ভারতের পার্লামেন্টে মুসলিম সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা আইন সংশোধনের একটি বিতর্কিত বিল পাস হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দুত্ববাদী সরকারের উত্থাপিত এই বিলের বিরোধিতা করেছে মুসলিম সংগঠন ও বিরোধী দলগুলো।

বিলে প্রস্তাব করা হয়েছে, ‘ওয়াক্‌ফ’ সম্পত্তি পরিচালনা বোর্ডে অমুসলিমদেরও রাখা যাবে। এ ছাড়া ওয়াক্‌ফ করা জমির মালিকানা যাচাইয়ে সরকারের ক্ষমতাও বাড়বে। সরকার অবশ্য বলছে, এতে দুর্নীতি কমবে, ব্যবস্থাপনা হবে সুষ্ঠু আর বৈচিত্র্য বাড়বে। কিন্তু সমালোচকেরা বলছেন, এই বিল মুসলিম সংখ্যালঘুদের অধিকারে আঘাত হানবে। আর সেই সুযোগে পুরোনো মসজিদসহ বহু ঐতিহাসিক সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে।

বিলটি নিয়ে ভারতের লোকসভা ও রাজ্যসভায় উত্তপ্ত বিতর্ক হয়। বুধ থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত চলেছে লোকসভায় আলোচনা। আর রাজ্যসভায় টানা ১৬ ঘণ্টা ধরে হয়েছে তীব্র বাগ্‌বিতণ্ডা।

বিরোধী দল কংগ্রেস বলেছে, এই বিল অসাংবিধানিক এবং মুসলিমদের প্রতি বৈষম্যমূলক। লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলেও মোদির বিজেপি মিত্রদলগুলোর সমর্থনে বিলটি পাস করাতে সক্ষম হয়েছে।

লোকসভায় এই বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন ২৮৮ জন সংসদ সদস্য, আর বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ২৩২ জন। রাজ্যসভায় ১২৮ জন বিলের পক্ষে ও ৯৫ জন এর বিরুদ্ধে ভোট দেন। এখন বিলটি আইনে পরিণত করবার জন্য রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।

১৯৯৫ সালের একটি আইন পরিবর্তনের জন্য বিলটি পেশ করেন সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। ওই আইনে ওয়াক্‌ফ সম্পত্তির নিয়মকানুন নির্ধারণ করা হয়েছিল। তা পরিচালনার জন্য গঠন করা হয়েছিল রাজ্যভিত্তিক বোর্ড।

অনেক মুসলিম সংগঠন ও বিরোধী দল বলছে, এই বিল বৈষম্যমূলক, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রসূত এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার খর্ব করার চেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়।

বিলটি প্রথম সংসদে পেশ করা হয় গত বছর। বিরোধী দলগুলো বলছে, এরপর তারা কিছু সংশোধনী প্রস্তাব দিলেও সেগুলো আমলে নেওয়া হয়নি। সরকারের দাবি, বিরোধীরা গুজব ছড়াচ্ছে এবং ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা বাধাগ্রস্ত করছে।

ওয়াক্‌ফ কী

ওয়াক্‌ফ হলো ইসলামি দানের একটি প্রাচীন ব্যবস্থা। ওয়াক্‌ফের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি স্থায়ীভাবে সাধারণত জমির মতো কোনো সম্পত্তি ধর্মীয় বা জনহিতকর কাজে ব্যবহারের জন্য দান করেন। এ ধরনের ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি বিক্রি করা বা কারও নামে হস্তান্তর করা যায় না।

ভারতে ওয়াক্‌ফ বোর্ডগুলোর অধীন প্রায় ৮ লাখ ৭২ হাজারটি সম্পত্তি আছে। এগুলোর মোট আয়তন প্রায় ১০ লাখ একর। এসবের মোট মূল্য প্রায় ১৪ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার বলে ধারণা করা হয়। এসব সম্পত্তির অনেকগুলোর ইতিহাস শত শত বছর পুরোনো। অধিকাংশই ব্যবহার করা হয় মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান ও এতিমখানার মতো জনকল্যাণমূলক কাজে।

নতুন আইন ওয়াক্‌ফ পরিচালনা বদলে দেবে

ভারতে ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি পরিচালনা করে আধা সরকারি বোর্ড। এই বোর্ড প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে আলাদাভাবে গঠিত। নতুন আইনে বলা হয়েছে, এসব বোর্ডে অমুসলিম সদস্য অন্তর্ভুক্ত করা বাধ্যতামূলক হবে।

এখন পর্যন্ত ওয়াক্‌ফ বোর্ডে কেবল মুসলিমরাই সদস্য হন। ভারতে অন্য ধর্মীয় দাতব্য সংস্থাগুলোও নিজ নিজ ধর্মাবলম্বীদের দিয়েই পরিচালিত হয়।

সংসদীয় বিতর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, অমুসলিম সদস্যরা কেবল প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করবেন এবং সম্পত্তি পরিচালনায় সহায়তা করবেন। ধর্মীয় বিষয়ে তাঁরা হস্তক্ষেপ করবেন না। তিনি বলেন,‘অমুসলিম সদস্যরা শুধু নজরদারি করবেন যে বোর্ড আইন মেনে চলছে কি না আর দানকৃত সম্পত্তি যথাযথ কাজে লাগছে কি না।’

তবে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের মতো সংগঠনগুলো বলছে, এই বক্তব্য ইসলামি ওয়াক্‌ফ ব্যবস্থার মূল চেতনার পরিপন্থী। তাদের মতে, ওয়াক্‌ফ বোর্ডের পরিচালনা মুসলমানদের দ্বারাই হওয়া উচিত। তারা একে মুসলিম নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকারে সরাসরি হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। এই বিলের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়েছে এই বোর্ড।

কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, ‘যখন হিন্দু মন্দির পরিচালনা কমিটিতে অন্য ধর্মাবলম্বীরা স্থান পান না, তখন ওয়াক্‌ফ বোর্ডে অমুসলিমদের রাখা হবে কেন?’

গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলেজিয়াস ফ্রিডম বার্ষিক প্রতিবেদনে জানায়, গত নির্বাচনের সময় মোদি ও তাঁর দল মুসলমান ও অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুর বিরুদ্ধে ‘ঘৃণা ছাড়ানো বক্তব্য’ ও ‘ভুল তথ্য’ ছড়িয়েছে।

সবচেয়ে বিতর্কিত পরিবর্তনগুলোর একটি হলো মালিকানাসংক্রান্ত নিয়মে পরিবর্তন। এর ফলে বহু পুরোনো মসজিদ, দরগাহ বা কবরস্থানের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ, বহু সম্পত্তিই একসময় মৌখিকভাবে বা কাগজপত্র ছাড়াই ওয়াক্‌ফ হিসেবে দান করা হয়েছিল। এসবের অনেকেরই কোনো আইনি নথি নেই, যেগুলো কয়েক দশক বা এমনকি শত শত বছর আগের।

মালিকানা নিয়ে শুরু হবে দ্বন্দ্ব

নতুন আইনের অন্য পরিবর্তনগুলো শত শত বছর আগে প্রতিষ্ঠিত ওয়াক্‌ফ জমির ওপর গড়া মসজিদগুলোর ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত করে তুলতে পারে। চরমপন্থী হিন্দু সংগঠনগুলো ভারতের নানা প্রান্তে বেশ কিছু মসজিদের ওপর তাদের মন্দির আছে বলে দাবি জানিয়ে আসছে। তাদের দাবি, এসব মসজিদ পুরোনো হিন্দু মন্দির ভেঙে তৈরি। এ ধরনের অনেক মামলা আদালতে বিচারাধীন।

নতুন আইন অনুযায়ী, এখন থেকে ওয়াক্‌ফ বোর্ডকে তাদের জমির মালিকানা প্রমাণ করতে জেলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তার অনুমোদন নিতে হবে। সমালোচকদের মতে, এর ফলে বোর্ডের ক্ষমতা খর্ব হবে। আর তা মুসলমানদের জমি কেড়ে নেওয়ার পথ তৈরি করবে। বোর্ডগুলোকে কতবার এই রকম জমির দাবির বৈধতা প্রমাণ করতে বলা হবে, তা-ও স্পষ্ট নয়।

বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী এক্সে লিখেছেন, ‘ওয়াক্‌ফ (সংশোধনী) বিল মুসলিমদের কোণঠাসা করার এবং তাঁদের ব্যক্তিগত আইন ও সম্পত্তির অধিকার কেড়ে নেওয়ার হাতিয়ার।’ তিনি এটিকে সংবিধানের ওপর ‘আক্রমণ’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, ‘বিজেপি এবং তাদের মিত্ররা এখন মুসলিমদের নিশানা করছে। কিন্তু ভবিষ্যতে এটি অন্য সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধেও ব্যবহৃত হতে পারে।’

মুসলমানদের উদ্বেগ

অনেক মুসলমানই স্বীকার করেন যে ওয়াক্‌ফ সম্পত্তিতে দুর্নীতি, দখলদারি আর অব্যবস্থাপনা রয়েছে। তবে তাঁরা আশঙ্কা করছেন, নতুন আইনের ফলে ভারতের হিন্দুত্ববাদী সরকার মুসলিমদের সম্পত্তির ওপর আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে। আর এখন তো ভারতে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও বৈষম্য দিন দিন বাড়ছে।

নরেন্দ্র মোদির শাসনে মুসলমানরা প্রায়ই টার্গেট হচ্ছেন। তাঁদের খাবার, পোশাক, এমনকি হিন্দু-মুসলিম বৈবাহিক সম্পর্ক নিয়েও আক্রমণের শিকার হচ্ছেন তাঁরা।

গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা কমিশন (ইউএস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলেজিয়াস ফ্রিডম) তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে জানায়, ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত নির্বাচনের সময় মোদি ও তাঁর দল মুসলমান ও অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুর বিরুদ্ধে ‘ঘৃণা ছাড়ানো বক্তব্য’ ও ‘ভুল তথ্য’ ছড়িয়েছে।

তবে ভারতের সরকার বলছে, দেশটি গণতান্ত্রিক নীতিতে পরিচালিত হয় এবং সেখানে কারও সঙ্গে কোনো বৈষম্য নেই।

ভারতের মোট ১৪০ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে ১৪ শতাংশ মুসলমান। তাঁরা ভারতের সবচেয়ে বড় সংখ্যালঘু গোষ্ঠী হলেও অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে। ২০১৩ সালের এক সরকারি জরিপে দেখা গেছে, মুসলমানরা দেশটির সবচেয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর একটি।

এজাজ হুসেইন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক, অ্যাসোসিয়েট প্রেস

শেখ সালিক অ্যাসোসিয়েট প্রেসে ভারত ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ে লেখেন

অ্যাসোসিয়েট প্রেস থেকে নেওয়া ইংরেজির অনুবাদ

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম সলম ন এই ব ল পর চ ল র জন য সরক র র ওপর মসজ দ সবচ য় করব ন র একট সদস য ল কসভ

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ