গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান নৃশংস হামলা ও গণহত্যার প্রতিবাদে সব ধরনের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।

এছাড়া মুসলিম নেতাদের প্রতি নিরীহ ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বানে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা করা হয়েছে।

রবিবার (৬ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের পক্ষ থেকে নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি এবং হামাস ঘোষিত ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াইড জেনারেল স্ট্রাইক’ আহ্বানকে পূর্ণ সমর্থন ও সম্মান জানিয়ে এ ঘোষণা দেন তারা।

এ বিষয়ে ওয়ারিয়র্স অব জুলাই এর সহ-মুখপাত্র এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো.

মাসুদ রানা বলেন, “গাজায় দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের দখলদার বাহিনী যেভাবে গণহত্যা চালাচ্ছে, তাতে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হচ্ছে। এ বিষয়ে আরব থেকে শুরু করে মুসলিম বিশ্বের চুপ থাকা কাপুরুষতার লক্ষণ। মুসলিম বিশ্বের নেতাদের কাছে অনুরোধ আপনারা গাঁজার পাশে দাঁড়ান।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, “আপনারা জানেন দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনে যে নৃশংস হামলা, গণহত্যা মার্কিন মদদে হচ্ছে, তা লক্ষণীয়। সর্বশেষ নতুন করিডোর ‘মোরাগ’ এর মধ্যে দিয়ে গাজা নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা চলছে। ইসরায়েলি আগ্রাসন ও মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে আগামীকাল বিশ্বব্যাপী ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে প্রতিবাদ জানাব। সবাইকে যোগদান করার আহ্বান র‌ইল।”

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩তম আর্বতনের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি এমকেএম রাকিব বলেন, “গাজাবাসীর উপর ইসরায়েলি নৃশংসতায় প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়, সে যে কোনো ধর্মের হোক না কেন। একজন মানুষ সুস্থ মস্তিষ্কে এ অমানবিকতা সহ্য করতে পারবে না। আমরা আশা করবো, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রুতই ইসরায়েলের এ হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেবেন এবং সরকারিভাবে ইসরায়েলি পণ্যের বিকল্প পন্থা অবলম্বন করবেন।”

অন্যদিকে, এ বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে সংহতি প্রকাশ করে ‘নো ওয়ার্ক’ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জবি শিক্ষক সমিতি। এছাড়া আগামীকাল সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে এক সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইস উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “গাজায় মুসলমানদের ওপর এ বর্বরোচিত হামলা সহ্য করা যায় না। আমরা গাজাবাসীদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে এ কর্মসূচি নিয়েছি। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমাদের এ উদ্যোগে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগামী তিন দিন বিশ্বব্যাপী বিক্ষোভের আহ্বান হামাসের
  • গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬৫ হাজার ছাড়াল
  • গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের ‘কঠোরতম ভাষায়’ নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব
  • যারা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ চায়, তারা আদালতে অভিযোগ দিতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
  • ‘গাজায় গণহত্যা চলছে, আমি সেই গণহত্যার নিন্দা করছি’