ঈদের জামাত নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে ছুরিকাঘাত, নিহত ১
Published: 29th, March 2025 GMT
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় এক মসজিদে ঈদের জামাত নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে ছুরিঘাতে আব্দুল কাইয়ুম (৫৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। শুক্রবার রাতে উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের সদরঘাট দক্ষিণ পাড়া জামে মসজিদের মধ্যে তারাবি নামাজে কথা কাটাকাটির জেরে এই ঘটনা ঘটনা বলে জানা গেছে।
নিহত আব্দুল কাইয়ুম দেবপাড়া ইউনিয়নের সদরঘাট দক্ষিণ পাড়ার মজুদ উল্লাহর ছেলে। আর ছুরিকাঘাতে অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মুজাহিদ আলী (৩৫)। তিনি একই গ্রামের কাজী সুন্দর আলীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, মসজিদের মধ্যে তারাবি নামাজের সময় আব্দুল কাইয়ুম ও মুজাহিদ আলীর কথা কাটাকাটি হয়। পরে বাড়ি ফেরার পথে কাইয়ূমকে ছুরিকাঘাত করেন মুজাহিদ আলী। এতে সে গুরুতর আহত হলে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাত ১২টার দিকে মারা যান তিনি। এ ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহ রিয়াজ নাদির সুমন বলেন, দুইজনের মধ্যে ঈদের জামাত সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে এ ঘটনা হয়েছে বলে শুনেছি। আমি ঘটনাস্থলে যাচ্ছি।
নবীগঞ্জ থানার ওসি কামাল হোসেন সমকালকে বলেন, আমি এখন ঘটনাস্থলে আছি। পুলিশ এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছে। নিহতের মরদেহ থানায় নেওয়া হবে, তারপর সুরতহাল করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ছ র ক ঘ ত হত য
এছাড়াও পড়ুন:
একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।
চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।
শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।
আরো পড়ুন:
বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি
ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা
সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।
শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’
শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’
চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’
ঢাকা/রাজীব