মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাবেক পুত্রবধূ ভেনেসা ট্রাম্পের সঙ্গে প্রেম করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গলফার টাইগার উডস। গত রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভেনেসার সঙ্গে তোলা একটি ছবি পোস্ট করে উডস প্রেমের এই ঘোষণা দেন। এমন সময় উডস এই ঘোষণা দিলেন, যার কয়েক সপ্তাহ ধরে তাঁর ও ভেনেসার প্রেমের গুঞ্জনের কথা গসিপ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছিল।

৪৭ বছর বয়সী ভেনেসা ট্রাম্পের বড় ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়রের সঙ্গে ১৩ বছরের বৈবাহিক জীবন কাটান। ২০১৮ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এই দম্পতির পাঁচ সন্তান রয়েছে। অন্যদিকে টাইগার উডসের বয়স ৪৯ বছর। প্রথম স্ত্রী এলিন নর্ডেগ্রেনের সঙ্গে টাইগারের ছয় বছরের দাম্পত্যজীবনের ইতি ঘটে ২০১০ সালে। এই দম্পতির দুটি সন্তান রয়েছে।

ভেনেসাকে নিয়ে দেওয়া ওই পোস্টে উডস লেখেন, ‘ভালোবাসা বাতাসে ভেসে বেড়ায়। তুমি পাশে থাকলে জীবনটা আরও সুন্দর হয়। আমরা একসঙ্গে আমাদের সামনের যাত্রায় এগিয়ে যাব।’

১৫টি বড় চ্যাম্পিয়নশিপ জয় করা উডসের ২০০০ সালের দিকে বৈবাহিক সম্পর্ক গড়া নিয়ে বিশ্বাসঘাতকতা ও যৌন কেলেঙ্কারির খবর প্রকাশ পেয়েছিল। যার নেতিবাচক প্রভাব তাঁর খেলোয়াড়ি জীবনের ওপরও পড়ে। এর পর থেকে উডস তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের গোপনীয়তার ক্ষেত্রে বেশ সতর্কতা অবলম্বন করে আসছিলেন। তিনি নিজেকে যৌন আসক্তি নিরাময়কেন্দ্রেও ভর্তি করিয়েছিলেন।

এর আগে উডস বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন স্কি রেসার লিন্ডসে ভন ও তাঁর সাবেক রেস্তোরাঁ ব্যবস্থাপক অ্যারিকা হারম্যানের সঙ্গে সম্পর্কের কথা ঘোষণা করেছিলেন। এর মধ্যে হারম্যানের সঙ্গে উডসের সম্পর্কের ইতি ঘটে খারাপ ঘটনার মধ্য দিয়ে। হারম্যান ২০২৩ সালে উডস ও তাঁর ট্রাস্টের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। যদিও পরে তিনি তা প্রত্যাহার করে নেন।

মার্কিন গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, টাইগার উডসের সন্তান ও ভেনেসার সন্তানেরা একই স্কুলে পড়ে।

মজার বিষয় হলো, উডস ও ভেনেসার সন্তানদের মধ্যেও জুনিয়র গলফার রয়েছে। ভেনেসার ১৭ বছর বয়সী মেয়ে কাই ট্রাম্প ২০২৬ সালে মিয়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ে কলেজিয়েট গলফ খেলার ঘোষণা দিয়েছে। সে ও উডসের ছেলে চার্লি উডস দুজনেই গত সপ্তাহে দক্ষিণ ক্যারোলাইনায় একটি জুনিয়র টুর্নামেন্টে খেলেছিল।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও একসময়ের শীর্ষ গলফার উডসের রয়েছে দারুণ যোগাযোগ। গত মাসেও বেশ কয়েকবার তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে গলফ খেলেছেন। এর আগে গত মাসে তিনি হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও পেশাদার গলফারস অ্যাসোসিয়েশনের (পিজিএ) প্রধানদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নেন। ২০১৯ সালে প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ট্রাম্প উডসকে প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম পরিয়ে দিয়েছিলেন।

এ মাসের শুরুতে উডস তাঁর পায়ের গোড়ালির রগ অ্যাকিলিস টেন্ডনের আঘাতের কথা জানান। ফলে তিনি পেশাদার গলফ প্রতিযোগিতা থেকে দূরে রয়েছেন। কবে আবার মাঠে ফিরবেন, তাঁরও কোনো ঘোষণা দেননি। এ ছাড়া গত মাসে তাঁর মা কুলতিদার মৃত্যু হয়। এ কারণে তিনি চলতি মৌসুমের পিজিএ ট্যুর ইভেন্টেও অংশ নেননি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গলফ র

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ