হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার ট্রাক চাপায় তাবলীগ জামাতের দুই জন সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অটোরিকশা চালকসহ আরো একজন। 

নিহত ব্যক্তিরা হলেন- সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকোনা গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে মো. মারুফ (৩৮) ও জামালপুর জেলার বকশিগঞ্জ উপজেলার আলীরপাড়া গ্রামের আহমেদ আলীর ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াহিদ (৭৫)। 

আহত ব্যক্তিরা হলেন- টাঙ্গাইল জেলার আল মামুন (৬৫) ও হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার মানিকা বাজারের মঞ্জুব উল্যার ছেলে অটোরিকশা চালক বাচ্চু মিয়া (৩০)। 

বুধবার (২৬ মার্চ) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আদিত্যপুর নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, তাবলীগ জামাতের ১২ জন সদস্য উপজেলার চলিতাতলা জামে মসজিদ পরিবর্তন করে আদিত্যপুর জামে মসজিদে যাওয়ার জন্য পায়ে হেঁটে রওনা হন। তাদের মধ্যে তিন জনকে সকলের আসবাবপত্র নিয়ে একটি অটোরিকশা দিয়ে পাঠানো হয়। 

এসময় অটোরিকশাটি মহাসড়কের আদিত্যপুর পৌঁছে রাস্তা ক্রসিং করার সময় সিলেটগামী একটি ট্রাক (ঢাকা মেট্রো ট ২২-৯৪১৮) অটোরিকশাটিকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলে দুই জন নিহত হন ও আহত হন আরো দুই জন। স্থানীয়রা আহতদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, “দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বাহুবল মডেল থানা পুলিশ, বাহুবল ফায়ার সার্ভিস ও শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ উপস্থিত হয়ে রাস্তার যান চলাচল স্বাভাবিক করেন। দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাক ও অটোরিকশা শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।”

ঢাকা/মামুন/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল র ব হ বল

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ