সিদ্ধিরগঞ্জ হাউজিংয়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগের ছড়াছড়ি
Published: 8th, April 2025 GMT
নাসিক ৪ নং ওয়ার্ড সিদ্ধিরগঞ্জের হাউজিং এলাকায় ব্যাঙের ছাতার মত অবৈধ ভাবে তিতাস গ্যাস সংযোগ রয়েছে। নেই নারায়ণগঞ্জ তিতাস কর্তৃপক্ষের অভিযান।
গত ৬ মাস আগে অভিযান করলেও এখন আর অভিযানের তৎপরতা নাই নারায়ণগঞ্জ তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের। সিদ্ধিরগঞ্জ হাউজিং এ তিন শতাধিক বহুতল ভবন রয়েছে।
বহুতল ভবন গুলোতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নের পর আবারো অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভবন মালিকদের বিরুদ্ধে।
এসব ভবন মালিকরা হলো, কফিল উদ্দিন (৬০) তার ৪ তলা, ৩ তলা ও ১ তলা ভবনে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নের পর আবারও এসব ভবনে অবৈধ ভাবে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
আবদুল আজিজ (৬৫) তার ৬ তলা ভবনের অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নের পর তিনিও আবারো অবৈধভাবে তার ভবনটিতে গ্যাস সংযোগ দিয়েছেন।
মনির (৫৫) তার ৬ তলা ভবনের অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন তিতাস কর্মকর্তারা। তিনিও রাতের আঁধারে অবৈধভাবে তার ভবনটিতে গ্যাস সংযোগ দিয়েছেন।
ড্রেজার ব্যবসায়ী জহির (৫০) তার ৬ তলা ভবনের অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। তিনিও রাতের আঁধারে অবৈধভাবে তার ভবনটিতে গ্যাস সংযোগ দিয়েছেন।
রিপন মোল্লার ৬ তলা ভবনের অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নের পর তিনিও তার ভবনটিতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়েছেন আবারও।
হাউজিং এলাকার বহুতল ভবনের মালিক ফাইজুল, রহমান, মজিবর, হোসেন, নজরুল গংরা অবৈধ ভাবে সংযোগ দিয়ে সরকারের প্রতিমাসে ৫০ থেকে ৬০ লক্ষ টাকার গ্যাস ব্যবহার করছে। এতে করে প্রতি বছরে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
শুধু তাই নয় হাউজিং এলাকায় সোহাগ নামে এক ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জ তিতাস গ্যাস কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে প্রতিমাসে কয়েক লক্ষ টাকা বাড়ির মালিকদের কাছ থেকে আদায় করছে। যা তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জ নাসিক ৪ নং ওয়ার্ড হাউজিং এলাকায় উক্ত ব্যক্তিদের বহুতল ভবনে গ্যাস সংযোগ দেখা যায়। উক্ত বাড়ির মালিকদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা করা সম্ভব হয়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাউজিং এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানায়, সোহাগ নামের এক ব্যক্তি আগে হাউজিং এলাকায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ বাসা বাড়িতে দিয়ে নারায়ণগঞ্জ তিতাস কর্মকর্তাদের কথা বলে প্রতিমাসে কয়েক লক্ষ টাকা উঠাচ্ছে। সোহাগকে গ্রেফতার করলে পুরো সিন্ডিকেটের তথ্য পাওয়া যাবে বলে তারা জানান।
সচেতন মহলের দাবি, উক্ত ভবনগুলোতে অভিযান চালিয়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ভবন মালিকদের আইনের আওতায় আনার হোক।
উক্ত বিষয় জানতে নারায়ণগঞ্জ তিতাসের গ্যাসের ম্যানেজার মোস্তাক মাসুদ ইমরান বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ হাউজিং এলাকায় আমরা অভিযান চালিয়ে প্রায় শতাধিক বহুতল ভবনের অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি।
কোন বাড়ির মালিক যদি অবৈধভাবে আবারো ভবন গুলোতে গ্যাস সংযোগ দিয়ে থাকেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিতাস গ্যাসের প্রধান কার্যালয়ের কর্মরত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুম বলেন, নারায়ণগঞ্জে বর্তমানে তিতাস গ্যাসে যারা আছেন তারা বেশিরভাগ সৎ এবং সাহসী।
কোন ভবনে যদি অবৈধ গ্যাস সংযোগের লাইন পাওয়া যায় সে বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ন র য ণগঞ জ ত ত স স দ ধ রগঞ জ ত র ভবনট ত কর মকর ত এল ক য
এছাড়াও পড়ুন:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে আবারও এক শ্রমিক নিহতের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাত আটটার দিকে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত।
নিহত মো. রাকিব (২৪) বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে কাজ করতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
এর আগে চলতি বছরের ১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন লাইব্রেরি ভবনের চারতলা থেকে পড়ে মো. আরিফুল নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। এর তিন মাসের মাথায় আবারও এক শ্রমিকের মৃত্যু হলো।
ভবনটির নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন ওই ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ করছিলেন রাকিব। শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে দিকে ভবনের জানালা দিয়ে তিনি ময়লা-আবর্জনা ফেলতে গিয়ে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে ভবনের কর্মচারীরা উদ্ধার করে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান। রাত আটটার দিকে তিনি সেখানে মারা যান।
ভবনটিতে সাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ চলছিল। রাকিব ভবনের জানালা দিয়ে ময়লা ফেলতে গিয়ে পড়ে যান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এই বহুতল ভবনটির কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমিন ট্রেডার্স। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, ভবনের মধ্যে কাজ চলছিল। ভবনটির বাইরের কাজ শেষ তাই ‘সেফটি নেট’ খুলে ফেলা হয়েছে।
মো. আজিজ জানান, রাকিবের মরদেহ তাঁর গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভবনটিতে কর্মরত ফোরম্যানের তত্ত্বাবধানে তাঁর মরদেহ বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। আমরা বারবার তাদেরকে যথাযথ সেফটি (নিরাপত্তা) নিশ্চিত করে তারপর কাজ করতে বলি। কিন্তু অনেক সময় এসব কর্মচারীরা মানে না। এ বিষয়ে প্রকল্প অফিস ও প্রশাসন থেকে বারবার তাদের তাগাদা দেওয়া হয়। এরপরও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেল।’