নাসিক ৪ নং ওয়ার্ড সিদ্ধিরগঞ্জের হাউজিং এলাকায় ব্যাঙের ছাতার মত অবৈধ ভাবে তিতাস গ্যাস সংযোগ রয়েছে। নেই নারায়ণগঞ্জ তিতাস কর্তৃপক্ষের অভিযান।

গত ৬ মাস আগে অভিযান করলেও এখন আর অভিযানের তৎপরতা নাই নারায়ণগঞ্জ তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের। সিদ্ধিরগঞ্জ হাউজিং এ তিন শতাধিক বহুতল ভবন রয়েছে। 

বহুতল ভবন গুলোতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নের পর আবারো অবৈধ গ্যাস  সংযোগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভবন মালিকদের বিরুদ্ধে। 

এসব ভবন মালিকরা হলো, কফিল উদ্দিন (৬০) তার ৪ তলা, ৩ তলা ও ১ তলা ভবনে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নের পর আবারও এসব ভবনে অবৈধ ভাবে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে।

আবদুল আজিজ (৬৫) তার ৬ তলা ভবনের অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নের পর তিনিও আবারো অবৈধভাবে তার ভবনটিতে গ্যাস সংযোগ দিয়েছেন। 

মনির (৫৫) তার ৬ তলা ভবনের অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন তিতাস কর্মকর্তারা। তিনিও রাতের আঁধারে অবৈধভাবে তার ভবনটিতে গ্যাস সংযোগ দিয়েছেন। 

ড্রেজার ব্যবসায়ী জহির (৫০) তার ৬ তলা ভবনের অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। তিনিও রাতের আঁধারে অবৈধভাবে তার ভবনটিতে গ্যাস সংযোগ দিয়েছেন।

রিপন মোল্লার ৬ তলা ভবনের অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নের পর তিনিও তার ভবনটিতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়েছেন আবারও। 

হাউজিং এলাকার বহুতল ভবনের মালিক ফাইজুল, রহমান, মজিবর, হোসেন, নজরুল গংরা অবৈধ ভাবে সংযোগ দিয়ে সরকারের প্রতিমাসে ৫০ থেকে ৬০ লক্ষ  টাকার গ্যাস ব্যবহার করছে। এতে করে প্রতি বছরে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

শুধু তাই নয় হাউজিং এলাকায় সোহাগ নামে এক ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জ তিতাস গ্যাস কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে প্রতিমাসে কয়েক লক্ষ টাকা বাড়ির মালিকদের কাছ থেকে আদায় করছে। যা তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জ নাসিক ৪ নং ওয়ার্ড হাউজিং এলাকায় উক্ত ব্যক্তিদের বহুতল ভবনে গ্যাস সংযোগ দেখা যায়। উক্ত বাড়ির মালিকদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা করা সম্ভব হয়নি। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাউজিং এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানায়, সোহাগ নামের এক ব্যক্তি আগে হাউজিং এলাকায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ বাসা বাড়িতে দিয়ে নারায়ণগঞ্জ তিতাস কর্মকর্তাদের কথা বলে প্রতিমাসে কয়েক লক্ষ টাকা উঠাচ্ছে। সোহাগকে গ্রেফতার করলে পুরো সিন্ডিকেটের তথ্য পাওয়া যাবে বলে তারা জানান। 

সচেতন মহলের দাবি, উক্ত ভবনগুলোতে অভিযান চালিয়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ভবন মালিকদের আইনের আওতায় আনার হোক।

উক্ত বিষয় জানতে নারায়ণগঞ্জ তিতাসের গ্যাসের ম্যানেজার মোস্তাক মাসুদ ইমরান বলেন,  সিদ্ধিরগঞ্জ হাউজিং এলাকায় আমরা অভিযান চালিয়ে প্রায় শতাধিক বহুতল ভবনের অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি।

কোন বাড়ির মালিক যদি অবৈধভাবে আবারো ভবন গুলোতে গ্যাস সংযোগ দিয়ে থাকেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

তিতাস গ্যাসের প্রধান কার্যালয়ের কর্মরত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুম বলেন, নারায়ণগঞ্জে বর্তমানে তিতাস গ্যাসে যারা আছেন তারা বেশিরভাগ সৎ এবং সাহসী।

কোন ভবনে যদি অবৈধ গ্যাস সংযোগের লাইন পাওয়া যায় সে বাড়ির মালিকের  বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ন র য ণগঞ জ ত ত স স দ ধ রগঞ জ ত র ভবনট ত কর মকর ত এল ক য

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামের রেলওয়ের ‘হাতির বাংলো’ নিয়ে কেন এত মাতামাতি

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে চট্টগ্রামের ‘হাতির বাংলো’–এর কথা এখন সারা দেশের মানুষ কমবেশি জানেন। ইউটিউবে ‘হাতির বাংলো’ লিখে সার্চ দিলেই এর প্রমাণ পাওয়া যাবে। ভ্রমণবিষয়ক ভ্লগার আর কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের কাছে এটি এখন রীতিমতো ট্রেন্ড। এর মধ্যেই ভবনটি যুক্ত হয়েছে চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থানের তালিকায়। কিন্তু শতবর্ষী এই স্থাপনা নিয়ে এত মাতামাতির কারণ কী? এর উত্তর পাওয়া গেল হাতির বাংলোর সম্মুখ দর্শনের পর।

চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজার এলাকার ম্যাজিস্ট্রেট কলোনির বিপরীতে রেলওয়ের ছোট টিলা ধরে উঠতেই চোখে পড়ল ভবনটি। কাউকে চিনিয়ে দিতে হলো না। একটা আস্ত হাতির মাথা যেন কেউ বসিয়ে দিয়েছেন। বোঝা গেল লোকমুখে এমন নামকরণের কারণও। এমন একটি ভবন নিয়ে মাতামাতি না হওয়াটাই তো অস্বাভাবিক।

যাঁরা জে আর আর টলকিয়েনের ‘লর্ড অব দ্য রিংস’ উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্রটি দেখেছেন, তাঁদের নিশ্চয়ই হবিটদের কথা মনে আছে। খর্বকায় হবিটদের বাড়ির মতোই অনেকটা রূপকথার আদল আছে এতে। আর পাশাপাশি দেওয়া হয়েছে এশিয়ান হাতির আকৃতি। রূপকথার আবেশে মিশেছে প্রকৃতির মূর্ত প্রতিকৃতি। সব মিলিয়ে ভবনটি অনন্য। ডুপ্লেক্স এই বাড়ি নিয়ে মানুষের কৌতূহল দীর্ঘদিনের। প্রতিদিনই বাংলোটি দেখতে আসেন অনেকেই। ছবি ও ভিডিও তুলে রাখেন। আবার কেউ কেউ ফেসবুক, ইউটিউবে তা ছড়িয়েও দেন। এভাবে হাতির বাংলো নিয়ে আগ্রহ ও কৌতূহল বেড়ে চলেছে।

চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজার আর সিআরবির মাঝের পাহাড়ে অবস্থিত রেলওয়ের হাতির বাংলো। যেতে হয় নগরের শহীদ সাইফুদ্দিন খালেদ সড়কের পাশে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন ও লেডিস ক্লাবের সামনের রাস্তা দিয়ে।

এই বাংলো ঠিক কবে নির্মিত হয়েছিল, তার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই রেলওয়ের কাছে। তবে রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, ১৮৯৮ সালের দিকে এই বাংলো নির্মাণ করা হতে পারে। ওই সময় চট্টগ্রামে রেললাইন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। তখন নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত প্রকৌশলী ও কর্মকর্তাদের থাকার জন্য এই বাংলো নির্মাণ করা হতে পারে।

ব্যতিক্রমী স্থাপত্য

এখন যেমন পাহাড় কেটে, গাছপাল কেটে ভবন নির্মাণ করা হয়, হাতির বাংলো নির্মাণে তার কিছুই হয়নি। চারপাশের সৌন্দর্যকে এতটুকুও ব্যাহত করা হয়নি, বরং প্রকৃতির সঙ্গে মিশে গেছে এই স্থাপনা।

পাহাড়ি এলাকায় পিচঢালা সড়কের পাশে খোলা প্রাঙ্গণ। তা পেরিয়ে হাতির বাংলো। হাতির বাংলোর প্রবেশফটকে রয়েছে হাতির মুখ, শুঁড় তুলে দাঁড়িয়ে আছে। শুঁড় যেমন ঢেউয়ের মতো, ঠিক তেমনই ডুপ্লেক্স বাড়ির ওপরের অংশটিও। এর খোলা অংশটি দোতলার ব্যালকনি। এরপর রয়েছে বড় একটি কক্ষ, যা প্রায় হলরুমের সমান। কেউ থাকেন না এই কক্ষে। সামনে, পেছনে ও পাশে ছোট-বড় আটটি জানালা রয়েছে। বাংলোর নিচতলায় দুটি আলাদা বড় কক্ষ।

বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের ডেপুটি চেয়ারম্যান আদর ইউসুফ জানান, বাংলোটি নির্মিত হয়েছে হাতির আদলে, যা দেশের স্থাপত্য ইতিহাসে একটি ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত। বাহ্যিক কাঠামোটি ত্রিমাত্রিকভাবে হাতির মতোই—মাথা, শুঁড়, কানের পরিণত অংশ, শরীরের বর্ধিত কায়া ইত্যাদি রূপে গঠিত। ভবনটির মূল কাঠামো নির্মিত হয়েছে ইট ও পাথরের গাঁথুনির ওপর। তবে এর হাতির রূপ ফুটিয়ে তুলতে ব্যবহৃত হয়েছে ফেরো সিমেন্ট, যা উনিশ শতকে উন্নত নির্মাণপ্রযুক্তির নির্দেশক। স্থানীয়ভাবে প্রাপ্ত কাঠ ব্যবহার করে নির্মিত দরজা ও জানালাগুলোতে কারিগরি দক্ষতার পরিচয় রয়েছে। প্রচলিত ঔপনিবেশিক বাংলোর গঠন থেকে এটি অনেকটাই আলাদা। স্থাপত্যশৈলীতে কোনো সুপরিকল্পিত আদর্শ অনুসরণ না করলেও একে ঘিরে আছে একধরনের আভিজাত্য ও প্রকৌশলগত সৃজনশীলতা।

এক সময় ডুপ্লেক্স এই ভবনটিতে থাকতেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা। তবে ভবনটি এখন পরিত্যক্ত। সস্প্রতি তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দশমিনায় ভবন নির্মাণের ছয় মাসের মধ্যে খসে পড়ছে পলেস্তারা
  • চট্টগ্রামের রেলওয়ের ‘হাতির বাংলো’ নিয়ে কেন এত মাতামাতি