ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান বর্বরতার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। সোমবার (৭ এপ্রিল) সকাল থেকেই আয়োজিত এসব কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। রাইজিংবিডির বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতাদের পাঠানো খবরে থাকছে বিস্তারিত-

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান বর্বরতার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে সমাবেশ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। একইসঙ্গে সংহতি জানিয়ে ৩০টির অধিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেছেন। ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আয়োজনে সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

জনসংযোগ দপ্তরের প্রকাশক অধ্যাপক ড.

আখতার হোসেন মজুমদারের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন, উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান, রেজিস্ট্রার অধ্যপক ইফতেখারুল ইসলাম মাসুদ, ছাত্র উপদেষ্টা  আমিরুল ইসলাম, কলা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ফজলুল হক প্রমুখ।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)

গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলার প্রতিবাদে বেলা সাড়ে ১১টায় বুয়েটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করেছেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। এ সময় জেরুজালেম ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনিদের পূর্ণ অধিকার রয়েছে এবং তাদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বৈধ ও ন্যায্য বলে জানান তারা৷ 

মানববন্ধনে বুয়েটের শতাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বুয়েটের উপ-উপাচার্য আব্দুল হাসিব চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক অংশ নেন। 

এ সময় তারা ‘From the river to the see, Palestine will be free’, ‘East to west, no flow to zionist’, ‘Meghna to Jerusalem, Insaf insaf’, ‘Shame shame zionist, make free Palestine’, ‘ফিলিস্তিন মুক্তি পাক, ইসরাইল নিপাত যাক’, ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, আল আকসা জিন্দাবাদ’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। 

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)

দুপুর ১২টায় তৌহিদী ছাত্র জনতার ব্যানারে গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েলের বর্বর গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন বাকৃবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা ইসরায়েল ও ভারতের পতাকা এবং যুক্তরাষ্ট্রের  প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিকৃতি আগুনে পুড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল জব্বারের মোড় থেকে শুরু হয়ে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তন ও ছাত্রী হলের সামনের সড়ক প্রদক্ষিণ করে কামাল-রণজিত (কেআর) মার্কেটে গিয়ে কিছুক্ষণ অবস্থান করে। সেখান থেকে মিছিলটি সমাবর্তন চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরবর্তীতে সমাবর্তন চত্ত্বরে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর পরিকল্পিত গণহত্যার বিরুদ্ধে গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে জাবি প্রশাসন। এছাড়া এ নির্মম হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রাদায়কে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ আহ্বান জানায়। 

এর আগে, রবিবার (৬ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ড. এবিএম আজিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরোচিত গণহত্যার প্রতিবাদে সোমবার (৭ এপ্রিল) ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা করা হয়। এছাড়া সকাল ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অফিস বন্ধ থাকবে বলেও জানানো হয়।  

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি)

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান আগ্রাসন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে শেকৃবি শিক্ষার্থীরা ধর্মঘট ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। গাজায় সংঘটিত গণহত্যার বিরুদ্ধে একাত্মতা প্রকাশ করে তারা একটি বিবৃতি প্রদান করেন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান।

এছাড়া গ্লোবাল মুভমেন্ট ‘দ্য ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা’ এর অংশ হিসেবে তারা সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রয়েছেন। এ দিনটিকে তারা ‘প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে পালন করছেন।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী কর্তৃক সংঘটিত চলমান গণহত্যার বিরুদ্ধে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) প্রশাসন। সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ এমদাদুল হক স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) কর্তৃক গাজার নিরীহ নারী ও শিশুসহ বেসামরিক মানুষের ওপর অবিরাম হামলা, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস এবং ঘরবাড়ি, হাসপাতাল ও স্কুলে পরিকল্পিতভাবে আঘাত হানা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবতাবিরোধী আইন লঙ্ঘনের সামিল। নিরীহ মানুষ হত্যা, পরিবার উচ্ছেদ এবং শিশুদের এতিম করে তোলার মতো অমানবিক ঘটনা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত।

আরো বলা হয়েছে, এসব কর্মকাণ্ড জেনেভা কনভেনশনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। যেখানে যুদ্ধাবস্থায় বেসামরিক জনগণ ও অবকাঠামোর ওপর হামলা নিষিদ্ধ। প্রতিটি প্রাণহানি, প্রতিটি শিশু এতিম হওয়া এবং প্রতিটি পরিবারের উদ্বাস্তু হওয়া- এগুলোর সংকট সমাধানে বিশ্বব্যাপী জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাই।

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)

গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছে হাবিপ্রবি জাতীয়তাবাদী শিক্ষক পরিষদ। শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু হাসান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর কবির স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে এ ক্ষোভ ও নিন্দা জানানো হয়।

বিবৃতিতে উল্লেখ করে বলে হয়, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর আগ্রাসনে হাজার হাজার নিরপরাধ নারী, শিশু ও বেসামরিক মানুষ জীবন হারাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও আইনের চরম লঙ্ঘন করে দখলদার বাহিনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ও আবাসিক এলাকায় নির্বিচারে বোমা বর্ষণ এবং খাদ্য, পানি, ঔষধ সরবরাহ বন্ধ করে ফিলিস্তিনিবাসিকে নির্মূল করার পদক্ষেপ নিয়েছে। আমারা এই মানবতা বিরোধী নিষ্ঠুরতা ও গণহত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

জাতিসংঘসহ সকল আন্তর্জাতিক মহলকে অনতিবিলম্বে এই আগ্রাসন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং বর্বর ইসরায়েল বাহিনীকে বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।

ঢাকা/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণহত য র ব র দ ধ গ জ য় ইসর ম হ ম মদ উপ চ র য পদক ষ প ইসর য় ল কর ছ ন চলম ন গ রহণ বর বর

এছাড়াও পড়ুন:

যে ‘ধর্মীয় অনুপ্রেরণায়’ ইরানে এই হামলা চালাল ইসরায়েল

ইসরায়েল আবারও ইরানে বড় রকমের হামলা করেছে। হামলায় ইরানের বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণুবিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। হামলা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি ও আবাসিক এলাকায়। একদিন পর পাল্টা হামলা চালায় ইরান। এতে কয়েকজন ইসরায়েলি নিহত হয়। ধ্বংস হয় তেলআবিবের কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।

ইসরায়েল তার ইরানবিরোধী এ হামলার নাম দিয়েছে ‘রাইজিং লায়ন’। এ নাম রাখা হয়েছে হিব্রু বাইবেলের একটি চরণ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে। যে নাম ইসরায়েলের একটি শক্তিশালী ও বিজয়দীপ্ত ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি দেয়।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার ইহুদিদের সবচেয়ে পবিত্র উপাসনাস্থল জেরুজালেমের ওয়েস্টার্ন ওয়ালের একটি ফাটলে হাতে লেখা একটি চিরকুট রেখে আসার সময় ছবি তোলেন। এটি ছিল মূলত ইরানে ইসরায়েলের হামলার ইঙ্গিত।

শুক্রবার তার অফিস থেকে সেই চিরকুটে একটি ছবি প্রকাশ করা হয়। সেখানে লেখা ছিল: ‘জনগণ সিংহের মতো উঠে দাঁড়াবে।’

এই বাক্যাংশটি হিব্রু বাইবেলের গ্রন্থ বুক অব নাম্বারস (গণনা পুস্তক) ২৩:২৪ পদ থেকে এসেছে। যেখানে বলা হয়েছে: ‘দেখো, এই জাতি একটি মহান সিংহের মতো উঠে দাঁড়াবে এবং একটি তরুণ সিংহের মতো নিজেকে উদ্দীপ্ত করবে; সে শিকার না খাওয়া পর্যন্ত বিশ্রাম নেবে না এবং নিহতদের রক্ত না পান করা পর্যন্ত থামবে না।’

এই চরণটি হিব্রু বাইবেলের অ-ইসরায়েলীয় একজন নবী ও ভবিষ্যদ্বক্তা বালামের প্রথম ভবিষ্যদ্বাণীর অংশ। সেখানে তিনি ইসরায়েলের শক্তি ও ক্ষমতার কথা বলেন। তাদের এমন এক সিংহের সঙ্গে তুলনা করেন যে নিজের ক্ষুধা না মেটানো পর্যন্ত বিশ্রামে যায় না।

অনেকেই মনে করেন, এই অভিযানের নাম ইরানের শেষ শাহ-এর পুত্রের প্রতি ইঙ্গিত হতে পারে। কারণ পারস্য রাজপরিবারের প্রতীক হিসেবেও সিংহ ব্যবহৃত হতো।

ইসরায়েলের ঐশ্বরিক অধিকারের দাবি

ইসরায়েল প্রায়শই তার সামরিক অভিযানের নাম হিব্রু বাইবেল বা ওল্ড টেস্টেমেন্ট থেকে নেয় বা ধর্মীয় অনুপ্রেরণা থেকে গ্রহণ করে। ফিলিস্তিনি ভূমির উপর ইহুদিদের তথাকথিত ঐশ্বরিক অধিকারের দাবি এবং মধ্যপ্রাচ্যে তাদের যুদ্ধকে ন্যায্যতা দিতে ইসরায়েল এসব ধর্মীয় বিষয় ব্যবহৃত করে বলে অনেকে মনে করে থাকেন।

উদাহরণস্বরূপ, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সিরিয়ার সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে চালানো এক অভিযানের নাম দিয়েছিল, ‘অ্যারো অব বাশান।’ ‘বাশান’ শব্দটি ইসরায়েলিদের ধর্মগ্রন্থ ওল্ড টেস্টামেন্টে ব্যবহৃত হয়েছে। এটি দিয়ে মূলত সিরিয়ার দক্ষিণ ও জর্ডান নদীর পূর্বে অবস্থিত একটি অঞ্চলকে নির্দেশ করা হয়। বাশানের রাজাকে পরাজিত করে ইসরায়েলিরা সেই অঞ্চলকে দখল করেছিল।

গাজা উপত্যকার ওপর হামলা চালাতেও অস্ত্র ও অভিযানের জন্য হিব্রু বাইবেলীয় প্রতীক বা অনুষঙ্গ ব্যবহার করছে ইসরায়েল। নেতানিয়াহু অন্তত তিনবার গাজায় আক্রমণের জন্য হিব্রু বাইবেলীয় আমালেক কাহিনি ব্যবহার করেছেন।

২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু হিব্রু বাইবেল ও ওল্ড টেস্টামেন্টের গ্রন্থ ‘বুক অব ডিউটেরনমি’(২৫:১৭) এর থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন:

‘আমালেক তোমার সঙ্গে যা করেছিল তা মনে রেখো, আমরা মনে রাখি এবং আমরা যুদ্ধ করি।’

এর মধ্য দিয়ে গাজাবাসীদের উপর পূর্ণাঙ্গ হামলা করা উচিত বলে নেতানিয়াহু ইঙ্গিত করেন। কারণ ডিউটেরনমির এই উদ্ধৃতি বাইবেলের স্যামুয়েল গ্রন্থে বর্ণিত আমালেকীয়দের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ ধ্বংসের আহ্বান হিসেবে বিবেচিত হয়।

বাইবেলের এ কাহিনিতে ইসরায়েলিদের ওপর আক্রমণকারীদের সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করার আহ্বান জানানো হয়েছে। গাজার গোটা জনসংখ্যাকে সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন করে দিতে বাইবেলের এ কাহিনিকে হাজির করেছেন নেতানিয়াহু।

গণহত্যার মামলায় নেতানিয়াহুর বক্তব্য

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা গণহত্যার মামলায় আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) প্রথম শুনানিতে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষের আইনজীবী হিব্রু বাইবেলের উদ্ধৃতির মাধ্যমে নেতানিয়াহুর এই বক্তব্যকে গাজার জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যায় প্ররোচনা হিসেবে তুলে ধরেন।

আইনজীবী আরও জানান, নেতানিয়াহু ৩ নভেম্বর সেনাদের উদ্দেশ্যে লেখা আরেকটি চিঠিতে একই আমালেকীয় গল্প পুনরাবৃত্তি করেন।

ধর্মীয় নাম ব্যবহার করে সামরিক প্রযুক্তি

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি গাজায় বোমাবর্ষণে সহায়তা করছে, তাদের নাম ‘ল্যাভেন্ডার’ এবং ‘দ্য গসপেল’, যা উভয়ই হিব্রু বাইবেলীয় ধর্মগ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে।

টিআরটি ওয়ার্ল্ডের বিশ্লেষক রাভালে মহিদিনের মতে, প্রায়ই ধর্মীয় ধর্মগ্রন্থ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ইসরায়েলের অস্ত্রের নামকরণ করা হয়। যেমন, স্যামসন রিমোট কন্ট্রোলড ওয়েপন স্টেশন।

জেরিকো ব্যালিস্টিক মিসাইল-এর নাম রাখা হয়েছে জেরিকো শহরের নামে। হিব্রু বাইবেল ও ওল্ড টেস্টামেন্টের একটি গ্রন্থ ‘বুক অব যশুয়া’ অনুসারে ইসরায়েলিরা এই শহর ফিলিস্তিনিদের কাছ দখল করেছিল।

ডেভিড’স স্লিং নামক আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার নাম রাখা হয়েছে বাইবেলের মেষপালক ডেভিড ও বিশাল যোদ্ধা গোলিয়াথের মধ্যকার বিখ্যাত সেই লড়াইয়ের স্মরণে, যেখানে ডেভিডের বিজয় হয়েছিল। এই কাহিনী আছে হিব্রু বাইবেল ও ওল্ট টেস্টামেন্টের একটি গ্রন্থ ‘বুক অব স্যামুয়েল’-এ।

*দ্য নিউ আরব, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা বিষয়ক লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম। টিআরটি ওয়ার্ল্ডের বিশ্লেষক ও হার্ভার্ডের গবেষক রাভালে মহিদিনের একটি লেখার অবলম্বনে দ্য নিউ আরব এ বিশ্লেষণটি প্রকাশ করেছে। অনুবাদ করেছেন: রাফসান গালিব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য, ভালো উদ্যোগ নিলেও বিরোধিতা আসে
  • যে ‘ধর্মীয় অনুপ্রেরণায়’ ইরানে এই হামলা চালাল ইসরায়েল
  • তেহরানে ইসরায়েলের বিমান হামলার নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল