শেষ মুহূর্তে কসমেটিকস জুয়েলারি ও জুতার দোকানে ভিড়
Published: 30th, March 2025 GMT
ঈদ উপলক্ষে মার্কেট, শপিংমল এবং ফুটপাতের দোকানগুলো জমজমাট। ঈদের আনন্দ রাঙিয়ে তুলতে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা চলছে। বিশেষ করে পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে চুড়ি, কানের দুল, জুতা কিনছেন তরুণীরা। ফলে অন্যান্য জিনিসের তুলনায় প্রসাধনী সামগ্রী ও জুতার দোকানে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
সবাই চায় সুন্দরভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে। ঈদে সাজগোজ নিয়ে বাড়তি আগ্রহ থাকে তরুণ-তরুণী উভয়েরই। যে কারণে সেলুন-পার্লারেও ভিড় বেড়েছে। নিজের রুচি ও আভিজাত্য প্রকাশ পায় সাজসজ্জায়। ঈদে নতুন পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে এ কারণে অনেকেই খুঁজছেন সাজসজ্জার সামগ্রী।
রবিবার (৩০ মার্চ) রাজধানীর খিলগাঁও তালতলা সিটি করপোরেশন মার্কেট, খিলগাঁও তিলপাপাড়া জামে মসজিদ মার্কেট, মৌচাক মার্কেট, ফর্চুন শপিংমল ও শান্তিনগরের ইস্টার্ন প্লাস শপিং কমপ্লেক্স ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এদিন মৌচাক মার্কেটের পাশের গলিতে অস্থায়ী দোকানগুলোতে নারীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বিক্রেতারা দম ফেলার ফুরসত পাচ্ছেন না। একই রকম চিত্র দেখা গেছে খিলগাঁও তালতলা সিটি করপোরেশন মার্কেটে। তবে শপিংমলগুলোতে তুলনামূলক ভিড় কম লক্ষ্য করা গেছে।
রাজধানীর বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন ডিজাইনের চুড়ি জোড়াপ্রতি ১০০ থেকে ৩ হাজার টাকায়, কানের দুল জোড়াপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা থেকে ২০০০ টাকায়, গহনার সেট ২০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকায়, মেকআপ বক্স ১৫০ থেকে ২০০০ টাকায়, লিপস্টিক ৫০ থেকে ১০০০ টাকায়, আইলাইনার ৩০০ থেকে ১২০০ টাকায়, মাস্কারা ১০০ থেকে ৪০০ টাকায়, জুতা-স্যান্ডেল ২০০ থেকে ৪০০০ টাকায় এবং চুলের ক্লিপ ১০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার ঈদ হচ্ছে চৈত্র মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে। এখন বেশ গরমও পড়েছে। তাই ঈদের সাজগোজের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আসবে। এবারের ঈদে হালকা ও স্নিগ্ধ সাজসজ্জার প্রতি তরুণীদের ঝোঁক রয়েছে।
বিক্রেতারা জানান, পোশাক-আশাক কেনাকাটা আগেই হয়েছে। শেষ সময়ে কসমেটিকস, জুয়েলারি ও জুতার দোকানে ভিড় বেশি রয়েছে। বেশিরভাগ তরুণী এখন কসমেটিকস, গহনা ও অলঙ্কার কিনছেন। বিশেষ করে পোশাকের সাথে ম্যাচিং করে লিপস্টিক, চুড়ি ও জুতা-স্যান্ডেল কিনছেন।
মৌচাক মার্কেটের গহনা ও কসমেটিকস বিক্রেতা ফিরোজ হাসান বলেন, ঈদের বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। ক্রেতাদের প্রচুর ভিড় রয়েছে। সকাল বা দুপুরের চেয়ে সন্ধ্যায় মার্কেটে ক্রেতারা বেশি আসছেন। ক্রেতারা পচ্ছন্দমতো কসমেটিকস, গহনা ও অলঙ্কার কিনছেন। কেউ কেউ পোশাকের সঙ্গে ম্যাচিং করে গহনা ও অলঙ্কার কিনছেন।
এই মার্কেটের ক্রেতা ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী রোদেলা রহমান বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে মৌচাক মার্কেটে কম দামের আকর্ষণীয় ডিজাইনের গহনা এসেছে, যা মধ্যবিত্তের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। আমি কানের দুল ও চুলে ক্লিপ কিনেছি। দাম ঠিকঠাক আছে।
খিলগাঁও তিলপাপাড়া জামে মসজিদ মার্কেটের চায়না সুজ দোকানের বিক্রেতা মো.
মার্কেট করতে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রামিসা রহমান বলেন, ঈদের বাজার করতে এসেছি, জুতা কিনেছি। এবার জুতার দাম বেশি মনে হচ্ছে। তবে দামাদামি করে নিতে পারলে ক্রেতা সঠিক দামে জুতা কিনতে পারবেন।
ঢাকা/এনটি/
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।