ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে গাইবান্ধায় বিক্ষোভ
Published: 22nd, March 2025 GMT
যুদ্ধবিরতি অগ্রাহ্য করে ফিলিস্তিনের ঘুমন্ত নিরস্ত্র মানুষের উপর মার্কিন-ইসরাইল সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বর্বরোচিত গণহত্যার প্রতিবাদে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট গাইবান্ধা জেলা শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২২ মার্চ) দুপুরে সদর উপজেলার দারিয়াপুর বন্দরে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। পরে সেখানে সমাবেশ করেন তারা।
দারিয়াপুর অঞ্চল শাখার সংগঠক ধনঞ্জয় কুমার নীহারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন সংগঠনের জেলা সভাপতি পরমানন্দ দাস, সাধারণ সম্পাদক রাহেলা সিদ্দিকা, কামরুল হাসান বসুনিয়া, মোখলেছুর রহমান, কল্লোল কুমার বর্মন, তাসিফ আহমেদ, জিহাদ হোসেন প্রমুখ। এর আগে তারা ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কুশপুত্তলিকা দাহ করেন।
বক্তারা বলেন, ‘‘অবিলম্বে ফিলিস্তিনে এই নৃশংস হামলা বন্ধ করতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে দাবি, আপনারা এই ইসরাইলকে থামান এবং নিরীহ মানুষদের পাশে দাঁড়ান, তাদের রক্ষা করুন। তারা পুঁজিবাদী বাহিনী এবং আমেরিকার মদদে এই হামলা চালাচ্ছে।’’
তারা আরো বলেন, ‘‘পার্শ্ববর্তী দেশসহ সবার প্রতি আহ্বান, আপনারা এগিয়ে আসুন।’’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট গাইবান্ধা জেলা শাখার সভাপতি পরমানন্দ দাস বলেন, ‘‘যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরাইল যে হামলা করছে, সেটি গণহত্যা। কোলের শিশু সন্তানদের তারা পাখির মতো হত্যা করছে। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ফিলিস্তিনের ছোট, বড়, বৃদ্ধ এদিক সেদিক ছোটাছুটি করছে। এর পিছনে সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকার মদদ রয়েছে। হামলায় আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পর্যন্ত নেওয়ার উপায় নেই। মিসাইল দিয়ে হাসপাতালগুলো ধ্বংস করা হচ্ছে, যাতে সেখানকার মানুষ চিকিৎসার অভাবে মারা যায়।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘ফিলিস্তিনে খাবার ও পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এটি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে নির্মম এবং ভয়াবহ।’’
অবিলম্বে এই হামলা বন্ধ করতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
ঢাকা/মাসুম/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ