কুয়াকাটায় ৬ লাখ পর্যটক সমাগমের প্রত্যাশা
Published: 29th, March 2025 GMT
ঈদুল ফিতর ও পয়লা বৈশাখের ছুটিকে কেন্দ্র করে সমুদ্রকন্যা খ্যাত কুয়াকাটাকে নতুন রূপে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। পর্যটকদের স্বাগত জানাতে স্থানীয় প্রশাসন, ব্যবসায়ী ও ট্যুরিস্ট পুলিশ একযোগে কাজ করে যাচ্ছে।
বিগত বছরগুলোতে ঈদ পরবর্তী টানা ১৫ দিন লাখ লাখ পর্যটকে মুখরিত ছিল কুয়াকাটা। এবারো তেমনটাই আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের ধারণা, ঈদের দিন থেকে পরবর্তী ছয়দিন ৬ লাখ পর্যটক সমাগম হতে পারে।
ইতোমধ্যে আগাম বুকিং হয়েছে কুয়াকাটার অধিকাংশ হোটেল-মোটেল। আগত পর্যটকদের বরণে নতুন রূপে সাজানো হয়েছে সবকিছু বলে জানিয়েছেন ট্যুর অপারেটরস এ্যাসোশিয়েশন অফ কুয়াকাটার (টোয়াক) সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার।
আরো পড়ুন:
পর্যটক বরণে নতুন সাজে কক্সবাজার
ব্যস্ততা বেড়েছে রাঙামাটির তাঁত কারখানাগুলোতে
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সৈকতে বেঞ্চি থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তাদের দোকান সাজানোয় ব্যস্ত। অনেকে আবার নিজেদের দোকানের চেয়ার-টেবিল মেরামত করছিলেন। কসমেটিক্স এবং গার্মেন্টেসের দোকানগুলোতে নতুন পোশাকের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের কসমেটিক্স প্রদর্শন করতে দেখা গেছে দোকানিদের। হোটেল-মোটেল রং তুলির আচড়ে আকর্ষণীয় করে তুলছেন মালিকরা। মোট কথা ঈদ উপলক্ষে পর্যটক বরণে কোনো কমতি রাখছেন না পর্যটন সংশ্লিষ্ট ১৬টি পেশার সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা।
হোটেল ফ্রেন্ডস পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ সুমন বলেন, “আমাদের হোটেলের সব কক্ষ ঈদের দিন থেকে ৭ তারিখ পর্যন্ত আগাম বুকিং হয়ে গেছে। এখনো বুকিং হচ্ছে। আশা করছি, ১৫ তারিখ পর্যন্ত বুকিং হবে, তেমনই সরা পাচ্ছি। ইতোমধ্যে আমরা আমাদের হোটেল রং করা এবং ধোয়া মুছার কাজ শেষ করেছি।”
হোটেল রাজমহলের জেনারেল ম্যানেজার জুয়েল ফরাজী বলেন, “আমাদের হোটেলের ঈদের দিন থেকে পরবর্তী এক সপ্তাহ পর্যন্ত ৮০ ভাগ রুম বুকিং হয়েছে। ঈদের আরো দুইদিন বাকি, আশা করছি সব রুম বুকিং হবে। রোজায় পর্যটক শূন্য থাকার কারণে যে লোকসানে পড়েছি, আশা করছি তা কাটিয়ে উঠতে পারব।”
ট্যুর অপারেটর এ্যাশোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, “ঈদের ছয়দিনে আশা করছি, ৬ থেকে ৭ লাখ পর্যটকের আগমন ঘটতে পারে। পর্যটকদের বরণে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন ব্যবসায়ীরা।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের পুলিশ পরিদর্শক আহাদুজ্জামান বলেন, “পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে আমাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে। থানা পুলিশ এবং নৌ-পুলিশও মাঠে কাজ করবে। আশা করছি, ঈদের পরে আগত পর্যটকরা নিরাপদে তাদের ভ্রমণ উপভোগ করতে পারবেন।”
ঢাকা/ইমরান/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঈদ উৎসব ঈদ ব যবস য় র আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
ইতালির স্থাপত্য প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ থেকে যা উপস্থাপন করা হচ্ছে
বাংলাদেশের স্থাপত্যভাবনা, দক্ষতা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য তুলে ধরতে ইতালির ‘ভেনিস দ্বিবার্ষিক স্থাপত্য প্রদর্শনী ২০২৫’-এ অংশ নিতে যাচ্ছে ‘ভিত্তি স্থপতিবৃন্দ লিমিটেড’। ইউরোপিয়ান কালচারাল সেন্টারের আমন্ত্রণে আন্তর্জাতিক এই প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছে স্থাপত্য প্রতিষ্ঠানটি। দ্বিবার্ষিক প্রদর্শনীটির এবার ১৯তম আসর বসবে আগামী ১০ মে, চলবে পরবর্তী ছয় মাস।
এ নিয়েই আজ ২৮ এপ্রিল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। যেখানে দ্বিবার্ষিক স্থাপত্য প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের বিস্তারিত তুলে ধরেন ‘ভিত্তি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও স্থপতি ইকবাল হাবিব ও ইশতিয়াক জহির।
সংবাদ সম্মেলন শেষে স্থপতি ইকবাল হাবিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই বছর পরপর বিভিন্ন থিমে এই আয়োজন হয়। এখানে সারা পৃথিবীর স্থপতিদের আহ্বান জানানো হয়। তারপর আয়োজকেরা নিজেদের মতো করে অংশগ্রহণকারী নির্বাচন করেন। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল হাতিরঝিল প্রকল্পের জন্য। পরবর্তী সময়ে আমাদের অন্যান্য প্রকল্প দেখানোর পর আয়োজকেরা বড় পরিসরে প্রদর্শনীর জন্য আমাদের আমন্ত্রণ জানান।’
ভেনিসের এই প্রদর্শনীতে ‘ভিত্তি’ তাদের ৯টি প্রকল্প উপস্থাপন করবে। এসব প্রকল্প শহুরে ও প্রাকৃতিক পরিবেশের সমন্বয়, পুনর্গঠন ও সংরক্ষণের মাধ্যমে দেশীয় প্রয়োজনীয়তাকে সাংস্কৃতিক ধারাবাহিকতার সঙ্গে সমন্বয় করেছে। যার মধ্যে প্রদর্শনীতে স্থান পেতে যাচ্ছে ‘হাতিরঝিল’, ‘বাবুরাইল খাল পুনঃস্থাপন’, ‘১৮টি ডিএনসিসি পার্কের পুনরুদ্ধার’-এর মতো বৃহৎ পরিসরের নগর পরিকল্পনা প্রকল্প। পাশাপাশি স্থান পাচ্ছে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে স্থাপিত ‘একমাত্রা ডিবিবিএল একাডেমি’ প্রকল্প, পাবনার চাটমোহরের ‘বড়াল বিদ্যানিকেতন’, গাজীপুরের ‘বনের বাড়ি’ নামে আবাসিক বাড়ির মতো প্রকৃতির সঙ্গে অন্তর্ভুক্তিমূলক স্থাপত্য প্রকল্প। এসব প্রকল্পে গড়া স্থাপত্য পরিবেশবান্ধব স্থানিক উপকরণ ব্যবহার করে স্থাপত্যকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। এ ছাড়া স্থাপত্য ঐতিহ্য ও তাত্ত্বিক স্থাপনা পুনঃস্থাপনের প্রকল্প হিসেবে ‘ব্রিটিশ কাউন্সিল’, নারায়ণগঞ্জের ‘নগর ভবন’-এর মতো প্রকল্পের অন্তর্ভুক্তি থাকবে।
আরও পড়ুনসুলতানি আমলের মুদ্রাসহ হারিয়ে যাওয়া দেশ ও জনপদের মুদ্রাও আছে এই প্রদর্শনীতে ১৯ এপ্রিল ২০২৫ইকবাল হাবিব বলেন, ‘আমাদের প্রকল্পগুলোর মধ্য দিয়ে আমরা বলতে চাই, স্থাপত্যেরও গণতন্ত্রায়ণ দরকার। ওপর থেকে চাপিয়ে দিয়ে নয়, জনগণকে সম্পৃক্ত করে স্থাপত্যের চর্চা করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো। তিনি বলেন, ‘স্থাপত্যের নতুন পদ্ধতির জন্য বাংলাদেশকে বলব একটি বিশ্ব পরীক্ষাগার। কারণ, ছোট দেশ, অধিক জনসংখ্যা, জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্র প্রভাব, নির্মাণসামগ্রীর অভাব—এমন কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েও আপনারা (স্থপতিরা) নিজস্ব পদ্ধতিতে এসব অতিক্রম করছেন।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের (আইএবি) সভাপতি আবু সাঈদ এম আহমেদ। তিনি বলেন, ‘প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে শুধু ভিত্তি স্থপতিদের পরিচিতি হবে এমন নয়, এর মধ্যমে বাংলাদেশের স্থাপত্যের ব্র্যান্ডিং হবে। সারা দুনিয়া দেখবে, আমরা কী চিন্তা করি।’
আরও পড়ুনবাড়িটি দেখে অনেকেই রিসোর্ট ভেবে ভুল করতে পারেন০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪