বিটিভিতে ‘আনন্দমেলা’, চ্যানেল আইয়ে টেলিফিল্ম ‘মিশন মুন্সিগঞ্জ’
Published: 31st, March 2025 GMT
ঈদ উপলক্ষে বিশেষ আয়োজন করেছে দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো। একক নাটক, চলচ্চিত্র, ধারাবাহিক নাটক, ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান, গানের অনুষ্ঠান, নৃত্যানুষ্ঠানসহ নানা বৈচিত্র্যময় আয়োজনে সাজানো হয়েছে চ্যানেলগুলোর অনুষ্ঠান। আজ ঈদের দিন প্রথম বিটিভি, এটিএন বাংলা এবং চ্যানেল আইয়ে কী কী আয়োজন থাকছে, তা নিয়ে বিনোদনের বিশেষ এই আয়োজন।
বিটিভি
সকাল ৭টা ২০ মিনিটে ‘নতুন ভোর’। সকাল ৮টায় শিশুতোষ ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান। সকাল ৯টায় বিশেষ নৃত্যানুষ্ঠান। সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে ‘বক্স অফিস’ (পর্ব-০১)। ১০টায় রান্নাবিষয়ক অনুষ্ঠান। সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘চাওয়া পাওয়া’। বেলা ১১টা ১০ মিনিটে শিশুতোষ নৃত্যানুষ্ঠান ‘নূপুরের ছন্দে’। বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে ‘ম্যাজিক শো’। দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে রম্য বিতর্ক। দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে দ্বৈত সংগীতানুষ্ঠান ‘শুধু দুজনায়’, অতিথি: নাসির, প্রিয়াংকা, পিয়াল হাসান, স্মরণ, রিজিয়া পারভীন, পলাশ, মুহিন খান, সুলতানা চৌধুরী ও মোমিন বিশ্বাস।
বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে দ্বৈত সংগীতানুষ্ঠান ‘গান আমার গান’, অতিথি: ইথুন বাবু, পরান আহসান, মৌসুমী চৌধুরী, আকলিমা মুক্তা, এস আই মিঠু। বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিটে ‘শহীদের রক্ত স্বাক্ষর’ (পর্ব-০১)। সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে ‘তারকাদের আড্ডা’। সন্ধ্যা ৭টায় ‘ব্যান্ড শো’। রাত ৮টা ৩০ মিনিটে ‘ছায়াছন্দ’। রাত ৯টায় বিশেষ নাটক। রাত ১০টায় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘আনন্দমেলা’। রাত ১১টা ৫ মিনিটে একক সংগীতানুষ্ঠান, শিল্পী: বেবী নাজনীন। রাত ১১টা ৩০ মিনিটে একক সংগীতানুষ্ঠান, শিল্পী: কনকচাঁপা।
এটিএন বাংলা
সকাল ৮টায় প্রভাতি অনুষ্ঠান ‘চায়ের চুমুকে’। বেলা ১টা ২৫ মিনিটে ছোটদের ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘হৈচৈ’। বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে কমেডি শো ‘হাউস নাম্বার ৪২০’। বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে বিশেষ নাটক ‘বউ বেশি বোঝে’। অভিনয়ে মোশাররফ করিম, তানিয়া বৃষ্টি। সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে নাটক ‘প্রেম ভাই’। অভিনয়ে তৌসিফ, তটিনী। রাত ৮টা ৫০ মিনিটে নাটক ঘরের কথা ঘরেই থাক। অভিনয়ে সালাহউদ্দিন লাভলু, আব্দুল্লাহ রানা, সুভাশিষ ভৌমিক, আঞ্জুমান আরা শিরিন, ইরফান সাজ্জাদ, সামিরা খান মাহি, সাইদুর রহমান, সুজাত শিমুল প্রমুখ। রাত ১০টা ৩০ মিনিটে ‘ঈদ বিনোদন মেলা’। রাত ১১টায় টেলিফিল্ম হৃদয়ে রেখেছি গোপনে। অভিনয়ে ইয়াশ রোহান, তটিনী।
চ্যানেল আইয়ে সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে রয়েছে ধারাবাহিক ‘মিশন মুন্সিগঞ্জ’। চ্যানেল আইয়ের সৌজন্যে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম য গ জ ন অন ষ ঠ ন চ য ন ল আইয় ৩০ ম ন ট ১০ ম ন ট
এছাড়াও পড়ুন:
‘ভোল পাল্টে’ সক্রিয় কিশোর গ্যাং, অতিষ্ঠ বাসিন্দারা
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চর আবাবিল ইউনিয়নের উদমারা এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাতে অতিষ্ঠ বাসিন্দারা। এলাকায় নারীদের উত্ত্যক্ত করা, মাদক সেবন, মারামারি, খুনসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের এসব সদস্যদের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত বছরের ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার ছত্রচ্ছায়ায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করত। তবে এখন ভোল পাল্টে স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ভিড়েছে তারা।
সম্প্রতি এলাকাটিতে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন জাহাঙ্গীর আলম (৫২) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। জাহাঙ্গীর আলম স্থানীয় মসজিদ কমিটির সভাপতি ছিলেন। মসজিদের পাশে জুয়ার আসর বসানো ও মাদক সেবনে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে তাঁর ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে। গত ৩ এপ্রিল তাঁর ওপর হামলা করা হয়। এরপর গত শনিবার তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
স্থানীয় বাসিন্দা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্বে রয়েছেন কয়েকজন স্থানীয় তরুণ। ওই তরুণেরা রাজনীতিতে যুক্ত থাকায় মিছিল-সমাবেশে কিশোরদের ব্যবহার করে আসছেন। ফলে স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতাও এসব কিশোরকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে প্রশ্রয় দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, আগে এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের নিয়ন্ত্রণ ছিল চর আবাবিল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম ও ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিদ্দিক সর্দারের হাতে। তাঁরা এসব কিশোরকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিতেন। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ওই কিশোরেরা ভোল পাল্টে বিএনপির কর্মসূচিতে সক্রিয় হচ্ছে। আবদুর রহিম নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি এসব তরুণকে নতুন করে আশ্রয়–প্রশ্রয় দিচ্ছেন। রহিম ইউনিয়ন বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হলেও তাঁর পদপদবি নেই।
জাহাঙ্গীর আলম খুনের ঘটনায় আবদুর রহিমকেও আসামি করা হয়। মামলার পর তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের আমি প্রশ্রয় দিচ্ছি—এমন অভিযোগ প্রায় করা হচ্ছে। তবে এসব অভিযোগ সত্য নয়। আমাকে হয়রানির উদ্দেশ্যে মামলায় জড়ানো হয়েছে।’
ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিদ্দিক সর্দার বলেন, ‘কিশোর গ্যাংকে আমি কখনো প্রশ্রয় দিইনি। তারা (কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা) আমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করত।’ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম আত্মগোপনে থাকায় তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
জানতে চাইলে রায়পুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জেড এম নাজমুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির দলীয় কোনো নেতা-কর্মী কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের প্রশ্রয় দিলে তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো নেতা-কর্মীর অপকর্মের দায় দল নেবে না।
জাহাঙ্গীর আলমের ওপর হামলার ঘটনায় গত ৭ এপ্রিল লক্ষ্মীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯ জনের নাম উল্লেখ ও ২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলার আবেদন করেন তাঁর স্ত্রী রাজিয়া বেগম। আদালত রায়পুর থানাকে মামলাটি গ্রহণের নির্দেশ দেন। মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, মসজিদের আশপাশে জুয়ার আসর ও মাদক সেবন করত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এসব বিষয়ের প্রতিবাদ করাকে কেন্দ্র করে সাব্বির হোসেন, জুবায়ের হোসেনসহ কয়েকজনের নেতৃত্বে ৮–১০ জন কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য জাহাঙ্গীর আলমের ওপর হামলা করেছেন। নিহত জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে শারমিন আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, মামলার পর আতঙ্কে দিন কাটছে তাঁর পরিবারের সদস্যদের। স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দিয়ে আসছে।
জানতে চাইলে রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, কিশোর অপরাধীদের বিরুদ্ধে পুলিশের ধারাবাহিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাঈন উদ্দিন পাঠান বলেন, কিশোর-তরুণদের খেলাধুলা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তাদের ফেরাতে না পারলে অপরাধ আরও বেড়ে যাবে। কেউ যাতে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে কিশোরদের ব্যবহার করতে না পারে, সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সবাইকে তৎপর থাকতে হবে।