিকল্পনা জানালেন, আমি কোচের সঙ্গে কথা বললাম। দেখলাম এখানে একটি ভালো পদ্ধতি আছে। দেখলাম খুব ভালো একটি অর্গানাইজেশন নিয়ে একটা দল সফল হতে চায়। আমি জানতাম, আমার জন্যও পরিবার নিয়ে এখানে এসে খেলা আরামদায়ক। তাই আমি জাতীয় দলের সঙ্গে এই অভিযানে যোগ দিয়েছি। কোচ ও সভাপতি আমাকে অনেক আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছেন।”

ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনের আগে হবিগঞ্জে নিজ বাড়িতেও গণমাধ্যম কর্মীদের মুখোমুখি হয়েছিলেন হামজা। ভক্ত থেকে শুরু করে সংবাদ কর্মীরাও মেতেছিলেন হামজাকে নিয়ে। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভুঁইয়াতো বলেই দিলেন, “হামজার মতো ফুটবলার দলে থাকা মানে প্রতিপক্ষের জন্য চাপের।”

অবশ্য ইপিএলে খেলা ফুটবলারের জন্য এসব কোনো কিছুই নয়। শেষ করতে হবে জামাল ভূঁইয়ার একটা কথায়। সুনীল ছেত্রীর সঙ্গে তুলোনায় প্রশ্নের উত্তরে সুনীলের ভুয়সী প্রশংসা করে জামাল বলেন, “হামজা ইংলিশ লিগের প্লেয়ার।’’

ঢাকা/রিয়াদ/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল ল দ শ র হয় ফ টবল র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

সবাই ভেবেছিলেন কিশোরী ডুবে গেছে, ১০ দিন পর ফোন করে জানাল সে গাজীপুরে আছে

১০ দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে গত বুধবার রাতে মাকে ফোন করেছে সোহানা; জানিয়েছে সে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর নাম সোহানা খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ায়। তার বাবা গোলাম মওলা ও মা শিরিনা খাতুন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড় ধুতে গিয়েছিল সোহানা। দীর্ঘ সময়েও না ফেরায় তার মা নদীর ধারে যান; দেখেন, সোহানার কাপড় পড়ে আছে। এরপর স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরদিন খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে। ২১ জুলাই এক কবিরাজ এনে নদীতে খোঁজার চেষ্টাও করেন সোহানার বাবা–মা।

এমন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ সোহানা তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকার গাজীপুরে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেছি। এমনকি কবিরাজও এনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বুধবার আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, সে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে। আমরা বিষয়টি গতকাল রাতে পুলিশকে জানিয়েছি।’ বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমা চান।

স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় সোহানা এবং দুজন বিয়ে করে। তবে বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে সোহানা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। নদীতে নিখোঁজ হওয়ার ‘নাটক’ করে সে পালিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, শুরুতে পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল, নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। গতকাল আবার তার বাবা জানিয়েছে, মেয়ে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ