ইঁদুর মারার ফাঁদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যু
Published: 4th, April 2025 GMT
চাঁদপুর মতলব দক্ষিণ উপজেলায় কৃষিজমিতে ইঁদুর মারার জন্য পাতা ফাঁদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়নপুর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের লক্ষ্মীপুর গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
লক্ষ্মীপুর গ্রামে মিজানুর রহমান মুন্সির ধানক্ষেতে সেচ পাম্প দিয়ে পানি দিতে যায় একই গ্রামের দরবেশ বাড়ির আলী আর্শাদের ছেলে শরিফ (২৮)। কৃষিজমিতে ইঁদুর মারার জন্য বিদ্যুতের লাইন টেনে ফাঁদ পেতে রাখা হয়েছিল। সেচ পাম্প চালু করতে পানি আনতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আহত হন শরিফ। পরে মিজানুর রহমান মুন্সির বাড়ির লোকজন তাকে মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত শরিফের দুলাভাই রাকিব বলেছেন, শরিফের মৃত্যুর খবর পেয়ে ছুটে এসেছি। জমির মালিক মিজান মুন্সি যদি ইঁদুর মারতে বিদ্যুতের ফাঁদ পেতে থাকেন, তাহলে ভোরবেলা খুলে ফেলতে হতো। কিন্তু, তিনি তা করেননি। এভাবে বিদ্যুতের লাইন টানা অপরাধ। মিজান মুন্সির এই ভুলের কারণেই শরিফের মৃত্যু হয়েছে।
জমির মালিক মিজানুর রহমান মুন্সির স্ত্রী নয়নমনি বেগম বলেন, শরিফ কীভাবে বিদুৎস্পৃষ্ট হয়েছে, তা আমরা জানি না।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং বিদুতের তার জব্দ করে থানায় নিয়েছে।
মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালেহ আহাম্মদ বলেন, শরিফের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা/জয়/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণের কিস্তি পরিশোধ নিয়ে বিরোধ, চাচার মারধরে ভাতিজার মৃত্যুর অভিযোগ
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ব্রাহ্মণচক গ্রামে চাচার কিল–ঘুষি ও মারধরে ভাতিজার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মাইনউদ্দিন সরকার (৪৫) উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণচক গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওই গ্রামের রুহুল আমিন সরকারের ছেলে। তিনি পেশায় বিদ্যুৎমিস্ত্রি ছিলেন। অভিযুক্ত মো. ফারুক (৫০) তাঁর চাচা। ঘটনার পর পুলিশ ফারুকের স্ত্রী মাফিয়া বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
পুলিশ ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে যৌথভাবে নেওয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা নিয়ে চাচা–ভাতিজার মধ্যে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটে।
একই সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় একটি এনজিও থেকে কয়েক মাস আগে ফারুক ও মাইনউদ্দিন যৌথভাবে এক লাখ টাকা ঋণ নেন। ঋণের কিস্তি সমানভাবে পরিশোধের সিদ্ধান্ত হয়। চলতি মাসের কিস্তির ১৫ হাজার টাকা ফারুকের মাধ্যমে জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মাইনউদ্দিন নিজেই ওই টাকা জমা দেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়েছিল। আগেও তাঁদের মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে বিরোধ ছিল। আজ সকালে কিস্তি পরিশোধ নিয়ে দুজনের মধ্যে আবারও কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ফারুক ভাতিজা মাইনউদ্দিনের মাথা, মুখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল–ঘুষি মারেন। এতে মাইনউদ্দিন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অচেতন হয়ে যান। আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে ফারুক পালিয়ে যান।
পরে গুরুতর আহত অবস্থায় মাইনউদ্দিনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সকাল ১০টার দিকে পুলিশ তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
নিহত মাইনউদ্দিনের চাচাতো ভাই মোহাম্মদ লিয়াকত হোসেন বলেন, মো. ফারুকের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা আছে। তিনি নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ ও পূর্বশত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে কিল–ঘুষি মেরে ও মারধর করে তাঁর চাচাতো ভাইকে খুন করেন ফারুক।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য ফারুকের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে, তা বন্ধ পাওয়া যায়।
মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল হক বলেন, ওই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তির স্ত্রী মাফিয়া বেগমকে আটক করা হয়েছে। এটি হত্যাকাণ্ড বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ বা জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটকের চেষ্টা চলছে।