গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ: কুবি শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন
Published: 6th, April 2025 GMT
গাজায় চলমান গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা আন্দোলনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা। এরই অংশ হিসেবে আগামীকাল সোমবার (৭ এপ্রিল) সব অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
রবিবার (৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টায় এক বিবৃতিতে তারা এ কর্মসূচি ঘোষণা দেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যখন একটি জনগোষ্ঠী বোমা হামলার শিকার হচ্ছে, অনাহারে মারা যাচ্ছে এবং নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে, তখন আমরা চুপ থাকতে রাজি নই। এটি একটি নৈতিক দায়িত্ব। চলুন, একসঙ্গে পর্দার গণ্ডি পেরিয়ে আমাদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরি- সংযোগ গড়ি, প্রতিবাদ করি, সংগঠিত হই এবং কার্যকর পদক্ষেপ নিই।
আরো পড়ুন:
নির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই কুবির সাবেক রেজিস্ট্রারকে শাস্তি দেওয়ার অভিযোগ
কুবির ইনকিলাব মঞ্চের নেতৃত্বে হান্নান-ওসমান
এ বিষয়ে লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী প্লাবন আহমেদ বলেন, “আমরা সবসময় ফিলিস্তিনের পাশে আছি। আমাদের সাধ্যমতো ইসরাইলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে ও ভাইদের সহায়তায় এগিয়ে আসতে চাই। দূর থেকে আমরা ফান্ড সংগ্রহ ও ইসরায়েলি পণ্য বয়কটের মাধ্যমে সহায়তা করতে পারি। এটা আমাদের ঈমানি দায়িত্ব। যারা এতে ব্যর্থ, তারা আমার মুসলিম ভাই নয়। ইসরাইলের চলমান বর্বরতার প্রতিবাদ হিসেবে আমরা আগামীকাল আমাদের ক্যাম্পাসে এ কর্মসূচি হাতে নিয়েছি।”
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সিনথিয়া রহমান বলেন, “আমরা সবসময় ফিলিস্তিনের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকব। দূর থেকে যতটুকু সম্ভব, তা দিয়েই তাদের সহায়তা করব—ফান্ড সংগ্রহ ও ইসরায়েলি পণ্য বয়কট করা এখন আমাদের ঈমানি দায়িত্ব। প্রয়োজনে যুদ্ধেও অংশ নিতে প্রস্তুত, ইনশাআল্লাহ।”
কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রিফাত আহমেদ হিমেল বলেন, “ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বর্বরতা চরমে পৌঁছেছে। আমেরিকার মদদে তারা ড্রোন হামলা, বিষাক্ত বোমা ব্যবহার ও নিরীহ মানুষ হত্যা করে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। এ হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করে ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে বিচার করতে হবে। আমরা, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, এ নৃশংসতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ