প্লট বরাদ্দ দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে এই অভিযোগপত্র জমা দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার ওই অভিযোগপত্র দেখেছেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন। অভিযোগপত্রের বিষয়ে আগামী ১০ এপ্রিল শুনানির দিন ধার্য রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টসূত্রগুলো প্রথম আলোকে নিশ্চিত করে।

গত ১০ মার্চ শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা ও তাঁদের পরিবারের চার সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) অনুমোদন দেয় দুদক। অভিযোগপত্রে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর নাম রয়েছে।

তথ্য গোপন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ঢাকার পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা করে মোট ২০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে গত জানুয়ারিতে শেখ হাসিনা ও তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা করে দুদক। এ দুই মামলায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মকর্তাসহ মোট ২৩ জনকে আসামি করা হয়।

দুদক বলেছে, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে শেখ হাসিনা নিজ নামে ১০ কাঠার একটি প্লট বরাদ্দ নেন। এই অভিযোগে তাঁকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছে। ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে একই প্রকল্পে তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নামে ১০ কাঠার আরেকটি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগে জয়কে প্রধান আসামি ও শেখ হাসিনাকে সহযোগী আসামি করে অপর মামলাটি করা হয়।

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে মোট ছয় মামলায় শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়েছে।

আরও পড়ুনশেখ হাসিনার স্বার্থসংশ্লিষ্ট আরও ৩১ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ, জমা অর্থের পরিমাণ ৩৯৪ কোটি টাকা১৮ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রকল প ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ