ফিলিস্তিনে হামলার প্রতিবাদ ও জুলাই গণহত্যার বিচার দাবি ছাত্রপক্ষের
Published: 22nd, March 2025 GMT
ফিলিস্তিনের নিরীহ মানুষের ওপর ইসরায়েলের দখলদার বাহিনীর ন্যাক্কারজনক হামলার প্রতিবাদ ও জুলাই অভ্যূত্থানে গণহত্যার বিচারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষ।
শনিবার (২২ শে মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় আমার বাংলাদেশ পার্টির ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মুহাম্মদ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় যুগ্ম-আহ্বায়ক আকিব হাসান, কেন্দ্রীয় যুগ্ম-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ফারজানা মিতু, সহকারী আহ্বায়ক সাইফুল্লাহ জিহাদ, প্রচার সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ।
আরো পড়ুন:
রাজনীতিতে ক্যান্টনমেন্টের হস্তক্ষেপ বাংলাদেশ মেনে নেবে না: হাসনাত
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবিতে বিক্ষোভ
সংবাদ সম্মেলনে আহ্বায়ক মুহাম্মদ প্রিন্স বলেন, “গত ৭৫ বছর ধরে ইসরাইল ফিলিস্তিনে গণহত্যা, নব্য-বর্ণবাদী আগ্রাসন এবং জাতিগত নিধন চালিয়ে আসছে। বিশেষত, গাজায় এ হিংস্রতা গত কয়েক মাসে আরো তীব্র হয়ে উঠেছে। ১৮ মার্চ থেকে পুনরায় শুরু হওয়া গণহত্যা অব্যাহত রয়েছে। যুদ্ধবিরতির নামে যে প্রহসন চলছে, তা কার্যকর নয়। আমরা স্পষ্টভাবে জানাচ্ছি, ফিলিস্তিন সংকটের একমাত্র সমাধান হলো একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র। ছাত্রপক্ষ ফিলিস্তিনের জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে জাতিসংঘ এবং ওয়াইসির কাছে দ্রুত যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছে।”
যুগ্ম-আহ্বায়ক আকিব হাসান বলেন, “গত বছর জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকের সময় আমরা ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত গণহত্যার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছি। তখন বর্তমান সরকার এবং তাদের স্বৈরাচারীনীতির অধীনে ছাত্র-জনতার ওপর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের কথা তুলে ধরা হয়েছে। এ গণহত্যায় অনেক নিরপরাধ ছাত্র-জনতা নিহত হয়েছে। যার বিস্তারিত বিবরণ জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। ছাত্রপক্ষ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, এই দেশের মাটিতে আর কোনো স্বৈরাচারের ঠাঁই হবে না। কেউ স্বৈরাচার হতে চাইলে ছাত্র-জনতা তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।”
যুগ্ম-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ফারজানা মিতু বলেন, “বর্তমানে আওয়ামী লীগের শাসনে বিরোধী মতাবলম্বী এবং ভিন্নমতাবলম্বী নাগরিকদের ওপর চলমান গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, বিডিআর-শাপলা-জুলাই গণহত্যার বিচার দাবি করে আমরা জাতিসংঘের কাছে একটি শক্তিশালী অবস্থান গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। গত ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে এই ধরনের অমানবিক কার্যকলাপ চলছে। যেটা মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণতন্ত্র পরিপন্থী।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রপক ষ গণহত য র
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)