গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট কাঁচপুর শিল্পাঞ্চল শাখার কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বিকাল ৫ টায় কাঁচপুর চাঁদমহল সিনেমা হলের পেছনে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট কাঁচপুর শিল্পাঞ্চল শাখার কার্যালয়ে এ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। 

গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট কাঁচপুর শিল্পাঞ্চল শাখার সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন খানের সভাপতিত্বে কাউন্সিলে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লব। আরও বক্তব্য রাখেন গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট কাঁচপুর শিল্পাঞ্চল শাখার নেতা রুবেল, নবী হোসেন। 

নেতৃবৃন্দ বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যূত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। এরপর একটি অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনা করছে। ছাত্র-শ্রমিকের বুকের রক্তের বিনিময়ে এ অন্তর্বর্তী সরকার।

কিন্তু এ সরকারের সময়ও শ্রমিককে তার ন্যায্য পাওনার জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে। এখনও দাবী আদায়ের আন্দোলনে চলছে লাঠি পেটা, হচ্ছে শ্রমিক ছাঁটাই, মিথ্যা মামলা।

আজ ঢাকায় শ্রম ভবনে ১৪ মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলনরত স্টাইল ক্রাফট গার্মেন্টসের একজন শ্রমিক মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। দেশে নিত্যপণ্যের মূল্য অনেক বাড়লেও বাড়েনি শ্রমিকের আয়। শ্রমিক পায়নি গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার। 

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, নিত্যপণ্যের উচ্চ মূল্যের কারণে ঈদ নিয়ে শ্রমিকের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষ ঈদ আসলেই কেবল ভাবতে পারে পরিবার পরিজনের জন্য কিছু ভাল খাবার ও কিছু জামা কাপড় কেনার।

সরকার ২০ তারিখের মধ্যে বোনাস দেয়ার কথা বললেও এখনও বেশিরভাগ গার্মেন্টসে বোনাস হয়নি। মালিকরা ঈদের আগে বেতন-বোনাস নিয়ে কারখানাগুলোতে সংকট তৈরি করে। কিছু গার্মেন্টসে হাফ বোনাস দিলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে বোনাস না দিয়ে ৫০০/১০০০ টাকা বকশিশ দেয়। অনেকে তাও দেয় না।

নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানে বেসিকের সমান বোনাস দেয়া হয়। অথচ যাদের উৎপাদনের কারণে দেশে বৈদেশিক মূদ্রা আসে তাদের ঠিকমতো বোনাস দেয়া হয় না। শ্রমিকদের সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো পূর্ণ বোনাস দিতে হবে। ঈদের আগে শ্রমিকের মার্চ মাসের বেতন পাওয়া ন্যায্য।

অবিলম্বে শ্রমিকের পূর্ণ বোনাস, সকল বকেয়া ও মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ করতে হবে। বেতন বোনাস নিয়ে মালিকদের গড়িমসির কারণে শিল্প এলাকায় যদি শ্রমিক অসন্তোষ তৈরি হয় তার জন্য মালিক ও প্রশাসন দায়ী থাকবে। 

কাউন্সিলে আনোয়ার হোসেন খানকে সভাপতি ও নবী হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৩ সদস্যের কমিটি নির্বাচিত হয়। কমিটির অন্যান্যরা হলেনÑসহসভাপতি রুবেল হোসেন, সহসাধারণ সম্পাদক নিজামউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মারুফ হোসেন, দপ্তর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সুমন খান, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক শাহীন মিয়া, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সুমি আক্তার আলেয়া, সদস্য মোরশেদ আলম, আল আমিন, সাইফুল ইসলাম ও আরিফ হোসেন খান।  
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ গ র ম ন টস সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগের প্রস্তাব মাওবাদীদের
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত