শেখ মুজিবের জন্য দোয়া চাওয়া উপসচিব নমিতা দে ওএসডি
Published: 25th, March 2025 GMT
মহান স্বাধীনতা দিবসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনায় মসজিদে বিশেষ দোয়ার আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সচিব নমিতা দে। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) ‘টক অব দ্যা টাউন’ এ পরিণত হয় তার এই চিঠিটি। বিষয়টি নিয়ে রাইজিংবিডিডটকম ও কয়েকটি গণমাধ্যমে নিউজ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তাকে ওএসডি করা হয়েছে। যিনি টাইপ করেছেন সেই প্রশাসনিক কর্মকর্তা হামিদা আক্তারকে শোকজ করা হয়েছে।
গত ২০ মার্চ তার স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে মসজিদগুলোতে বঙ্গবন্ধুর আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া আয়োজনের অনুরোধ জানানো হয়। তবে চিঠিটি প্রকাশের পর সমালোচনা শুরু হলে পরে তা সংশোধন করা হয় এবং শেখ মুজিবুর রহমানের নামটি বাদ দেওয়া হয়।
সিটি কর্পোরেশনের পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘‘আগামী ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৫। সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিষয়টি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের অংশ হিসেবে, ওই দিন সুবিধাজনক সময়ে আপনার মসজিদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা, দেশ ও জাতির উন্নতি এবং মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে বিশেষ মোনাজাত করার জন্য অনুরোধ করা হলো।’’
এ বিষয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সচিব (উপসচিব) নমিতা দে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘ভুলবশত গতবারের চিঠি কপি-পেস্ট করতে গিয়ে টাইপিং মিসটেক হয়েছিল। তাড়াহুড়ো করে স্বাক্ষর করেছি। পরে ভুল ধরার পর তা সংশোধন করা হয়।’’
আপনি এর দায় এড়াতে পারেন কি-না এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘না দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। পরে সংশোধন করে দিয়েছি।’’
সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, নমিতা দে দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে কর্মরত। বিগত সরকারের সময় আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে তিনি সম্পত্তি কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছেন। পূর্বের আওয়ামী সমর্থিত মেয়রদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। গত ৫ আগস্টের পর তাকে বদলী করা হলেও অদৃশ্য কারণে সেই বদলী কার্যকর হয়নি। বরং তাকে আরো গুরুত্বপূর্ণ সচিব পদে পদায়ন করা হয়। গত ১৩ নভেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ মামুন শিবলী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে নমিতা দে কে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়। কিন্ত তিনি সেই পদে যোগ না দিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনেরই থেকে যান।
এ বিষয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার সরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হলে নমিতা দে কে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়। মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আবুল হায়াত মো.
ঢাকা/রেজাউল/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নিষেধাজ্ঞার মধ্যে বহর নিয়ে সাবেক যুবদল নেতার সুন্দরবন ভ্রমণ
জীব ও প্রাণ-বৈচিত্র্য রক্ষার অংশ হিসেবে সুন্দরবনকে বিশ্রাম দিতে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা চলছে। ১ জুন থেকে শুরু হওয়া নিষেধাজ্ঞা চলবে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। এই সময়ে বনজীবী থেকে শুরু করে পর্যটক, কেউই সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবেন না। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সুন্দরবন ঘুরেছেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন। তাঁর সফরসঙ্গী ছিলেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা যুবদল ও মৎস্যজীবী দলের অন্তত ৩০ নেতাকর্মী।
গত শুক্রবার তারা ভ্রমণে যান। সুন্দরবনের কলাগাছিয়া টহল ফাঁড়িতে অবস্থানকালে নিজেদের ছবি রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করার পর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সুন্দরবনে প্রবেশ নিয়ে জানতে চাইলে যুবদলের সাবেক নেতা আমিনুর রহমান জানান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক উপসচিব সুন্দরবনে যাওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। এডিসি পদমর্যাদার একজনের মাধ্যমে বন বিভাগের কাছ থেকে ১০ জনের অনুমতি মেলে। ওই দলে তিনি যুক্ত হওয়ার পর স্থানীয় কিছু কর্মী-সমর্থক তাঁর সঙ্গে ট্রলারে উঠে পড়েন। এ সময় তাদের আর নামিয়ে দেওয়া যায়নি।
উপসচিব বা তাঁর জন্য নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সুন্দরবনে যাওয়া উচিত ছিল কিনা– জানতে চাইলে আমিনুর বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা চলার তথ্য আমাদের জানানো হয়নি।’ কথা বলার জন্য ওই উপসচিবের নাম ও যোগাযোগ নম্বর চাইলে তিনি দেননি।
এ বিষয়ে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের জিয়াউর রহমান বলেন, এক উপসচিবের একান্ত সচিব (পিএস) পরিচয়ে ১০ জনের জন্য সুন্দরবন ভ্রমণের অনুমতি চাওয়া হয়। অনেকটা ‘অনুরোধে ঢেঁকি গেলা’র মতো করে তাদের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে একই সঙ্গে কয়েক রাজনৈতিক ব্যক্তির সুন্দরবনে যাওয়ার বিষয়টি তারা জানতে পারেন। ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের এমন আবদারে তারা অসহায় হয়ে পড়েন।